ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

'বন্যা আইবো, তাই চর ছেড়ে চলে আসছি'

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৩
'বন্যা আইবো, তাই চর ছেড়ে চলে আসছি' রানী বেগম

লক্ষ্মীপুর: মেঘনার একটি চরে বসবাস ৭৫ বছর বয়সী রানী বেগমের। ছেলে ও ছেলেবৌসহ পরিবারের আরও ৫ সদস্য নিয়ে থাকেন তিনি।

চরটির অবস্থান জেলার কমলনগর উপজেলা মতিরহাট সংলগ্ন এলাকায়।  

উপকূল থেকে প্রায় ৭-৮ কিলোমিটার দূরের চরটি অতিরিক্ত জোয়ার বা প্রাকৃতিক দূর্যোগ হলেই তলিয়ে যায়। তাই শনিবার (১৩ মে) দুপুর ১২ টার দিকে চর ছেড়ে মতিরহাটে চলে আসেন বৃদ্ধা রানী বেগম। এসময় তার হাতে পরনের কাপড়, একটি মুরগী এবং কয়েকটি হাসের বাচ্চা দেখা গেছে।  

তবে চরে গরু ছাগল থাকায় তার পরিবারের নারী শিশুসহ অন্য সদস্যরা আসতে পারেনি। ফলে বিধবা এ নারী নৌকায় করে উপকূলে চলে আসলেও শঙ্কায় রয়েছেন পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে।  

বাংলানিউজের সাথে আলাপকালে বৃদ্ধা রানী বেগম বলেন, শুনেছি বন্যা আইবো, তাই উপরে চলে আইছি। কিন্তু চরে ছেলে, ছেলের বৌ এবং নাতি-নাতনিরা রয়ে গেছে। তারা আসেনি। গরু ছাগল আছে। সেগুলো রেখে কেমনে আসে।  

রানী বেগমের সাথে তার প্রতিবেশী নুর জাহান বেগমও চলে এসেছেন চর ছেড়ে। সাথে তার এক শিশুপুত্র ও এক শিশুকন্যা। তবে চরে গবাদিপশু থাকায় স্বামী রয়ে গেছে চরে।  

নুর জাহান বেগম বাংলানিউজকে বলেন, নদীত সিগনাল চলতেছে। তাই ছোট ছোট শিশুদেরকে নিয়ে আগেভাগেই তীরে চলে এসেছি। সাথে হাঁস মুরগীগুলো নিয়ে আসছি। এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেব।  

একই চর থেকে আসা বাদশা মিয়া ও ফারুক হোসেন বলেন, ঝড়ের সময় চর ডুবে যেতে পারে। তখন গবাদি পশু এবং হাঁস-মুরগী নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় আমাদের। সেজন্য চরে বসবাসকৃত নারী-শিশুদের সাথে হাঁস-মুরগীও উপরে পাঠিয়ে দিই। তাদের ওই চরে ২৫ পরিবারের দেড় শতাধিক লোকের বসবাস।  

একই চর থেকে আসা বৃদ্ধ ফজলুল করিম বলেন, চরে পানি ইইবো। সেই পানিতে থাকতে পারুম না। তাই পরিবারের ৬ সদস্যকে নিয়ে এ পাড়ে চলে আসছি। এক আত্মীয়ের বাড়িতে উঠবো। চরে দুটি ছাগল আছে। সেগুলো এক ছেলে দেখাশোনা করার জন্য চরে থেকে গেছে।  

বাংলাদেশ সময়: ০০০০ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।