ইবি: প্রেমিকের ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লেকে নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে আটক হয়েছে ইডেন কলেজের এক ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানান, ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে আটক করা হয়েছে।
সোমবার (০৬ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকে এ ঘটনা ঘটে। পরে উভয়ের অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে লিখিত মুচলেকা নিয়ে ওই ছাত্রীকে তার অভিভাবকের জিম্মায় তুলে দেওয়া হয়। এছাড়া প্রেমিককে শোকজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আটক ওই ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ও লালন শাহ হলের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী বলে জানা গেছে। তার বাড়ি দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার সুজালপুর গ্রামে।
এছাড়া প্রেমিকা ইডেন মহিলা কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী বলে জানা গেছে। তিনিও কলেজ শাখা ছাত্রলীগ কর্মী বলে জানা গেছে। তার বাড়ি খুলনার জেলার পাইকগাছা উপজেলার আলমতলা গ্রামে।
জানা গেছে, আটক ছাত্রের ইবিতে পড়ুয়া এক বন্ধু ইডেন কলেজের ওই মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপনে সহযোগিতা করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমিকের বন্ধুর বাড়ি ওই ছাত্রীর এলাকায় বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি ওই ছাত্রী ইডেন কলেজ থেকে গুচ্ছে ভর্তি সংক্রান্ত কাজে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। পরে প্রেমিকের আহ্বানে গত ৪ মার্চ তিনি ইবি ক্যাম্পাসে আসেন। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে এক শিক্ষার্থীর কাছে রাখা হয় এবং প্রতিদিন ঘোরাঘুরি শেষে সন্ধ্যায় তাকে পৌঁছে দিতেন ওই ছাত্র।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকের ব্রিজের কাছে একটি বেঞ্চে বসে ছিলেন ওই প্রেমিক যুগল। এ সময় তাদের আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়া যায়। শিক্ষার্থীরা বিষয়টি দেখে আওয়াজ তুললেও তারা একই অবস্থায় সেখানে অবস্থান করেন। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে জানানো হয়। তাৎক্ষণিক তারা সেখানে উপস্থিত হয়ে একই অবস্থা দেখলে প্রক্টরিয়াল বডিকে অবহিত করেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টরের দায়িত্বে থাকা ড. আমজাদ হোসেন ঘটনাস্থলে যান এবং তাদের প্রক্টর অফিসে ডেকে পাঠান। পরে সেখানে ওই দুইজনের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাদের থেকে লিখিত মুচলেকা নিয়ে ওই ছাত্রীকে অভিভাবকের জিম্মায় তুলে দেওয়া হয়।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন, ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. আমজাদ হোসেন, সহকারী প্রক্টর ও ওই ছাত্রের বিভাগের শিক্ষক শাহেদ আহমেদ, শাহবুব আলম, জয়শ্রী সেন ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম সেলিম।
সহকারী প্রক্টর ড. আমজাদ হোসেন বলেন, নিরাপত্তা কর্মকর্তার ফোন পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যাই। পরে মেয়েকে তার অবিভাবকের সঙ্গে কথা বলে তাদের জিম্মায় তুলে দেওয়া হয়েছে। আর ছেলেকে তার বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন বলেন, ওই ছেলেসহ যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোড অফ কন্ডাক্ট ভঙ্গ করেছে তাদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানো হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় লেকের পাশে পাটক্ষেত থেকে আপত্তিকর অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছিল। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের তৃতীয় তলার টয়লেটেও আপত্তিকর অবস্থায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের দুই শিক্ষার্থী ধরা পড়েছিল।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০২৩
এফআর