ফরিদপুর: প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, ফরিদপুরে শিল্প-কলকারখানা প্রতিষ্ঠার জন্য গ্যাসের ব্যবস্থা করা হবে।
ফরিদপুরে ১৯দিন ব্যাপী জসীম পল্লীমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ফরিদপুর শহরতলীর গোবিন্দপুর গ্রামে পল্লীকবির বাড়ির পাশে কুমার নদের তীরে জসীম মঞ্চে এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জেলা প্রশাসন ও জসীম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ১৯ দিনব্যাপী এ পল্লীমেলার আয়োজন করা হয়েছে জসীম মঞ্চ সংলগ্ন জসীম উদ্যানে।
তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, পল্লীকবি জসীমউদ্দীন ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যে একটা আত্মীক সম্পর্ক ছিল। বঙ্গবন্ধু তাকে বড় ভাই বলে ডাকতেন। বঙ্গবন্ধুকে রাজনীতির কবি বলা হয় আর জসীমউদ্দীন ছিলেন সাহিত্যের কবি। আবহমান বাংলাদেশ বিলুপ্ত হতে বসেছে। পরিবর্তন আসবে কিন্তু কবিরা যে সাহিত্য সৃষ্টি করে যান, তার মধ্যে আবহমান বাংলা বেঁচে থাকবে।
তিনি বলেন, ফরিদপুরে গ্যাস দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। গ্যাসের পাইপলাইন এসে গেছে। তবে পৃথিবী সংঘাতপূর্ণ হওয়ায় আমাদের কাজ বিলম্ব হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য ও ইউক্রেন সংকট তো আমরা উপেক্ষা করতে পারি না। পৃথিবী শান্ত হলে আমরা গ্যাস দিতে পারবো।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য এ কে আজাদ বলেন, পল্লীকবি জসীমউদ্দীন চিরন্তন বাংলার হৃদয় বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরেছেন। তার লেখায় আমাদের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফল ঘটেছে। কবির কবিতা জীব ও কর্ম আমরা আতস্থ করতে পারলে এবং আমাদের জীবন ও কর্মে তার প্রতিফলন ঘটাতে পারি তাহলে, আমরাই উপকৃত হব।
এ কে আজাদ গত নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমি এ নির্বাচনের জন্য জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারকে (এসপি) ধন্যবাদ জানাতে চাই। কেননা এ নির্বাচনে মানুষ তাদের মনের মতো ভোট দিতে পেরেছে, তাদের ইচ্ছের প্রতিফল ঘটাতে পেরেছে।
এ কে আজাদ বলেন, আমি ফরিদপুর সদর উপজেলা হতে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ও মাদকমুক্ত করার চেষ্টা করছি। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা সম্মিলিতভাবে কাজ করলে আমাদের লক্ষ্যে অবশ্যই পূরণ হবে। চাঁদাবাজি, মাদক ও সন্ত্রাস দমনে তিনি প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা ও সালথা) আসনের সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর, পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম, স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক চৌধুরী রওশন ইসলাম, কবিপুত্র খুরশিদ আনোয়ার, অম্বিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নূরুল আলম প্রমুখ।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন, কবি কন্যা আসমা জসিম উদ্দীন তৌফিক, কবিপুত্র জামাল আনোয়ার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফরিদপুরের ডিসি ও জসীম ফাউন্ডেশনের সভাপতি মো. কামরুল আহসান তালুকদার।
মেলার জসীম মঞ্চে প্রতিদিন সন্ধ্যায় জাতীয় ও স্থানীয় সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির নাটক, জারি সারি, পালা গানের আয়োজন রয়েছে। এতে ফরিদপুরসহ অন্যান্য জেলার সাংস্কৃতিক দলগুলো অংশ নেবে। মেলায় সার্কাস, নাগরদোলা, নৌকা রাইডসহ শিশুতোষ অনেক রাইড।
মেলার ২২০টি স্টলে থাকছে হস্ত, মৃৎ, বাঁশ ও বেত শিল্পসহ গ্রামীণ মানুষের ব্যবহৃত নিত্যদিনের জিনিসপত্রও প্রদর্শন ও কেনার সুযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২৪
এসআরএস