ঢাকা: মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের বিদায়ী হাইকমিশনার মো. গোলাম সারওয়ার দেশটির ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালক দাতুক রুসলিন জুসহের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময়ে তারা বাংলাদেশ এবং মালয়েশিয়ার মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি কর্মীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন জানায়, হাইকমিশনার মো. গোলাম সারওয়ার মালয়েশিয়ায় কর্মরত অবস্থায় মহাপরিচালক এবং তার দপ্তরের আন্তরিক সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি তার সময়কালে (২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে) মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া পুনরায় চালু হওয়ার কথা জানিয়ে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের বর্তমান অবস্থা জানান।
বিশ্বস্ত, কর্মনিষ্ঠ, উত্তম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, কঠোর পরিশ্রমী হওয়ার কারণে মালয়েশিয়ার কর্ম বাজারে বাংলাদেশের কর্মীদের ব্যাপক চাহিদার কথা উল্লেখ করেন তিনি। মহাপরিচালক এ বিষয়ে একমত প্রকাশ করে জানান যে, এর আগে মালয়েশিয়ায় বিদেশি কর্মীর সংখ্যা বিবেচনায় বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও রিক্যালিব্রেশন প্রক্রিয়ার আওতায় এ বছরের ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশ প্রথম স্থানে চলে আসবে।
সৌজন্য সাক্ষাৎকালে হাইকমিশনার মালয়েশিয়ায় নিয়োগপ্রাপ্ত বাংলাদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়ার ভিসা ইস্যুর ক্ষেত্রে চলমান ধীরগতির কথা উল্লেখ করে মালয়েশিয়ায় নতুন বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে দ্রুততার সঙ্গে ই-ভিসা ইস্যু করার জন্য অনুরোধ জানান। এ বিষয়ে মহাপরিচালক অতি শিগগিরই টাস্কফোর্স গঠনের মাধ্যমে আগামী এক মাসের মধ্যে মালয়েশিয়ার ভিসা ইস্যু করার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতা দূর করে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে চলমান প্রক্রিয়াকে দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার বিষয়ে হাইকমিশনারকে আশ্বাস দেন।
২০১৬ সালে রি-হায়ারিং প্রোগ্রামের আওতায় বৈধ হওয়া বাংলাদেশি কর্মীদের ২০২৩ সালে ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ৬ ও ৭ নম্বর ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে তারা দিনযাপন করছেন। হাইকমিশনার এই কর্মীদের বর্তমানে চলমান রিক্যালিব্রেশন প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে তাদের জীবনে বিরাজমান অনিশ্চয়তার অবসানে ইমিগ্রেশন মহাপরিচালকের আন্তরিক সহযোগিতার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানান।
এ বিষয়ে অভিবাসন দপ্তর মালয়েশিয়া সরকারের বিদ্যমান ভিসানীতি অনুসরণ করছে বলে তিনি জানান। তিনি আরও জানান, ৬ নম্বর ভিসায় মালয়েশিয়ায় আসা বাংলাদেশি কর্মীদের বিশেষ পাসের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় বসবাস করার সুযোগ রাখা হয়েছে।
হাইকমিশনার এ কর্মীদের মূল্যবান কর্মঅভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা আমলে নিয়ে এবং মালয়েশিয়ার বিদ্যমান কর্মী চাহিদা বিবেচনায় ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়া কর্মীদের রিক্যালিব্রেশন-২ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার আহবান জানান। মহাপরিচালক বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার আশ্বাস দিয়ে হাইকমিশনের মাধ্যমে সব বাংলাদেশি কর্মীর মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে বসবাসের জন্য আহবান জানান।
মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনারের শেষ কর্মদিবসে আয়োজিত এই অতি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাতের জন্য মহাপরিচালক তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। বিদায়ী হাইকমিশনার মহাপরিচালককে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নে নতুন হাইকমিশনার এবং হাইকমিশনের সবার সঙ্গে একযোগে, নিবিড়ভাবে কাজ করার আহবান জানান।
হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার মালেয়েশিয়ায় তিন বছরের কার্যকাল অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে সমাপ্ত করে তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) মহাসচিব হিসেবে যোগদানের জন্য বুধবার রাতে মালয়েশিয়া ছেড়ে যান।
সাক্ষাতে বিদায়ী হাইকমিশনারের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, ডেপুটি হাইকমিশনার মো. খোরশেদ আলম খাস্তগীর, শ্রম মিনিস্টার মো. নাজমুছ সাদাত সেলিম, শ্রম কাউন্সিলর শরিফুল ইসলামসহ আরও অনেকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫ ৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০২৩
টিআর/আরএইচ