ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘খারাপ ভর্তুকি ভালো ভর্তুকিকে দূরে ঠেলে দেয়’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১০ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৩
‘খারাপ ভর্তুকি ভালো ভর্তুকিকে দূরে ঠেলে দেয়’ সিপিডি-নাগরিক প্ল্যাটফর্ম সংলাপে বক্তব্য দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান | ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: সামাজিক নিরাপত্তা সৃষ্টিকারী, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য সহায়ক ও বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর জন্য ভর্তুকিকে উঁচুতলার ভর্তুকি-ভোগীরা দূরে ঠেলে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

তিনি বলেন, ব্যাড ভর্তুকি গুড ভর্তুকিকে দূরে ঠেলে দেয়।

তারা শক্তিশালী গ্রুপ। তারা সংবর্ধনা দেয়, ফুলের মালা দেয়, ক্রেস্ট দেয়। তারপর ভর্তুকি আদায় করে নেয়। আমরা বয়স্কদের ভর্তুকি দেই, শিশুকে ভর্তুকি দেই, প্রান্তিক কৃষককে ভর্তুকি দেই, বিনামূল্যে সার দেই, বিষ দেই। এগুলো আমাদের সরকারের লক্ষ্য। যতই কঠিন হোক সরকার এগুলো চালিয়ে যাবে।

সোমবার (১৫ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘আইএমএফের সময়কালে অসুবিধাগ্রস্ত মানুষের কথা জাতীয় বাজেটে কীভাবে প্রতিফলিত হতে পারে’ শীর্ষক সিপিডি-নাগরিক প্ল্যাটফর্ম সংলাপে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ওপর নির্ভরশীল নই, তারা ঋণ দিতে কোনো শর্ত দেয়নি। তবে কিছু রিকোয়্যারমেন্ট দেয়, যেমন-ঋণে সুদ কত, কত বছরে পরিশোধ করবো, এসব।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আইএমএফের সঙ্গে বাজেটের সম্পর্ক কী? তারা সাইড অ্যাক্টর, বাজেট আমাদের নিজস্ব ব্যাপার। তবে আইএমএফের কিছু শর্ত থাকে। প্রয়োজনে হাত পাতি, দেওয়ার দায়িত্ব আইএমএফের। অনেকে বলে, দাতাগোষ্ঠী—এ শব্দের আমি ঘোরবিরোধী। কারণ তারা উন্নয়ন সহযোগী, আমরা ঋণ নিয়ে থাকি এবং সুদ-আসলে পরিশোধ করি। বাজেটে উন্নয়ন সহযোগীদের অবদান মাত্র ২ শতাংশ।

দারিদ্র্য প্রসঙ্গে এম এ মান্নান বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের দরিদ্ররা বঞ্চিত। পদ্ধতিগতভাবে তারা বছরের পর বছর বঞ্চিত হচ্ছে। আমি গ্রামে যাই সরকারি মালামাল নিয়ে, এগুলো কোথায় যায় জানি না। এটা খুঁজে বের করাও কঠিন।

রেমিট্যান্স প্রবাহ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ৩০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স মন্দ নয়। এটার খবর এক সময় কেউ রাখতো না। একবার ৪৮ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স হয়েছিল, তাই এটা নজরে আসছে।

৭ লাখ কোটি টাকার বাজেটকে বলা হচ্ছে বড় বাজটে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের কথা বিবেচনা করলে বাজেট হওয়া প্রয়োজন ১২ লাখ কোটি টাকা বলে মন্তব্য করেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, সরকার রাজস্ব আদায় না করতে পারার কারণে খরচ করতে পারছে না।

হিজড়া সাড়ে ১২ হাজার—পরিসংখ্যান ব্যুরোর এমন তথ্য সঠিক নয়, হিজড়া জনগোষ্ঠীর সংখ্যা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমাদের হিসাবে সাড়ে ১২ হাজার। আপনারা বেশি মনে করলে তথ্য দিন, আমরা সেটা দেখবো।

রাষ্ট্রপতি ও পরিকল্পনামন্ত্রীর এলাকাতে বেশি উন্নয়ন হয়েছে—এমন বক্তব্যের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আগে এসব অঞ্চলে উন্নয়ন হয়নি। আমরা এখন কাজ করছি। উন্নয়ন করেছি—এজন্য হাওরের মানুষ শুধু মাছ ধরবে আর গান গেয়ে বেড়াবে না।

বাজেট হলো পুনঃবণ্টন। সক্ষমদের কাছে থেকে রাজস্ব আদায় করে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মাঝে বণ্টন করা, যোগ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

নারী কর্মস্থলে নিরাপত্তা পাচ্ছে না উল্লেখ করে ব্র্যাকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, ইতোমধ্যে পুরুষের পাশাপাশি নারী ঘরের বাইরে বের হয়েছে। তাদের কর্মস্থলে ধরে রাখতে নিরাপত্তার পাশাপাশি নারী সেনসেটিভ কাঠামো তৈরি করতে হবে।

মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য রানা মোহাম্মদ সোহেল, বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা প্রমুখ বক্তব্য দেন। সংলাপে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার পিছিয়ে পড়া জনঘোষ্ঠীর প্রতিনিধিরাও বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৩
জেডএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।