ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পুলিশের খাতায় পলাতক, সরকারি খাতায় হাজির

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩
পুলিশের খাতায় পলাতক, সরকারি খাতায় হাজির

লালমনিরহাট: প্রতিবেশীর ওপর হামলা করে মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে চাকরিতে হাজিরা দিলেও লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ থানা পুলিশের খাতায় পলাতক রয়েছেন স্বাস্থ্য সহকারী জিয়াউর রহমান ও দুজন শিক্ষক।

স্বাস্থ্য সহকারী জিয়াউর রহমান কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের ইশোরকোল গ্রামের নুরুল হকের ছেলে।

তিনি কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে স্বাস্থ্য সহকারী পদে কর্মরত রয়েছেন। শিক্ষকরা হলেন- কাকিনাহাট মোস্তাফিয়া কামিল মাদরাসার এবতেদায়ী প্রধান নজরুল মুন্সি ও বিএসসি শিক্ষক আশরাফুল মিয়া।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবেশী মৃত আজিতুল্ল্যার ছেলে উজির মামুদের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে স্বাস্থ্য সহকারী জিয়াউর রহমানের। তার জের ধরে গত ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় স্থানীয় মোখলেছুর রহমানের দোকানের পাশে উজির মামুদকে একা পেয়ে দলবল নিয়ে মারধর শুরু করেন জিয়াউর রহমান। খবর পেয়ে তাকে বাঁচাতে উজির মামুদের চাচা আফজাল, চাচি সবজা বেগম, ভাই শাহাজাহান, ভাগ্নি জ্যোতি বেগমসহ তার পরিবারের লোকজন এগিয়ে এলে তাদেরও বেধড়ক মারধর করেন জিয়াউর রহমান ও তার লোকজন। এতে উজির মামুদসহ তার পরিবারের ৭/৮ জন গুরুতর আহত হন।  

এ সময় চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এসে আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় উজির মামুদ বাদী হয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য সহকারী জিয়াউর রহমান, শিক্ষক নজরুল মুন্সি ও আশরাফুলসহ ১৮ জনের নামে কালীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় মোখলেছুর ও রিয়াদ নামে দুজনকে গ্রেফতারও করে থানা পুলিশ।  

সরকারি কর্মচারীর নামে ফৌজদারি অপরাধে মামলা হলে তার তদারকি কর্মকর্তাকে নথি পাঠিয়ে অবগত করে বরখাস্ত করার নিয়ম থাকলেও থানা পুলিশ অদৃশ্য কারণে তা করেনি। ফলে স্বাস্থ্য সহকারী জিয়াউর রহমান, শিক্ষক নজরুল মুন্সি ও আশরাফুল পুলিশের খাতায় পলাতক থাকলেও সরকারি চাকরির খাতায় নিয়মিত উপস্থিত থেকে হাজিরা দিচ্ছেন।

মামলার বাদী উজির মাহমুদ বলেন, স্বাস্থ্য সহকারী জিয়াউর রহমান টাকা দিয়ে সব ম্যানেজ করে জামিন না নিয়েও চাকরি করছেন। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। উল্টো আমাদের হাসপাতালে মারধর ও ভর্তি বাতিল করার হুমকি দিচ্ছেন। মামলা তুলে না নিলে মেরে ফেলার হুমকিও দিচ্ছেন স্বাস্থ্য সহকারী।  

কাকিনাহাট মোস্তাফিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সায়েদার রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মামলা হলেও তারা নিয়মিত উপস্থিত থাকছেন প্রতিষ্ঠানে। মামলার নথি আমাকে পাঠানো হয়নি। নথি পেলে বিধিমতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অজয় কুমার বাংলানিউজকে বলেন, স্বাস্থ্য সহকারী জিয়াউর রহমানের নামে ফৌজদারি আইনে মামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। তিনি কর্মস্থলেই রয়েছেন। খোঁজ-খবর নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, অভিযুক্তরা সরকারি চাকরি করে তা জানা ছিল না। এখন স্ব স্ব কর্মস্থলে মামলার নথি পাঠানো হবে। একইসঙ্গে তাদের গ্রেফতারে চেষ্টাও করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩
আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।