ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পুলিশ কনস্টেবল স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৮ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২৩
পুলিশ কনস্টেবল স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

বরিশাল: পুলিশ কনস্টেবল স্বামী মো. আবুল খায়েরের (৩০) বিরুদ্ধে যৌতুক ও কুপিয়ে জখমের অভিযোগে দুটি মামলা করেন তার স্ত্রী হ্যাপি আক্তার (২৯)।  

আর মামলা দুটি প্রত্যাহার না করলে স্ত্রীর সঙ্গে হওয়া শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেন ওই কনস্টেবল।

 

এই অভিযোগে স্বামী আবুল খায়ের ও তার বন্ধুর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন হ্যাপি আক্তার।

বুধবার (২১ জুন) শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন হ্যাপি। তিনি বরিশাল নগরের পশ্চিম কাউনিয়া সোবাহান মিয়ার মৃত আব্দুল করিমের মেয়ে।

অভিযুক্ত স্বামী মো. আবুল খায়ের মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলার হোগলাকান্দি গ্রামের আসাদ সরকারের ছেলে। তিনি বর্তমানে মাদারীপুরের ডাসার থানায় কনস্টেবল পদে কর্মরত।

সংবাদ সম্মেলনে হ্যাপি আক্তার অভিযোগ করে জানান, ২০১৮ সালে ফেসবুকে আবুল খায়েরের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। কনস্টেবল হলেও এসআই পরিচয় দিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়েন খায়ের। পুলিশ সদস্য হওয়ায় পরিবার সম্পর্ক মেনে নিতে চায়নি। তাই পরে খায়েরের নিজ এলাকার চরকেওয়ার ইউনিয়নের মুন্সীরহাট কাজী অফিসে ২ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে হয় তাদের। বিয়ের কয়েকদিন পর তিনি জানতে পারেন খায়ের এসআই নয়, কনস্টেবল। এরপর থেকে এএসআই পদে পদোন্নতি নিতে তার কাছে ৫ লাখ টাকা চান খায়ের। হ্যাপি তার পরিবারের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা এনে দেন। এরপর আরও ১০ লাখ টাকার জন্য নির্যাতন শুরু
করে খায়ের। এদিকে হ্যাপি অন্তঃসত্ত্বা হন। একদিন খায়েরের বেদম মারধরে অজ্ঞান হন তিনি। জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে মুন্সীগঞ্জ হাসপাতালে দেখতে পান হ্যাপী। জানেন গর্ভের সন্তান হারিয়েছেন তিনি।

হ্যাপির দাবি, অধরা নাম দিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে তার গর্ভের ভ্রুণ হত্যা করেছে স্বামী খায়ের। এদিকে ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে তার অগোচরে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও করেন কনস্টেবল খায়ের। সেখানে স্বামীর শরীর দেখা গেলেও তাকে সম্পূর্ণ দেখা যায়।

সংবাদ সম্মেলনে হ্যাপি বলেন, ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয় স্বামী খায়ের ও তার বন্ধু রোমান। স্বেচ্ছায় তালাক দিলে ভিডিও ছাড়বে না বলে জানিয়ে দেয় তারা। পরে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের কাছে বিচার দেওয়া দেন তিনি। তারা সালিশ করে দেয়।  

এদিকে শ্বশুরবাড়িতে ফিরে গেলে শাশুড়ি তাড়িয়ে দেন বলেও অভিযোগ করেন হ্যাপি।

হ্যাপি আরও অভিযোগ করেন, গত ৯ মার্চ ঢাকায় গাড়ির নিচে ফেলেও তাকে হত্যার চেষ্টা করেন তার স্বামী খায়েরসহ তার ভাই জনি সরকার।

পরে এ বিষয়ে মাদারীপুর এএসপি অফিসে অভিযোগ দেন তিনি। অভিযোগে তিনি লেখেন, গত ২৮ মে মাদারীপুর থেকে ফেরার পথে খাঞ্জাপুর এলাকা পৌঁছুলে একটি মোটর সাইকেলযোগে স্বামী খায়েরসহ তিনজন এসে তাকে কুপিয়ে জখম করে। এছাড়াও বেধড়ক মারধর করে।

স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।  

এ ঘটনায় কুপিয়ে জখম ও যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে থানায় মামলা করেন হ্যাপি। মামলার পর স্বামী খায়ের ও বন্ধু রোমান শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন।  

অভিযোগের বিষয়ে কনস্টেবল আবুল খায়েরের মোবাইল ফোন নম্বরে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২৩
এমএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।