ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

লাল-সবুজের নীড়ে ভূমিহীনরা আসবেন ফিরে!

  শফিকুল ইসলাম খোকন, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৯ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২৩
লাল-সবুজের নীড়ে ভূমিহীনরা আসবেন ফিরে!

বরগুনা (পাথরঘাটা): সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে লাল-সবুজের রং, হঠাৎ দেখলে মনে হবে এ যেনো নতুন কোনো জগত মনে হবে এখানে কোনো কোটিপটির বাংলো অথবা কোনো ফাইভস্টার হোটেল। কাছে এলেই ঠিক তার উল্টো দেখা যাবে।

এটি কোনো কোটিপতিদের নয় বরং ভূমিহীনদের জন্য এটি অন্য জগত, ফাইভস্টার হোটেল বা বাংলো।

বলছি উপকূলীয় উপজেলা পাথরঘাটার ভূমিহীনদের কথা, যাদের এক শতাংশ জমি কেনার সামর্থ নেই, যাদের বংশ পরম্পরায় মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়নি কখনো। যারা কল্পনাও করেনি কখনো এমন ঘরের কথা। আজ তা বাস্তবে পরিণত হয়েছে।

বরগুনার পাথরঘাটা উপকূলীয় উপজেলা। এখানে যেমন অধিকাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। তেমনি নদী ভাঙ্গনে অনেকেই ভূমিহীন হয়েছে। এছাড়াও এক শ্রেণীর মানুষ বংশ পরম্পরায় ভূমিহীন। ঠিক এমন মানুষদের নীড় হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী উপহার ঘর।

বিভিন্ন দেশে ভূমিহীন, গৃহহীনদের ঘর-বাড়ি নির্মাণের জন্য সুদবিহীন ঋণ দেওয়ার নজির থাকলেও এভাবে লাখ লাখ পরিবারকে পুনর্বাসন সত্যিই বিরল। প্রতিটি পরিবারের স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে ভূমির মালিকানার দলিল, রেজিস্ট্রি ও নামজারি করে দেওয়া হচ্ছে যাতে করে তারা এ সম্পদের স্থায়ী মালিক হতে পারেন। শুধু বাড়ি করে দিয়েই বঙ্গবন্ধুকন্যা দায়িত্ব শেষ করেননি। প্রতিটি পরিবার যাতে সব ধরনের নাগরিকসুবিধা পায় সে ব্যবস্থাও নিশ্চিত করেছেন।

বিধবা হাওয়া বেগমের নির্দিষ্ট জমিজমা না থাকায় দীর্ঘদিন যাযাবর জীবন কেটেছে। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ঘর উপহার পাচ্ছেন এই ভূমিহীন বৃদ্ধা নারী। মুখে হাসি ফুটেছে তার। সরকারের অর্থায়নে তৈরি করা পাকাঘর জমিসহ পাচ্ছেন তিনি।

কথা হয় আলেয়া বেগমের সঙ্গে, তিনি এখন আনন্দে আত্মহারা। মহা খুশি তিনি। তিনি বলেন, কোননোদিন ভাবিওনি ইটের ঘরে থাকমু। এ বয়সে এসে একটু শান্তিতে থাকতে পারমু।

বুধবার (২২ মার্চ) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য নির্মিত স্বপ্নের লাল-সবুজের রঙে গড়া পাকা নীড় হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধন ঘিরে আনন্দে আত্মহারা গৃহহীন, ভূমিহীনরা।  

উদ্বোধনের পর পরই পাথরঘাটায় ২০১ জনের হাতে চাবি তুলে দেওয়া হবে। এ পর্যায়ে উপজেলার বাদুরতলা, হোগলাপাশা, পূর্ব হাতেমপুর (কাজী), মাছের খাল, মুন্সিরহাটের ২০১ পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে। এর আগে পাথরঘাটায় ৩১১ জনকে ঘর দেওয়া হয়। এখনো ৩৩০টি ঘরের কাজ চলমান।

পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সঠিকভাবে ঘরের কাজ সম্পন্ন করেছি। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধনের পর ২০১ জনের হাতে সনদসহ সকল কাগজপত্র দেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, এর আগে ৩১১ জনকে পুনর্বাসন করা হয়। বাকি ৩৩০টি ঘরের কাজ চলমান রয়েছে। আশা করছি দ্রুত এ কাজ শেষ করতে পারবো। এ কাজ শেষ‌ হলে প্রকল্প-২ এর আওতায় পাথরঘাটায় ৮৪২ ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৯ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।