ঢাকা: যানজট কমাতে ও নগরবাসীকে উন্নত গণপরিবহন ব্যবস্থায় মধ্যে আনতে গত ২৮ ডিসেম্বর ঢাকার প্রথম মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর পরদিন অর্থাৎ ২৯ ডিসেম্বর থেকে যাত্রী চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় মেট্রোরেল।
রাজধানীর উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও স্টেশন পর্যন্ত চলাচলরত মেট্রোরেলের অধিকাংশ যাত্রী মনের খোরাক মেটাতে মেট্রোরেলে চড়ছেন। কারণ উত্তরা দিয়াবাড়ী অংশে জনবসতি একেবারে সামান্য। ফলে কর্মজীবী মানুষের চলাচল এখনও সেই অর্থে শুরু হয়নি মেট্রোরেলে।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) উত্তরা সেন্টার স্টেশন ((উত্তরা সেক্টর-১৫, ব্লক-কে) সরেজমিনে ঘুরে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে দেখা যায় তারা পরিবার কিংবা বন্ধুদের নিয়ে মেট্রোরেলে ঘুরতে এসেছেন।
শাহেদ রায়হান নামে এক যাত্রী বলেন, এ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বাস করি। কিন্তু বাস বা অন্য গণপরিবহন ব্যবস্থা ভালো ছিল না। মেট্রোরেল হওয়ায় যাতায়াত সুবিধা তৈরি হয়েছে।
শাহরীন শেহতাজ নামে অপর এক যাত্রী মেট্রোরেলে ঘুরতে এসেছি। মেট্রোরেলে চড়ে নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছি। খুব কম সময়ে চলাচলের জন্যে মেট্রোরেল ভালো মাধ্যম।
এদিকে আগামী ১ মার্চ থেকে জনবহুল এলাকা মিরপুর-১০ স্টেশন যাত্রী চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। এটি এমআরটি-৬ এর পঞ্চম স্টেশন হিসেবে চালু হবে।
এই স্টেশনটি চালু হলে মেট্রোরেলে কর্মজীবী মানুষের যাতায়াত বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অন্যদিকে মেট্রোরেলের দ্বিতীয় অংশ আগারগাঁও থেকে মতিঝিল ২০২৩ সালের শেষ দিকে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের।
আর মতিঝিল থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত বর্ধিতাংশ চালু হতে পারে ২০২৫ সালে।
পুরোদমে যাত্রী চলাচল শুরু হলে ঢাকা শহরে যানজট কমাতে ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এন সিদ্দিক।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, পর্যায়ক্রমে মেট্রোরেলের স্টেশনগুলো খুলে দেওয়া হবে। প্রথমে দুটি স্টেশন খুলে দেওয়ার মাধ্যমে মেট্রেরেল চলাচল শুরু হয়।
মানুষ মেট্রোরেল ব্যবহারে ইতোমধ্যে অভ্যস্ত হয়ে গেছে বলে দাবি করেন ডিএমটিসিএল এমডি।
ডিএমটিসিএলের উপ-প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, উত্তরা সেন্টার স্টেশনটি আজকে চতুর্থ স্টেশন হিসেবে চালু করা হয়েছে। যাত্রী চাহিদা বিবেচনায় ধীরে ধীরে সব স্টেশন খুলে দেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ঢাকার উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের প্রথম মেট্রোরেল যেটা এমআরটি লাইন-৬ নামে পরিচিত। এ প্রকল্প সরকার হাতে নেয় ২০১২ সালে।
এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পের মূল ব্যয় ছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। পরে মতিঝিল থেকে কমলাপুর বাড়তি অংশ যোগ হওয়ায় ব্যয় বাড়ে ১১ হাজার ৪৯৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা। তখন সর্বোমোট ব্যয় দাঁড়ায় ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা।
এর মধ্যে উন্নয়ন সহযোগী জাইকার অর্থায়ন ১৯ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা ও সরকারি অর্থায়ন ১৩ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৪, ১৮ ফেব্রুয়ারি
এনবি/এমএমজেড