ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ভারতে কিশোরীর অনুপ্রবেশ, ইসকন ইস্যুতে ভারতীয় মিডিয়ায় মিথ্যাচার!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২৪
ভারতে কিশোরীর অনুপ্রবেশ, ইসকন ইস্যুতে ভারতীয় মিডিয়ায় মিথ্যাচার!

পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ের এক কিশোরী (১৫) গত মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে অবৈধপথে ভারতে প্রবেশের পর বিএসএফের হাতে আটক হয়েছে। আর দেশে চলমান ইসকন ইস্যুকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করতে এবং দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে ভারতীয় মিডিয়া মিথ্যাচার করছে।

যার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে পঞ্চগড় জেলা পুলিশ।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সি।

এসময় পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সি বলেন, শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত একটি সংবাদের ভিডিও আমাদের হাতে আসে। ভিডিওতে দেখা যায়, ওই কিশোরী কোনো বক্তব্য না দিলেও ভারতে তার দূর সম্পর্কের এক আত্মীয় গণমাধ্যমকে বক্তব্য দিয়েছেন। এরপরই আমরা তদন্ত গিয়ে দেখি, ভারতের গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদটি মিথ্যা।

তিনি আরও বলেন, পরিবারটি আমাদের নিশ্চিত করেছে, গত কয়েকদিন আগে আটোয়ারীতে মামার বাড়িতে যায় ওই কিশোরী। এরপর কাউকে না জানিয়ে এবং ভিসার আবেদন করার পরও ভিসা না পাওয়ায় কোনো এক মাধ্যমে ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ করে সে। এরপরেই ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে আটক হয় মেয়েটি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। একই সঙ্গে ভারতের মিডিয়া অপ্রচার চালিয়ে গুজব ছড়িয়ে সম্প্রদায়িক সহিংসতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।  

এদিকে সকালে মেয়েকে ফিরে পেতে পুলিশের সহায়তা চাইতে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে যান কিশোরীর বাবা-মা।

এর আগে গত মঙ্গলবার ভারতের উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপরা ব্লকের ফতেপুর সীমান্ত এলাকায় আটক হয় ওই কিশোরী। আটক হওয়ার পর ইসকন ইস্যুকে টার্গেট করে একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে। সংবাদে মেয়েটির নাম বলা হয় অর্পিতা। বর্তমানে কিশোরীটি ভারতের সেইফ হোমে রয়েছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, ওই কিশোরী প্রিয়ন্তী রায় প্রমির বাড়ি পঞ্চগড় পৌরসভার উত্তর জালাশী এলাকায়। সে পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

এ বিষয়ে কিশোরীর মা অনুরাধা রানী রায় ও বাবা জয়দেব চন্দ্র রায় বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের মেয়ে প্রমি সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বাড়িতেই ছিল। এরপর সে তার মামার বাড়ি আটোয়ারী যায়। আমাদের না বলে কোনো এক ভাবে ভারতে গিয়েছে। সেখানে আটক হওয়ার পর ভারতের গণমাধ্যমে যে নিউজ প্রচার হয়েছে, সেটি মিথ্যা। যে অভিযোগ করা হচ্ছে, আমরা ইসকন ও সনাতনী হওয়ায় আমাদের ওপর হামলা হচ্ছে, তা মিথ্যা। কারণ আমার মেয়ে ভিডিওতে কোনো বক্তব্য দেয়নি। বাংলাদেশে আমাদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে বলে ভারতের মিডিয়ায় যা প্রচার করা হচ্ছে, তা মিথ্যা। আমরা এ ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আমাদের মেয়েকে ফেরত পেতে প্রশাসনের সহায়তা কামনা করছি।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মধুসুদন রনিক বণিক বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সব ধর্মের মানুষ সম্প্রীতি বজায় রেখে বসবাস করছি। এখনও তেমন কোনো ঘটনা পঞ্চগড়ে ঘটেনি। ভারতীয় সংবাদে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, আমার জানা মতে তা মিথ্যা। পঞ্চগড়ে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২৪
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।