ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ভাগ্নীকে নিয়ে ছবি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় খালার মৃত্যু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০২৪
ভাগ্নীকে নিয়ে ছবি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় খালার মৃত্যু

মাদারীপুর: ১১ মাস বয়সী ভাগ্নীকে কোলে নিয়ে রেললাইনের ওপর দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেল মিথিলা আক্তার (১৪) নামে এক মাদরাসাছাত্রীর।  

এসময় ১১ মাস বয়সী শিশু আয়শার হাত-পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

গুরুতর অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার পাঁচ্চর রেলসেতুতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।  

এদিকে মিথিলার মৃত্যুতে আহাজারি চলছে তার পরিবারে। নিহত মিথিলা উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের বাঁচামারা গ্রামের মোকশেদপুর বাজার এলাকার বিল্লাল সরদারের মেয়ে। সে স্থানীয় একটি মাদরাসায় পড়তো বলে জানা গেছে।  

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ্চর রেলসেতুর নিচেই ভগ্নিপতি ফলের দোকান। বিকেলে বড় বোন সুমাইয়া আক্তার নিজেদের ফলের দোকানে এলে বোন ও ভগ্নিপতি সঙ্গে দেখা করতে আসে মিথিলা। পরে ১১ মাস বয়সী ভাগ্নীকে কোলে নিয়ে রেললাইনে ওঠে সে। এসময় বোন, ৮ বছর বয়সী ভাগ্নে ও ভগ্নীপতি সুজনসহ সবাই রেললাইনের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। ভাগ্নীকে কোলে নিয়ে মিথিলা রেল লাইনের ওপর দাঁড়ালে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন চলে আসে। রেললাইন থেকে সরতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায় মিথিলার শরীর। কোলে থাকা ভাগ্নি হাত-পা বিচ্ছিন্ন হয়ে ছিটকে রেললাইনের পাশে পড়ে।

স্থানীয়রা জানান, রেললাইনের ওপর দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে গিয়েছিল মেয়েটি। হয়তো সে ভেবেছে ট্রেন কাছে আসার আগেই সরে যেতে পারবে। কিন্তু পারেনি! এসময় তার বোনসহ অন্যরা রেললাইনের পাশেই ছিল।

মেয়েটির পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, বিকেলে বোনের সঙ্গে দেখা করতে পাঁচ্চর যায় মিথিলা। সেখান থেকে ভাগ্নীকে নিয়ে রেললাইনে উঠে ছবি তুলতে গেলে জীবন গেল তার। ভাগ্নীর অবস্থাও ভালো না। ওর বড় বোনের স্বামীর বাড়ি সন্যাসীরচর ইউনিয়নের নাসিরের মোড় এলাকায়। ভগ্নীপতি পাঁচ্চর রেললাইনের নিচেই ফলের দোকান করেন। বিকেলে মিথিলা সেখানেই গেছিল।

নিহতের বড় বোন সুমাইয়া আক্তারের বরাত দিয়ে স্থানীয় মো. সরোয়ার হোসেন জানান, বোনের সঙ্গে দেখা করতে পাঁচ্চর আসে মিথিলা। পরে ভাগ্নীকে কোলে নিয়ে আদর করতে করতে রেললাইনে ওঠে। সেখানে ওর বোন, ভগ্নীপতি ও ভাগ্নে ছিল। সুমাইয়া বলেন,' মনে হইলো ট্রেন ওরে টাইনা নিয়া গেল! বিকট শব্দ হলো। মুহূর্তেই ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গেল আমার বইন! আমার বাচ্চার অবস্থাও ভালো না।

পাঁচ্চর রয়েল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা.সঞ্জীব কুমার রায় বলেন, বাচ্চাটির বয়স ১১ মাস হবে। বাচ্চাটির হাত-পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত ঢাকায় পাঠিয়ে দিয়েছি। শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোকতার হোসেন বলেন, খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। আমরা রেল পুলিশকে অবগত করেছি। রেল লাইনে জনসাধারণের অবাধ চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আসা উচিত। জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।