ঢাকা, রবিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নতুন রূপে সাইবার অপরাধ: বুলিং কমলেও ঝুঁকিতে শিশুরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৪ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২৩
নতুন রূপে সাইবার অপরাধ: বুলিং কমলেও ঝুঁকিতে শিশুরা

ঢাকা: সম্প্রতি দেশে নতুন ধরনের অপরাধের মাত্রা বেড়েছে। বুলিং কমলেও সাইবার অপরাধে বেশি শিকার এখনও নারী ও শিশুরা।

সেই সঙ্গে সাইবার স্পেসে বেড়েছে আর্থিক প্রতারণার ঘটনা। ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি (২ শতাংশের বেশি) অপপ্রচারের শিকার হয় শিশুরা। বয়স ভিত্তিক অপরাধের ধরনে ভুক্তভোগীদের মধ্যে ১২ শতাংশের বেশি তরুণরা (১৮-৩০ বছর) একই ধরনের অপরাধের শিকার হচ্ছে।

শনিবার (২০ মে) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে বাংলাদেশ সাইবার অপরাধ প্রবণতা-২০২৩ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ ও আলোচনা সভায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে।  

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন (সিক্যাফ) কর্তৃক ধারাবাহিকভাবে পঞ্চমবারের মতো প্রকাশিত এই প্রতিবেদন বলা হয়, দেশে সাম্প্রতিক সময়ে নতুন ধরনের অপরাধের মাত্রা বেড়েছে ৩৮১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এসব অপরাধের মধ্যে রয়েছে নানা মাত্রিক অপরাধ। এর মধ্যে বেশি হচ্ছে চাকরি দেওয়ার নামে মিথ্যা আশ্বাস এবং অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে আর্থিক প্রতারণা।  

সিক্যাফ এর গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হলেও গত পাঁচ বছরে তুলনামূলকভাবে কমছে সাইবার বুলিং সংশ্লিষ্ট অপরাধের ঘটনা (অনলাইন ও ফোনে বার্তা পাঠানো, পর্নোগ্রাফি, সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচার ও ছবি বিকৃতি)। এ ধরনের অপরাধ ২০২২ সালে ৫২ দশমিক ২১ শতাংশ রেকর্ড করা হয়েছে, যা ২০১৭ সালে ছিল ৫৯ দশমিক ৯০ শতাংশ।

সামাজিক মাধ্যমসহ অন্যান্য আইডি হ্যাকিংয়ের ঘটনাগুলোও ধারাবাহিকভাবে কমলেও আর্থিক সংশ্লিষ্ট প্রতারণা থেমে নেই। ২০২২ সালে ভুক্তভোগীদের ১৪ দশমিক ৬৪ শতাংশই অনলাইনে পণ্য কিনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। অপরদিকে, ভুক্তভোগীদের মধ্যে সামাজিক মাধ্যমের আইডি হ্যাকিংয়ের শিকার সর্বোচ্চ ২৫ দশমিক ১৮ শতাংশই নারী। তারপরও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে অভিযোগের হার দিন দিন কমছে। ২০১৮ সাল থেকে পাঁচটি জরিপে সাইবার অপরাধের শিকার ভুক্তভোগীদের মধ্যে কতজন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অভিযোগ করেছেন, তার ফলাফল উদ্বেগজনক। জরিপে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ভুক্তভোগীদের মধ্যে অভিযোগকারীর সংখ্যা দিন দিন কমছে। ২০১৮ সালের জরিপে যেখানে অভিযোগকারীর শতকরা হার ছিল ৬১ শতাংশ, ২০২৩ এ গিয়ে তা কমে ২০ দশমিক ৮৩ শতাংশে নেমেছে।  

এছাড়াও ২০২৩ সালের জরিপে ভুক্তভোগীদের ১৪ দশমিক ৮২ শতাংশের বয়সই ১৮ বছরের নিচে, যা ২০১৮ সালের জরিপের তুলনায় ১৪০ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি (২ শতাংশের বেশি) অপপ্রচারের শিকার হয় শিশুরা। বয়স ভিত্তিক অপরাধের ধরনে ভুক্তভোগীদের মধ্যে ১২ শতাংশ তরুণরা (১৮-৩০ বছর) একই ধরনের অপরাধের শিকার।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সর্বশেষ জরিপে ভুক্তভোগীদের ৭৫ শতাংশের বয়সই ছিল ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। ২০১৮ সালের জরিপ থেকে এ পর্যন্ত একাধারে এ বয়সী ভুক্তভোগীর সংখ্যা সর্বোচ্চ এবং তাদের মধ্যে অধিকাংশই সামাজিক মাধ্যমে ভুয়া অ্যাকাউন্টে অপপ্রচার ও আইডি হ্যাকিংয়ের শিকার।

সিক্যাফ এর সভাপতি কাজী মুস্তাফিজের সভাপতিত্বে সভায় প্রতিবেদন পেশ করেন গবেষণা সহকারী স্বর্ণা সাহা। গবেষণা পর্ষদের নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ওবায়দুল্লাহ আল মারজুক।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসির সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রাশেদা রওনক খান, বাংলাদেশ (এনসিসিএবি) সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা বিষয়ক জাতীয় কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মো. মুশফিকুর রহমান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৪ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২৩
এসজেএ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।