রাজশাহী: পাঁচ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন তার বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন ৭৮ লাখ ৩২ হাজার ২০৮ টাকা। পাঁচ বছর পর এখন তার বার্ষিক আয় ২ কোটি ৯৮ লাখ ১০ হাজার টাকা।
এর আগে, ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় দেওয়া হলফনামায় মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটনের মাছ চাষ থেকে আয় দেখিয়েছিলেন ২০ লাখ টাকা, ব্যবসা থেকে ১২ লাখ, কৃষিখাত থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার, বাড়ি ভাড়া থেকে ৫ লাখ ৫২ হাজার ৫০০, শেয়ার থেকে ২০ লাখ ১০ হাজার এবং অন্যান্য খাত থেকে ১৯ লাখ ৯ হাজার ৭০৮ টাকা। তখন আয়ের মোট অংক দাঁড়িয়েছিল ৭৮ লাখ ৩২ হাজার ২০৮ টাকা।
২০১৮ সালের তুলনায় এখন লিটনের বার্ষিক আয় ৩ দশমিক ৮০ গুণ বেশি।
২০১৮ সালে লিটনের অস্থাবর সম্পদ ছিল ১ কোটি ৭৫ লাখ ১৩ হাজার ৫০৮ টাকার। এর মধ্যে নগদ ৩০ হাজার টাকা, ব্যাংকে ১ কোটি ৩৮ লাখ ৫৩ হাজার ৪০৮ টাকা এবং ৩৬ লাখ ৩০ হাজার টাকার একটি জিপ গাড়ি ছিল। এছাড়া উপহার হিসেবে পাওয়া ১৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ছিল তার।
এখন তার অস্থাবর সম্পদ ৪ কোটি ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৮৯৯ টাকা। এর মধ্যে হাতে নগদ ৭ লাখ ২ হাজার ২৩৭ টাকা, ব্যাংকে ২ কোটি ৮৪ লাখ ৯১ হাজার ৮০০ টাকা, ৪০ লাখ ৮৫ হাজার টাকার শেয়ার, ৪৬ লাখ ৩০ হাজার টাকার জিপ ও প্রাইভেটকার, ১৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ২৫ লাখ টাকার ইলেট্রনিক্স সামগ্রী এবং ৬ লাখ টাকা দামের একটি শটগান ও একটি পিস্তল আছে। ফলে গত পাঁচ বছরে তার অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে ২ দশমিক ৩৮ গুণ।
এখন স্থাবর সম্পদ হিসেবে লিটনের আছে ৪ দশমিক ৬৩ একর কৃষিজমি, নগরীর উপশহরে একটি তিনতলা বাড়ি, ঢাকার বনানীতে দুইটি অ্যাপার্টমেন্ট এবং ৭০ লাখ ১২ হাজার ১৯০ টাকার মাছের খামার।
এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় খায়রুজ্জামান লিটনের কৃষিজমি ছিল ১ দশমিক ৬৩ একর। এখনকার মতো তখনও রাজশাহীতে তিনতলা বাড়ি ও ঢাকায় দুইটি অ্যাপার্টমেন্ট ছিল। পাঁচ বছরে ৩ একর জমি ও মাছের খামার হয়েছে খায়রুজ্জামান লিটনের।
তবে ২০১৮ সালে লিটনের কোনো ঋণ ছিল না। এখন অবশ্য গাড়ি কিনতে গিয়ে পূবালী ব্যাংকে ২০ লাখ ৭৯ হাজার ৩৭ টাকা ঋণ নিয়েছেন তিনি। লিটন তার পেশা হিসেবে আইনজীবী লিখলেও এ খাত থেকে তার কোনো আয় দেখানো হয়নি। আর তার নামে বর্তমানে কোনো মামলা চলমান নেই। ১৯৯৬ সালের দুইটি মামলা থাকলেও রাষ্ট্র কর্তৃক সেগুলো প্রত্যাহার করা হয়েছে।
২০১৮ সালে তার স্ত্রী শাহীন আকতার রেনীর বার্ষিক কোনো আয় ছিল না। তবে এখন তিনি ব্যবসা করে বছরে ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ও মাছের খামার খাত থেকে ১ কোটি ৪১ লাখ টাকা আয় করেন। আয়-রোজগার শুরু হওয়ায় তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদও বেড়েছে। এখন কৃষিজমি আছে ১ দশমিক ৭৭ একর, মাছের খামার রয়েছে ৭৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকার।
২০১৮ সালে অস্থাবর সম্পদের মধ্যে শাহীন আকতার রেনীর উপহার হিসেবে পাওয়া ৫০ স্বর্ণালঙ্কার ছিল। এছাড়া ৯২ লাখ ৩ হাজার টাকা মূল্যের অন্য সম্পদ ছিল। এর মধ্যে নগদ ২০ হাজার টাকা, ব্যাংকে ৫৭ লাখ ৩৩ হাজার টাকা এবং ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার স্থায়ী আমানত ছিল। পাঁচ বছরে তার স্বর্ণ বাড়েনি। স্বর্ণ বাদে অন্য অস্থাবর সম্পদের মূল্য বেড়ে ২ কোটি ৮৪ হাজার টাকা হয়েছে।
তার মধ্যে নগদ ১৮ লাখ ৪৭ হাজার ১৩০ টাকা, ব্যাংকে ১ কোটি ৭৮ লাখ ৭৬ হাজার ৮৭০ টাকা, ১০ লাখ টাকার শেয়ার, ৯ লাখ টাকার স্থায়ী আমানত, আড়াই লাখ টাকার ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী এবং ২ লাখ ১০ হাজার টাকার আসবাবপত্র আছে তার নামে।
বাংলাদেশ সময়: ০০২২ ঘণ্টা, ২৮, ২০২৩
এসএস/এফআর