ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ঘোষণাসহ ৬ দাবি নারীপক্ষের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৩
গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ঘোষণাসহ ৬ দাবি নারীপক্ষের ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ঘোষণাসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছে নারীপক্ষ। শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক অবস্থান কর্মসূচিতে সংগঠনটির নেতারা এসব দাবি জানান।

তাদের দাবিগুলো হলো:

১। অবিলম্বে পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম সঙ্গতিপূর্ণ শ্রমের মজুরি ঘোষণা করা। ৬৫ শতাংশ বেসিক নিশ্চিত করা। মজুরি নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত ৬০ শতাংশ মহার্ঘ্যভাতা দেওয়া।

২। সব গ্রেডে জীবন যাত্রার ব্যায়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে মজুরি বৃদ্ধির সুযোগ দেওয়া।

৩। গ্রেড বৈষম্য দূর করতে মজুরি কাঠামো পরিবর্তন করা। বর্তমানে প্রচলিত ৭টি গ্রেডের বদলে ৫টি গ্রেড করা।

৪। সোয়েটার ও পিস রেটে কর্মরত শ্রমিকদের কাজের আগে মজুরি নির্ধারণ ও ডাল সিজনে পূর্ণ বেসিক দেওয়া। সোয়েটারে ৩ শিফট ও ওভারটাইম নিশ্চিত করা।

৫। ইপিজেড-ইপিজেডের বাইরে সব কারখানায় সমান হারে মজুরি বৃদ্ধি ও মূল মজুরির ১০ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট দেওয়া। বাধ্যতামূলক অংশীদারিত্বমূলক প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করা।

৬। তৈরি পোশাক শিল্পে যেহেতু বেশির ভাগ নারী কর্মরত রয়েছে, তাই মজুরি বোর্ডে নারীর অংশগ্রহণ ও সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়ায় নারী সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা।

অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ বাংলাদেশ। পোশাক শিল্পে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক কাজ করেন, যার ৬০ শতাংশই নারী এবং দেশের জিডিপিতে পোশাক শিল্পের অবদান ১১ ভাগ। ২০১৮ সালে মজুরি ঘোষণার পরবর্তী ৫ বছরে করোনাকাল, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধোত্তর অর্থনৈতিক ধাক্কা, মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যস্ফীতির সংকটে অন্যান্যখাতের পতন হলেও পোশাকখাত তার বিকাশ অব্যাহত রেখেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রচলিত- অপ্রচলিত উভয় বাজারে মোট পোশাক রপ্তানি ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ বেড়েছে।

তারা আরও বলেন, বর্তমানে রপ্তানির হার ৪৬ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলারে (৪ হাজার ৬৯৯ কোটি ডলার) পৌঁছেছে যা গত বছরে ছিল ৪২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার (৪ হাজার ২৬১ কোটি ডলার)। কিন্তু বাস্তবতা হলো এই যে, বিশ্ববাজারে এ খাত সুনাম কুড়ালেও আমাদের দেশের শ্রমিকেরা বিশ্বেও সবচেয়ে কম মজুরিতে কাজ করে। তারা পারেননি দারিদ্রসীমা অতিক্রম করতে।

তারা বলেন, বর্তমান বাজারে খাদ্য ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রমিকরা দিশেহারা। ২০১৮-১৯ সালে মজুরি বৃদ্ধির ঘোষণার পর গত কয়েক বছরে বাড়ি ভাড়া, সন্তানের লেখা পড়ার খরচ, গ্যাস-বিদ্যুৎ বিলসহ জীবন যাত্রার খরচ এতই বেড়েছে যে, বর্তমান মজুরি দিয়ে পোশাক শ্রমিকের বেঁচে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই পোশাক শ্রমিকদের জন্য অবিলম্বে ন্যূনতম মজুরি বোর্ড ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি।

নারীপক্ষের সদস্য মাহিন সুলতানের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক খাদিজা আক্তার, ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কার্সের সাধারণ সম্পাদক চায়না রহমান ও বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৩
এসসি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।