ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএনডিবাসীর কাছে যাবেন শামীম ওসমান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০২৩
জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএনডিবাসীর কাছে যাবেন শামীম ওসমান ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জ: জেলার সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) বাঁধের ভেতরের জলাবদ্ধতা নিরসনে বসবাসকারীদের জনগোষ্ঠীর দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলবেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান।

রোববার (২ জুলাই) দুপুরে ডিএনডি বাঁধের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, ডিএনডি এলাকার জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের সমস্যা কথা শুনে সেটি সমাধানের দ্রুত উদ্যোগ নেবেন শামীম ওসমান।

তার সঙ্গে আরও উপস্থিত থাকবেন ডিএনডি এলাকাগুলোর জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় বাসিন্দা ও ডিএনডি প্রকল্পের কাজে যুক্ত সেনাবাহিনীর দায়িত্বশীলরা।

এ বিষয়ে শামীম ওসমান বাংলানিউজকে বলেন, রোববার আমি নিজেই বিষয়টি দেখতে ও প্রকল্পের দায়িত্বরতদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি কিভাবে দ্রুত সমাধান করা যায় এবং মানুষের দুর্ভোগ কিভাবে লাঘব করা যায় সেটি করার ব্যবস্থা করব। জনপ্রতিনিধিদের ও স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে সেটি যেভাবে দরকার সেভাবেই করব। মানুষ কষ্ট দুর্দশা দূর করাটাই এখানে মূল লক্ষ্য।

এর আগে ঈদের আগের দিন থেকে টানা বর্ষণে ডিএনডির অভ্যন্তরে সিদ্ধিরগঞ্জ, পাগলা, ফতুল্লা, কুতুবপুর, মুন্সিবাগ, শহীদবাগ, মিজমিজি, কদমতলী, কদমতলী পশ্চিম, কালু হাজী রোড, ধনু হাজী রোড, ফতুল্লার শান্তিধারা, গিরিধারা, জালকুড়ি, ভুইগড়সহ বিভিন্ন এলাকার জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে করে চরম বিপাকে পড়েন এখানকার বাসিন্দারা।

১৯৬২ সালে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরার (ডিএনডি) মধ্যকার ৫৮ দশমিক ২২ বর্গকিলোমিটার জলাভূমিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ সুবিধা সৃষ্টির মাধ্যমে অতিরিক্ত ধান চাষ করার জন্য চারদিকে বাঁধ নিয়ে ‘ডিএনডি ইরিগেশন প্ল্যান্ট’ তৈরি করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে এ বাঁধটিই ডেমরা-নারায়ণগঞ্জ-পোস্তগোলা-যাত্রাবাড়ী এলাকার চারদিকে যান চলাচলের রাস্তা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং বর্তমানে তা আরও প্রসারিত হয়েছে।

প্রকল্প এলাকায় সেচের জন্য ৫৫ দশমিক দুই কিলোমিটার সেচ খাল ও ৪৫ দশমিক ৯০ কিলোমিটার নিষ্কাশন খাল খনন করা হয়েছিল। ডিএনডি এলাকাটিতে নিম্ন আয় থেকে মধ্য আয়ের প্রায় ৫০ লাখ লোকের বসবাস। এছাড়া রয়েছে অসংখ্য উপাসনালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ছোট-মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি।

প্রয়োজনের তাগিদে ধানক্ষেতের আইল দিয়ে চলার পথকে ভিত্তি করে অথবা এলাকাবাসীর সুবিধা অনুযায়ী অপরিকল্পিতভাবে রাস্তা গড়ে উঠেছে, যা পরবর্তী সময়ে পাকা রাস্তায় পরিণত হয়েছে। ওইসব রাস্তার দুই পাশে সুউচ্চ অট্টালিকা গড়ে উঠেছে। অনেক এলাকায় রাস্তার পাশে ড্রেন আছে, কিন্তু ড্রেনের পাশের বাড়িগুলো থেকে অপচনশীল দ্রব্যাদি দীর্ঘদিন ড্রেনে ফেলার কারণে এবং নিয়মিত পরিষ্কার না করায় ড্রেনগুলো ময়লা, বালি ও মাটিতে ভরাট হয়ে গেছে।

ডিএনডি এলাকাটির চারদিকে উঁচু বাঁধ থাকার ফলে পানি বের হয়ে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। বাঁধের মধ্যখানের নিচু এলাকায় প্লাবিত পানি নিষ্কাশনের জন্য শিমরাইলে অবস্থিত একটি মাত্র পাম্পস্টেশন রয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য। এছাড়া খালটির বিভিন্ন স্থানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ায় ড্রেনের পানি পাম্পস্টেশন পর্যন্ত পৌঁছার কোনো উপায় না থাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে জাতীয় সংসদে নারায়ণগঞ্জ-৪ এর সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের দৃষ্টি আকর্ষণী বক্তব্যের পর সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ডিএনডি এলাকা পরিদর্শন করে। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৫৫৮ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ডিএনডি ড্রেনেজ অ্যান্ড স্যুয়ারেজ ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প’ একনেকে উপস্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী ডিএনডি বাঁধের মধ্যে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর দুঃখ-দুর্দশার কথা বিবেচনা করে প্রকল্পটি অনুমোদন করেন। প্রকল্প এলাকায় দখল করা খাল পুনরুদ্ধার করে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়।  ইতোমধ্যে প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে এক হাজার ২৯৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০২৩
এমআরপি/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।