ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

গুলশান-বনানী-নিকেতনের বাসিন্দাদের নৌকায় চলাচলের আহ্বান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৪
গুলশান-বনানী-নিকেতনের বাসিন্দাদের নৌকায় চলাচলের আহ্বান

ঢাকা: গুলশান, বনানী ও নিকেতন সোসাইটির বাসিন্দাদের তাদের আশপাশের লেকগুলোয় নৌকায় করে চলাচলের আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

তিনি বলেছেন, আপনারা ইনোভেশনে আসুন।

লেকের মধ্যে নিজেদের উদ্যোগে নৌকা নামান। তাপর সেই নৌকায় চলাচল করুন। মানুষ আপনাদের দিকে তাকিয়ে থাকবে। আপনারা এক পা এগুবেন, আমি সিটি করপোরেশন থেকে দশ পা এগুবো।

বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর গুলশান- ১ নম্বরে অবস্থিত শহীদ ডা. ফজলে রাব্বি পার্কের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।

ডিএনসিসির মেয়র বলেন, আমাদের সিটি করপোরেশনের অঙ্গীকার ছিল ২৪টি পার্ক আমরা উদ্বোধন করে দেব। সেই অঙ্গীকার অনুযায়ী শহীদ ডা. ফজলে রাব্বি পার্ক উদ্বোধনের মাধ্যমে সবগুলো পার্ক উদ্বোধন হয়ে গেলো। কিন্তু এই পার্কগুলো আধুনিক ও সবুজায়ন করার ক্ষেত্রে অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল। ২৪টি পার্কের ক্ষেত্রে চব্বিশ ধরনের চ্যালেঞ্জ ছিল। সেই চ্যালেঞ্জ আমরা মোকাবিলা করেছি।

পার্ক ও মাঠ আধুনিকায়নে এখনও চ্যালেঞ্জ রয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, কিছু হলেই এই পার্কের মধ্যে প্রোগ্রাম। পারলে পার্কের মধ্যেই গরুর হাট করতে চায় সবাই। পার্কের মধ্যে অমুক, পার্কের মধ্যে তমুক। পার্কের মধ্যে একমাত্র খেলা হবে, আর অন্য কিছু হবে না। পার্কের মধ্যে সবাই হাঁটবে, খেলার জায়গায় খেলবে।

তিনি আরও বলেন, কয়দিন আগে আমরা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ডিজিটাল কার পার্কিং করলাম। উত্তরা, বনানী, গুলশানসহ পর্যায়ক্রমে ঢাকা উত্তর সিটির সব জায়গায় অন সাইট ডিজিটাল পার্কিং চালু হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে আমাদের। গুলশান-২ নম্বরে আমরা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্টের মাধ্যমে ট্রাফিক কন্ট্রোল করছি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বাসিন্দাদের অনলাইনের মাধ্যমে হোল্ডিং ট্যাক্স দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আতিক বলেন, ট্রেড লাইসেন্সও আপনারা অনলাইনে পাবেন। আমার সিটি করপোরেশনে যাওয়ার দরকার নেই। সিটি করপোরেশনে গেলে আপনাদের আকাশের যত তারা, তত ধারা দেখিয়ে দেবে। অনলাইনে আপনারা আপনাদের ট্যাক্স দিবেন।

শহীদ ডা. ফজলে রাব্বি পার্ক সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, শুধু গুলশান আর নিকেতন সোসাইটির জন্য নয়, এই পার্ক জনগণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এই পার্কে খেটে খাওয়া মানুষ আসবে। আমি এলাকাবাসীকে অনুরোধ করবো, ঘরে বসে না থেকে এই সুন্দর পার্কে আসুন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, এই যে পার্কটি হলো এটার মধ্য দিয়ে জনগণের কাছে মেসেজ যায়। সেটি হলো কারা এই দেশের জন্য, মানুষের জন্য এবং নাগরিক সমাজের জন্য কাজ করতে চায় এবং করছে। কাজেই আগামী দিনে যারা ভোটার তাদের মেসেজ দিতে চাই, কারা এই কাজগুলো করছে। কারা আমাদের জীবনে উন্নয়ন অগ্রগতি ও স্বাচ্ছন্দ এনে দিচ্ছে।

পার্ক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শহীদ ডা. ফজলে রাব্বির পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরিবারের পক্ষ থেকে তার ছেলে শহীদ ওমর রাব্বি বলেন, আজকের এই দিনটি আমাদের পরিবারের জন্য বিশেষ আনন্দ ও সম্মানের দিন। এই পার্কের আধুনিকায়ন ও পার্কের নাম শহীদ ডা. ফজলে রাব্বি নামকরণের জন্য ডিএনসিসি মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।

ডিএনসিসির ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মীর খায়রুল আলম। আরও উপস্থিত ছিলেন পার্কটির নকশাকারী দলের প্রধান বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক এম এম নাজমুল ইসলাম, ডিএনসিসির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর আমেনা বেগম, নিকেতন সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ বাশার প্রমুখ।

পরে ডিএনসিসির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এবং তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত শহীদ ডা. ফজলে রাব্বি পার্কের উদ্বোধন করেন। এরপর পার্কটি পরিদর্শন করেন তারা।

পার্কটিতে শব্দ দূষণ রোধে চারপাশে পরিবেশ বান্ধব শব্দ নিরোধক সিনথেটিক স্বচ্ছ দেয়াল দেওয়া হয়েছে। এই শব্দ নিরোধক দেয়ালের মধ্যে কালো রেখা দেওয়া হয়েছে। যাতে কোনো উড়ন্ত পাখি এতো ধাক্কা না খায়। এছাড়া পার্কের মধ্যে বিশেষ ধরনের টাইলস দিয়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। আছে ম্যানেজমেন্ট অফিস বিল্ডিং। যেখানে স্ন্যাকস কর্ণার, সেমিনার রুম, অফিস লাউঞ্জ আছে। পুরুষ ও মহিলা ও বিশেষ চাহিদ সম্পন্ন মানুষদের জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা টয়লেট। পার্কের মধ্যে দর্শনার্থীদের জন্য বসার সুব্যবস্থা আছে। রাতের বেলা নিরাপত্তার জন্য রয়েছে লাইটের ব্যবস্থা। ওয়াকওয়ের পাশে ন্যাচারাল ড্রেনেজ সিস্টেম করা হয়েছে। এর পাশাপাশি সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত কৃত্রিম টিলা, কৃত্রিম জলাধার ও জলাধারের উপর হাঁটার জন্য ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। আছে শিশুদের জন্য চিলড্রেন জোন ও বড়দের জন্য শারীরিক চর্চার জোন আছে। পার্কে প্রবেশের জন্য একটি বড় গেটসহ মোট তিনটি গেট রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২৪
এসসি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।