ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

চালে স্বস্তি, মাছ-মাংসের দামে হতাশার নিঃশ্বাস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৮ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০২৩
চালে স্বস্তি, মাছ-মাংসের দামে হতাশার নিঃশ্বাস

ঢাকা: প্রতিদিনই ঢাকার সব বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। দাম বাড়ার কোনো কমতি নেই; তবে আছে সরবরাহে! সব পণ্য সব সময় পাওয়া যায় না।

যখন পাওয়া যায়, ‘কম আছে’ দোহাই দিয়ে পণ্যে দাম বাড়িয়ে দেন অসাধুরা। এমন পরিস্থিতি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ক্রেতাদের।

কিছুদিন আগে চালের বাজার দিশেহারা হওয়ায় শঙ্কা ছিল ক্রেতা-বিক্রেতাদের মনে। বর্তমানে চালের দামে স্বস্তি ফিরলেও, ক্রেতাদের হতাশার নিঃশ্বাস পড়ে মাছ-মাংসের দাম শুনলে। প্রতিনিয়ত এ খাদ্য পণ্যের দাম বাড়ছে। দোহাই একটাই- ‘বেশি দামে কেনা, বেশি দামে বিক্রি’। বাজারে বেড়েছে ফার্মের মুরগির দামও, ডজন মিলছে ১৪০ টাকায়।

জানা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকার বাজারে প্রায় সব ধরনের চাল কেজিতে ২-৩ টাকা করে কমেছে। প্রতিকেজি সরু মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭২ টাকায়। গত সপ্তাহের এর মূল্য ছিল ৭৫ টাকা। ভালো মানের নাজির শাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়; আগে ছিল  ৮২-৮৫ টাকা।

সপ্তাহের ব্যবধানে আমিষ বাজারের সব পণ্যের দাম বেড়েছে। এতে বিক্রিতেও প্রভাব পড়েছে। সাধারণ ক্রেতারা বাজারে আসছেন ঠিকই; কিন্তু অতিরিক্ত দাম শুনে আর চাহিদা মতো পণ্য কিনছেন না। কেউ ফিরে যাচ্ছেন, কেউ আবার চাহিদার চেয়ে কম বা সাধ্যে যা কুলায় তা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। পাইকারি ও খুচরা বাজারে আবার পণ্যের দামের বিস্তর ফারাক। এতে ক্রেতারাও চিন্তিত।

বিক্রেতারা বলছেন, মাছ-মাংসের দাম বাড়লেও তাদের লাভ বাড়েনি। বিক্রিও আগের চেয়ে কমে গেছে। বর্তমানে যে মূল্যে পণ্য বিক্রি হচ্ছে, সিংহভাগ ক্রেতা বাজার থেকে ফিরে যাচ্ছেন।

রাজধানীর শান্তিনগর বাজার, খিলগাঁও রেলগেট বাজার ও মেরাদিয়া হাট ঘুরে দেখা গেছে, ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায় (ডজন)। ব্রয়লার মুরগী গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ২১০ টাকায়, শুক্রবার (১৯ মে) ২২০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। ক্ষেত্রে বিশেষে ২৪০ টাকাও বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগির কেজি ৩৬০।

গরুর মাংস হাড়সহ ৭৮০ থেকে ৮০০; খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকায়। মাছের দামও বাড়তি। ছোট, বড় সব ধরণের মাছের দাম কেজিতে ৫০-১০০ টাকার মতো বেড়েছে।

ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সপ্তাহ ব্যবধানে আমিষ হিসেবে পরিচিত ডিমের দাম ডজনে বেড়েছে ৫-১০ টাকার মতো। খুচরা পর্যায়ে ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৪৫ টাকায়। যা গত সপ্তাহেও ছিল ১৩০-১৩৫ টাকা।

শান্তিনগর বাজারের ডিম বিক্রেতা মো. ইলিয়াস বাংলানিউজকে বলেন, খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। গ্রামের ওরিজিনাল দেশি মুরগির ডিমের ডজন ২২০ টাকা। পাকিস্তানের কক মুরগির ডিম ১৮০ টাকা। হাঁসের ডিম প্রতি ডজন ১৮০ টাকা।

সব ধরণের মাছে দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০-১০০ টাকার মতো। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি বাজারে দাম বাড়ায় খুচরা বাজারে এ সপ্তাহে প্রভাব পড়েছে। এতে ক্রেতার সংখ্যাও কমে গেছে। মেরাদিয়া হাটের মাছ বিক্রেতা মো. আবদুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, তিনি প্রতি কেজি পাবদা ৫০০ টাকায় বিক্রি করছেন। চেওয়া মাছ ৩০০; লইট্টা ৩০০; পোয়া ৪০০; সামুদ্রিক স্যালমন ৫০০; কোরাল ৫০০; কাইক্কা ৪৫০-৫০০; আইড় মাছ ৭০০; বোয়াল মাছ প্রতিকেজি ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শান্তিনগরের মাছ কিনতে এসেছিলেন জেলা জজ আদালতে চাকরিরত রোকসানা আক্তার। কিন্তু পণ্যে দামে তিনি বিরক্ত। ক্ষোভ প্রকাশ করে রোকসানা বলেন, বাজারে যারা অযথাই দাম বাড়াচ্ছে সরকারের উচিত তাদেরকে আইনের আওতায় আনা। পাইকারি বাজারের যে দাম খুচরা বাজারে তার তুলনায় বিশাল তফাৎ। বাজারে মাছের দাম শুনলে কোনো কিছু কেনার সাহস করতে পারিনা। চেয়েছিলাম বড় মাছ কিনব; কিন্তু দামে মেলেনি তাই কিনতে পারিনি। ১০০০ টাকার আড়াই কেজি মিশ্র গুড়া মাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছি।   এ বিষয়গুলো সরকার এখনই না দেখলে জনসাধারণ ভোগান্তিতে পড়বে। মানুষ না খেয়ে মরবে।

বাজার ও বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বললে, তারা ধারাবাহিক উত্তর দেন। কেউ বলেন সরবরাহ কম থাকায় দাম বেশি; আবার কেউ বলেন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। যা-ই হোক, বাজার তদারকি ও পণ্যের মূল্য ন্যায্য ও স্বাভাবিক চায় জনগণ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৭ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০২৩
ইএসএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।