ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি বিশ্লেষণ করে রাষ্ট্রনীতি নির্ধারণের আহ্বান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা, জুন ২, ২০২৩
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি বিশ্লেষণ করে রাষ্ট্রনীতি নির্ধারণের আহ্বান

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি বিশ্লেষণ করে দেশের রাষ্ট্রনীতি নির্ধারণের আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

তিনি বলেন, আমদের মতো উদীয়মান দেশগুলোর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটে।

আমাদের দেখতে হবে, এই নীতি আমদের কোন অংশে আঘাত হানে। সেই হিসেবে রাষ্ট্রনীতি নির্ধারণ করতে হবে।

শুক্রবার (২ জুন) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরামের (ইআরডিএফবি) আয়োজনে  ‘মার্কিন নতুন ভিসানীতি : বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আখতারুজ্জামান এসব কথা বলেন।

ঢাবি উপাচার্য বলেন, ভিসানীতি নিয়ে দুটি বক্তব্য উঠে এসেছে। ভিসানীতি অসঙ্গতিপূর্ণ ও অস্পষ্ট, বাস্তবায়ননীতির  গ্রহণযোগ্যতা নেই। মূলত যুক্তরাষ্ট্র নতুন নীতি অবলম্বন করছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞার পরিবর্তে ব্যক্তি বা প্রাতিষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধেও সরকারের পরিবর্তে কতিপয় ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আমরা দেখেছি।

অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, আমার ধারণা দুটি কারণেই এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আমরা ৩৫তম শক্তিশালী অর্থনৈতিক দেশ। ২০৪০ সালের মধ্যে ২০তম শক্তিশালী অর্থনৈতিক দেশ হওয়ার পরিকল্পনা আমাদের আছে।

তিনি বলেন, নতুন ভিসানীতি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও উন্নয়নের ধারায় আঘাত হানে কি না, সেই বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে আমাদের করণীয় নির্ধারণ করতে হবে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. দেলোয়ার হোসেন ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম, ইআরডিএফবি সভাপতি ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ড. মুহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন।  

আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া, বুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খান ও ঢাবি অধ্যাপক ড. গোবিন্দ চক্রবর্তী।

ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ব্যক্তি ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এ থেকে জানা যায় রাষ্ট্রের বন্ধু দেশ কারা। বন্ধু রাষ্ট্র হলে বন্ধু হওয়া উচিত, নিষেধাজ্ঞা বা উন্নয়নে বাধা দেওয়া না। বন্ধুরূপে শত্রু হওয়ার প্রয়োজন নেই।

ড. মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫১ বছরের যে সম্পর্ক, তাতে এই ভিসানীতি কতটুকু গ্রহণযোগ্য তা দেখার বিষয় আছে। এতে তাদের সঙ্গে পররাষ্ট্রনীতিতেও সমস্যা তৈরি হবে।  

তিনি বলেন, আমরা স্বল্পমূল্যে রপ্তানি করি, অন্য দেশ থেকে আমদানিতে তাদের খরচ বেশি হবে। ফলে আমরা যে রপ্তানি করি, তাতে তারাও বেশ লাভবান হচ্ছে। পৃথিবীতে বিশ্ব সরকার বলতে কিছু নেই যে, তারা এসে বলবে আপনারা এভাবে নির্বাচন করবেন। সহযোগিতার সুযোগ থাকলেও হস্তক্ষেপের অধিকার থাকে না। প্রতিটি সার্বভৌম দেশকে সম্মান করতে হবে।

অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব বিষয় আমাদের রুখে দিতে হবে। ১৯৭১ সালে আমরা তা করে দেখিয়েছি।

অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খান বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভিসানীতি করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। ভিসানীতিতে অনেক দিক তুলে ধরা হয়নি। এতে জনসাধারণ দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছে।

ড. গোবিন্দ চক্রবর্তী বলেন, নতুন ভিসানীতি নিয়ে রাজনীতিকরা তাদের নিজেদের মত করে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। তাই নীতি নিয়ে স্বচ্ছ ধারণা প্রয়োজন। সাধারণ বিষয়কে এখানে খুব বড়ভাবে দেখা হচ্ছে। আমাদের আয়ের বড় উৎস গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি। এর অধিকাংশ আয় আসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। অন্যান্য দেশ থেকে এই পণ্য আমদানিতে তাদের ব্যয় অনেক বাড়বে। ফলে আমাদের রপ্তানিতে তারাই বেশি লাভবান হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, জুন ২, ২০২৩
এইচএমএস/আরএইচ/এমএইচএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।