ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে তার অত্যাচারের কারণে: সারজিস আলম

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪
হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে তার অত্যাচারের কারণে: সারজিস আলম

নীলফামারী: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে তার অত্যাচারের কারণে। এমন লজ্জাজনক পতন বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো প্রধানমন্ত্রী কিংবা সরকারপ্রধানের হয়নি।

আগামীতেও এমন ঘটনার অবতারণা বাংলাদেশের মাটিতে হবে না।  


তিনি বলেন, এতোদিন মহান বিজয় দিবস ছিল আওয়ামী লীগের বিজয় দিবস। বিজয় দিবসে শুধুমাত্র দুটি গান বাজতো, যা আপনারা সবাই জানেন। বিজয় দিবস, স্বাধীনতা, সংবিধান ও রাষ্ট্র কারো কোনো একক দল, ব্যক্তি কিংবা পরিবারের হতে পারে না। কিন্তু ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার এসব নিজের পারিবারিক সম্পদ মনে করেছিল। গত ১৬ বছরে আমরা কেউ এসবের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারিনি। যারাই এসবের বিপক্ষে কথা বলেছেন তাদের গুম, খুন ও হত্যা করা হয়েছে। এমন কি মামলা, হামলা ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।

তিনি মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে নীলফামারীর সৈয়দপুরে মহান বিজয় দিবস ও জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভা ও চিত্রাঙ্কন, কবিতা আবৃত্তি ও রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।  

শহরের বিমানবন্দর সড়কের অফিসার্স কলোনি ফাইভ স্টার মাঠে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সৈয়দপুরের উদ্যোগে এ মতবিনিময় সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।  

এতে অনেকের মধ্যে বক্তব্য দেন সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুর-ই-আলম সিদ্দিকী, বিএনপি সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ মো. আব্দুল গফুর সরকার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক মো. রেদোয়ান ইসলাম।  

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সৈয়দপুরের সদস্য জাবেদ আত্তারীর সভাপতিত্বে এসময় মঞ্চে সৈয়দপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আমিনুল ইসলাম, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সৈয়দপুরের নিহত সাজ্জাদ হোসেনের বাবা মাওলানা মো. আলমগীর হোসেন, জামায়াতে ইসলামী সৈয়দপুর পৌর শাখার আমির মো. শরফুদ্দিন খানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

গত ১৫ ডিসেম্বর গুম কমিশনের একটি রিপোর্ট এসেছে, সেখানে বলা হয়েছে যারা খুনি হাসিনা রেজিমের বিরোধিতা করেছেন, তাদের তাদের গুম করা হয়েছে। টর্চার সেলে নিয়ে নির্যাতনের মাধ্যমে খুন করা হতো। তারপর যখন ট্রেন আসে, তখন নির্জন জায়গায় নিয়ে রেললাইনের ওপর দেহ রেখে দেহ ছিন্নবিচ্ছিন্ন করা হতো। পরে সেটিকে দুর্ঘটনা হিসেবে দেখানো হতো। এমন অসংখ্য মানুষকে নির্যাতনের ঘটনা ওই রিপোর্টে উঠে এসেছে, যোগ করেন সারজিস।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব কেড়ে নিতে ভারত গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের দোসর আওয়ামী লীগকে পুনরায় ক্ষমতায় বসাতে উঠে পড়ে লেগেছে। তাই দেশের জনগণ এক বিন্দু রক্ত থাকতে ভারতের সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে যাবে। আগামী দিনে আমাদের লড়াই হবে কঠিন ও দীর্ঘ সময়ের। ভারতের তাবেদারি বাংলাদেশের জনগণ করে না এবং আগামীতেও করবে না।

সৈয়দপুর শহরে বসবাসরত উর্দুভাষীরা (বিহারী) দুর্দশাগ্রস্তভাবে জীবনযাপন করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের আবাসন সমস্যাসহ সব সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনে সব উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলব।

অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা, বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪
এসআই


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।