ঢাকা: বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। এরই অংশ হিসেবে টিকিট জটিলতায় মালয়েশিয়া যেতে না পারা ১৮ হাজার শ্রমিককে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সফররত মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিন্টালে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে এ কথা জানান মুহাম্মদ ইউনূস ও আনোয়ার ইব্রাহিম।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব কর্মী মালয়েশিয়ায় ঝামেলায় পড়েছেন, প্রথম দফায় ১৮ হাজার ব্যক্তিকে সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছি। বাংলাদেশে যেসব মালয়েশিয়ান প্রতিষ্ঠান কাজ করছে তাদেরও সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছি।
বাংলাদেশের রেমিট্যান্সের অন্যতম বড় ক্ষেত্র মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার ২০০৯ সালে প্রথম দফায় বন্ধ হয়েছিল। এরপর ২০১৬ সালের শেষে চালু হয় শ্রমবাজারটি। পরে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে আবারও তা বন্ধ হয়ে যায়। ২০২২ সালে শ্রমবাজারটি আবার চালু হয়।
এই শ্রমবাজারে গত মে মাস পর্যন্ত প্রচুর সংখ্যক বাংলাদেশি কর্মী যান। যাওয়ার কথা ছিল আরও প্রায় ১৮ হাজারের। কিন্তু তারা মালয়েশিয়া সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা ৩১ মের মধ্যে উড়োজাহাজের টিকিট ও নিয়োগকর্তা থেকে প্রয়োজনীয় নথি নিতে ব্যর্থ হন। কিন্তু এদেশীয় এজেন্সি তাদের সেখানে পাঠাবে বলে নির্ধারিত অংকের চেয়েও অনেক বেশি টাকা হাতিয়ে নেয়।
মালয়েশিয়ার উড়োজাহাজের টিকিট না পেয়ে ৩১ মে অনেক শ্রমিক বিমানবন্দরে পর্যন্ত ভিড় করেছিলেন। কিন্তু তারা যেতে পারেননি। এ নিয়ে সেসময় ব্যাপক আলোচনার ঝড় ওঠে। একটি সিন্ডিকেটের কারণে ওই শ্রমিকদের ভাগ্য পোড়ে বলে অভিযোগ ওঠে। ওই সিন্ডিকেটে জড়িত হিসেবে সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের স্ত্রী কাশমেরী কামাল, মেয়ে নাফিসা কামাল, ফেনী-২ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী-৩ আসনের সংসদ সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদউদ্দিন চৌধুরী ও ঢাকা-২০ আসনের সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদের নাম উঠে আসে।
যৌথ বিবৃতিতে আনোয়ার ইব্রাহিম আরও বলেন, আমাদের দেশে আরও জনশক্তি প্রয়োজন, তবে উভয় দেশের মধ্যে শ্রম অভিবাসন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা থাকতে হবে। এছাড়া সেমি-কন্ডাক্টর, ডেটা সেন্টার, এআই, নিউ টেকনলোজির বিষয়ে যৌথভাবে কাজ করার বিষয়ে সম্মত হয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, মালয়েশিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই।
তিনি বলেন, বৈঠকে রাজনৈতিক, মানবিক, বাণিজ্যিক দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মালয়েশিয়ার সঙ্গে জনশক্তি রপ্তানির বিষয়ে কথা বলেছি।
দেশটিতে যেসব কর্মী আছেন তারা কাজ করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, তারা আধুনিক দাস নয়। এই বিষয়ে আমরা পরিষ্কার ধারণা রাখি। তবে বিদেশি অনেক শ্রমিকের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল চার্জ রয়েছে। তাদের বিষয়টা ভিন্ন।
এই দুটো বিষয়কে এক না করার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন
আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে অধ্যাপক ইউনূসের একান্ত বৈঠক
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে চান আনোয়ার ইব্রাহিম-অধ্যাপক ইউনূস
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০২৪
এমইউএম/এইচএ/