ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গৃহবধূর মাথার চুল কেটে নেওয়ায় স্বামী-সতিনসহ গ্রেপ্তার ৩

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২৩
গৃহবধূর মাথার চুল কেটে নেওয়ায় স্বামী-সতিনসহ গ্রেপ্তার ৩

ঠাকুরগাঁও: যৌতুকের দাবি পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় স্বামী-সতিন মিলে রোজিনা বেগম নামে এক নারীকে মারধর করে মাথার চুল কেটে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, লাঞ্চনার শিকার ওই নারী জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে মৃত ভেবে বাড়ির পাশের বাঁশ ঝাড়ে ফেলে দেওয়া হয়।

পরে খবর পেয়ে পুলিশ বাঁশঝাড় থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে।

বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মধুপুরে অভিযান পরিচালনা করে স্বামী নূর আলম, সতিন রুনা বেগম ও সতীনের ছেলেকে গ্রেপ্তারের পরে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।

জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মধুপুর ডাঙ্গাপাড়া (কাকলি স্কুলের পশ্চিমে) গ্রামের আফসার আলীর ছেলে নূর আলম প্রথম স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও ৩ বছর আগে রানীশংকৈল উপজেলার গোগর সরকারপাড়া গ্রামের আব্দুল হকের মেয়ে রোজিনা বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখতে তাকে নিয়ে ঠাকুরগাঁও শহরের ভাড়া বাসায় থাকতেন নূর আলম।

এদিকে ব্যবসার টাকা লাটে উঠলে আবার ব্যবসা চালু করার জন্য রোজিনার কাছে দেড় লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন নূর আলম। কিন্তু রোজিনা যৌতুক আনতে না পারায় স্বামী তাকে নির্যাতন করতেন।

গত মঙ্গলবার (০৮ আগস্ট) রাতে নূর আলম রোজিনার ভাড়া বাসায় ওঠেন এবং যৌতুকের দেড় লাখ টাকার জন্য চাপ দেন। পরে বুধবার (০৯ আগস্ট) সকালে নূর আলম রোজিনার ঘরে ছিটকিনি দিয়ে তার মোবাইল ফোন নিয়ে গ্রামের বাড়ি মধুপুর গ্রামে চলে যান। বিষয়টি টের পেয়ে রোজিনাও নূর আলমের গ্রামের বাসায় যান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন নূর আলম, তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও ছেলে। এ নিয়ে কথাবার্তার এক পর্যায়ে নূর আলম মাথার চুল ধরে তাকে কাবু করেন এবং তার প্রথম স্ত্রী রুনা বেগম ও তার ছেলে রোজিনাকে মারধর করেন। পরে কাঁচি দিয়ে তার মাথার চুল কেটে দেন সতিন রুনা বেগম।

তারপরেও তারা নির্যাতন করতে থাকেন। এক পর্যায়ে রুনা বেগম জ্ঞান হারিয়ে ফেললে মৃত ভেবে তাকে গোপন করার উদ্দেশে বাড়ির পাশে বাঁশ ঝাড়ে ফেলে দেন তারা।

এদিকে খবর পেয়ে রুহিয়া থানার উপ-পরিদর্শক আবু হানিফ পুলিশ ফোর্স নিয়ে সেখানে হাজির হন। পরে তারা ওই বাঁশঝাড় থেকে গৃহবধূ রোজিনাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

পরে এ ঘটনায় গৃহবধূ রোজিনা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(ক) ও (খ) ধারায় রুহিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু হানিফ তাৎক্ষণিকভাবে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে রোজিনার স্বামী নূর আলম, সতিন রুনা বেগম ও সতীনের ছেলে সুজনকে গ্রেপ্তার করেন।

রুহিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা বাংলানিউজকে জানান, গৃহবধূকে মারধর করে মাথার চুল কেটে দিয়ে বাঁশঝাড়ে ফেলে রাখা হয়েছিল। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২৩
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।