ফরিদপুর: ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হাইওয়ে এক্সপ্রেসওয়ের ওপর দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের তারাইল হাজী ইরফান উদ্দিন পেট্রল পাম্পের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষ চলাকালে হাইওয়ে এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক আধা ঘণ্টা বন্ধ থাকায় কয়েক কিলোমিটার জুড়ে কয়েকশ যানবাহন আটকা পড়ে। প্রাথমিকভাবে আহতদের নামঠিকানা জানা সম্ভব হয়নি।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তারাইল ঈশ্বরদী গ্রামের মোখলেসুর রহমান সুমন মাতুব্বরের সঙ্গে একই গ্রামের ফারুক তালুকদার ও সাইদুল শিকদারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। এই দুপক্ষের সঙ্গে আগেও কয়েক দফা হামলা, মামলা ও সংঘর্ষ হয়েছে। এর সূত্র ধরে সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে তারা ঈশ্বরদী গ্রামের আতাহার চৌধুরীর স্ত্রীর মৃত্যুবরণ করলে সেখানে সুমনের লোকজন জানাজার জন্য সেখানে উপস্থিত হয়। তখন ফারুক ও সাইদুলের লোকজন সুমনের দলের রাজিব মাতুব্বরকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে ফেলে।
এ সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে মঙ্গলবার দুপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ঢাল, সরকি, রামদা ও ইট-পাটকেল নিয়ে হাইওয়ে এক্সপ্রেসের ওপর সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। সংঘর্ষ চলাকালে সুমন মাতুব্বরের হাজী ইরফান উদ্দিন ফিলিং স্টেশন নামে একটি পেট্রল পাম্প, পাঁচটি মোটরসাইকেল, দুটি দোকানে হামলা ও ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। এ সময় হামলাকারীরা পেট্রল পাম্প থেকে কয়েক লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ পেট্রল পাম্প মালিকের। খবর পেয়ে ভাঙ্গার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে এবং যান চলাচল স্বাভাবিক করেন। ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে পেট্রল পাম্পের মালিক মোকলেসুর রহমান সুমন বলেন, আমি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কাজী জাফরউল্লার নৌকা মার্কার নির্বাচন করেছি এবং আগামী উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করব। আমাদের তারাইল ঈশ্বরদী গ্রামের ফারুক ও সাইদুলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। আমার সম্মান নষ্ট ও ক্ষতি করার জন্য আমার লোকজনকে ধরে নিয়ে পা ভেঙে দিয়েছে। কয়েকজনকে মারধরও করেছে। আমার পেট্রল পাম্পটি ব্যাপক ভাঙচুর করেছে, পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। পেট্রল পাম্প থেকে কয়েক লাখ টাকা ফারুকের লোকজন নিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে ফারুক তালুকদার বলেন, সুমনের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। আমাদের লোকজন পেলেই সুমনের লোকজন মারধর করে। আজকে আমার একজন লোককে আঘাত করার কারণে মারামারি ও সংঘর্ষ হয়েছে।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনির হোসেন জানান, সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন লোক আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন আল-রশিদ বলেন, সংবাদ পেয়ে পুলিশের ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৪
এসআরএস