গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় হিজলবাড়ী বিনয় কৃষ্ণ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাসসহ ৫ শিক্ষক কর্মচারীকে মারধরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
এ ছাড়াও বিক্ষোভকারীরা প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাসের ওপর হামলাকারীদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষার্থীরা স্কুল থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি বিদ্যালয়টির মাঠ থেকে শুরু হয়ে কালিগঞ্জ বাজারসহ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় স্কুলের মাঠে এসে শেষ হয়। পরে হামলাকারীদের বাড়িঘরে ভাঙচুর চালায়।
খবর পেয়ে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে একই ঘটনায় স্থানীয় কালীগঞ্জ বাজারে কোটালীপাড়া উপজেলার সর্বস্তরের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীর ব্যানারে একটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
এ সময় শিক্ষক সরওয়ার হোসেন তালুকদার, নন্দ লাল বিশ্বাস, জগদীগ চন্দ্র হালদার, হাবিবুর রহমান মুকুল, নাসির উদ্দিন, রঞ্জন হাজরা, তাপস বাড়ৈ, শিক্ষার্থী বিউটি সমাদ্দার, মানিক রায় বক্তব্য রাখেন। বক্তারা প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাসের ওপর হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করেন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার বিনয় কৃষ্ণ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র পিতাশ হালদার স্কুল ড্রেস না পড়ে বিদ্যালয়ে এলে প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস তাকে শাসন করেন। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে পিতাশ হালদার বাড়িতে চলে যায়। বিদ্যালয় ছুটির পরে বাড়ি ফেরার পথে ছাত্র পিতাশ ও তার বাবা পঙ্কশ হালদার লোকজন নিয়ে প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাসের ওপর হামলা চালায়। এ সময় বিদ্যালয়টির শিক্ষক কর্মচারীরা এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা তাদেরও মারধর করে।
এদের মধ্যে গুরুতর আহত প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস, শিক্ষক উত্তম অধিকারী, ল্যাব অপারেটর সুদেপ অধিকারী, কর্মচারী জয় সেন ও বুলেট দত্তকে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।
বিদ্যালয়টির বাংলা বিষয়ের শিক্ষক স্বপন রায় বলেন, একজন প্রধান শিক্ষক ছাত্রকে শাসন করার কারণে এভাবে মারধরের শিকার হলেন। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সঙ্গে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
এ বিষয়ে ছাত্র পিতাশ হালদারের পিতা পঙ্কশ হালদার বলেন, প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলার পরে আমরা শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলাম। তারপরেও আজ বুধবার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী মিলে আমার ও আমার ভাইদের ৪টি বসতঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে। এ ঘটনায় আমি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফিরোজ আলম বলেন, এলাকার পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আমি কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিম উদ্দিন বলেন, মঙ্গলবারের বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাসসহ অন্যান্য আহতদের শারীরিক খোঁজ-খবর নিয়েছি। এটি সত্যিই খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পঙ্কশ হালদারের বসতঘরে যারা হামলা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪
আরএ