ঢাকা, শনিবার, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সাবেক অধিনায়ক পাইলটের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ, যা বললেন তিনি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২৪
সাবেক অধিনায়ক পাইলটের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ, যা বললেন তিনি

রাজশাহী: জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলটের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে।  

আজ বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকালে রাজশাহী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন ওই জমির সাবেক মালিক দাবিকারী জাহাঙ্গীর আলম নামের এক ব্যক্তি।

পরে বিকেলে একইস্থানে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন খালেদ মাসুদ পাইলট।  

সাবেক এই তারকা ক্রিকেটারের দাবি, জমি দখলের অভিযোগটি মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এমন অভিযোগ করা হয়েছে। কারণ, একটি পক্ষ চায় না তিনি ক্রিকেট বোর্ডে আসুন।  

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রিশিকুল ইউনিয়নের চক নারায়নপুর গ্রামে প্রায় ২ বিঘা জমি দখল করেছেন খালেদ মাসুদ পাইলট। জমির সাবেক মালিক ও ক্রয় সূত্রে মালিক দাবি করা আরেক ব্যক্তি এমন অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ওই এলাকায় এক দাগে ১১ দশমিক ২৬৭৮ একর সম্পত্তি ছিল আমাদের। ওই জমি থেকে দশমিক ৬৬৯৪ একর (আংশিক) সম্পত্তি ২০২৩ সালে নাসরিন সুলতানা নামে এক নারী কেনেন। এর কয়েকদিন পর তিনি তার জমির কেনা অংশ বুঝে নিতে যান। কিন্তু তার আগেই ক্রিকেটার খালেদ মাসুদ পাইলট জমিটি দখল করে নেন। শুধু তাই নয়; ওই জমির দুইজন বর্গাচাষিকেও গ্রেপ্তার করানো হয়। জমি নিয়ে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান করতে চাইলে তিনি মোবাইলফোনে জাহাঙ্গীর আলমকে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, রাজশাহী সিটি মেয়র, র‌্যাব ও পুলিশ দিয়ে তুলে নিয়ে আসার ভয়ভীতি দেখান।  

এই সংক্রান্ত একটি দীর্ঘ ফোনালাপ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন অভিযোগকারী।

সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে নাসরিন সুলতানার ভাই শাহনুর ইসলাম মুকুলও উপস্থিত ছিলেন।  

তার দাবি, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাট পৌরসভায় ক্রিকেটার খালেদ মাসুদ পাইলটের নিজস্ব খামারবাড়ি আছে। সেই খামারবাড়ি সংলগ্ন এই জমিটি তিনি অনৈতিকভাবে দখল করে রেখেছেন। জমির ওই অংশটি দখলমুক্ত করার জন্য তার (পাইলট) সহায়তা চাওয়া হচ্ছে। কিন্তু তিনি সাড়া দিচ্ছেন না। তাই তারা প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করছেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে একইস্থানে সংবাদ সম্মেলন করেন খালেদ মাসুদ পাইলট। এ সময় তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট বিশ্বজিৎও উপস্থিত ছিলেন।

তার বিরুদ্ধে আনা জমি দখলের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেন পাইলট বলেন, সামাজিকভাবে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এমন অভিযোগ করা হয়েছে। কারণ, একটি পক্ষ চায় না আমি ক্রিকেট বোর্ডে আসি।

জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক বলেন, আমি বৈধভাবেই গত বছরের মে মাসে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ফাদিলপুর মৌজায় (খতিয়ান নং-৪৩১, দাম নম্বর : ১১৮, ১২৫,১ ও ১২২) ৬৬ শতাংশ জমি কিনেছি। ওই বছরেই আমার নামে এটি নামজারিও হয়। এরপরও আমার বিরুদ্ধে জমি দখলের এমন মিথ্যা নাটক সাজানো হয়েছে। এর মাধ্যমে আমাকে দেশবাসীর কাছে হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যেটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এতে আমি অবাক হয়েছি।

ফোনো ভয়ভীতি প্রদর্শনের বিষয়ে পাইলট পাল্টা দাবি করেন, জাহাঙ্গীর আলমই তাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়েছেন।  

পাইলট বলেন, জাহাঙ্গীর আলম ওই এলাকার একজন ভয়ংকর মানুষ; সে কথা কমবেশি সবাই জানে। তাই জাহাঙ্গীর আলম যখন তাকে ভয়ভীতি দেখিয়েছেন তখন তার পরিচিতজনদের কথাও জাহাঙ্গীরকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন পাইলট।  

তিনি জানান, তিনি ওই এলাকায় থাকেন না। থাকেন রাজশাহী শহরে। অন্যায়ভাবে তাকে গালিগালাজ করা হয়েছে। আর স্বভাবতই যখন কেউ তাকে গালিগালাজ করবে তখন তার খারাপ লাগবেই।  

সংবাদ সম্মেলনে খালেদ মাসুদ পাইলট আরও বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে আমার কল রেকর্ড সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা ছিল আংশিক। আমি যা বলেছি তার আগের এবং পরের কথোপকথনগুলো এডিট করে উপস্থাপন করা হয়েছে। মূলত আমাকে হেয় করতেই এমনটি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বিসিবিতে আমার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। যাতে আমি বিসিবিতে যেতে না পারি সেজন্য পরিকল্পিতভাবে এমন জমি দখলের মিথ্যা নাটক করা হয়েছে। তবে আমি কখনও কোন দল করিনি। আমি জাতীয় দলের ক্রিকেটার ছিলাম। আমার এলাকার মেয়র কিংবা প্রশাসনের লোকজনের সঙ্গে আমার সম্পর্ক থাকবে এটাই স্বাভাবিক। জনপ্রতিনিধি যখন যে দলের থাকবে তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো থাকবে। কেননা, ব্যক্তি নয় বরং চেয়ারটার সঙ্গে আমার সম্পর্ক। ’

বাংলাদেশ সময়:২১৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২৪
এসএস/এসএএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।