ঢাকা: সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ৭ নম্বর ভবনে কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এসময় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাহিরে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনের সবগুলো প্রবেশপথে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা বলছেন, উপর থেকে নির্দেশ আছে এখন কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না।
ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মী গণমাধ্যমকে বলেন, এ ভবনের ৬ থেকে ৯ তলা অবধি আগুন লেগেছে। এ আগুনে ভিতরে আর কিছু নেই। পুরো ফ্লোরগুলোর এপার থেকে ওপার সবখানেই আগুন। এ আগুন নেভাতে গিয়ে আমাদের অনেকেই আহত হয়েছে৷ প্রথমে সচিবালয়ের ফায়ার সার্ভিসের ডেডিকেটেড টিম আগুন লাগানোর জন্য কাজ শুরু করে৷ পরে আমরা সিদ্দিক বাজারের টিম আসি৷ তবে সচিবালয়ে ফায়ার সার্ভিসের বড় গাড়িগুলো প্রবেশে সমস্যা হয়েছে।
এর আগে বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ১টা ৫২ মিনিটে সচিবালয়ে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। সচিবালয়ে অবস্থিত ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটটি আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করে রাত ১টা ৫৪ মিনিট থেকে। আগুনের তীব্রতা বেড়ে গেলে একে একে ১৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। শুরুতে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য ৮টি ইউনিট কাজ করলেও পরে আরও ১১টি ইউনিট যুক্ত হয়।
সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনের ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম তলায় ছড়িয়ে পড়ে আগুন। তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ বা ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।
তবে ৭ নম্বর ভবনে থাকা নথিপত্র পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল এ তথ্য দেন।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী— সচিবালয়ের সাত নম্বর ভবনে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়; যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়; ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়; ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ; শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়; অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ রয়েছে।
এরপর এক ব্রিফিং এ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগুন লাগে ষষ্ঠতলায়। আমাদের ফায়ার সার্ভিসে রাত ১টা ৫২ মিনিটে খবর দেওয়া হয়, তারা ১টা ৫৪ মিনিটে কাজ শুরু করে। সকাল আটটা পাঁচ মিনিটে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে। এই ঘটনায় আমাদের ফায়ার ফাইটারের একজন শাহাদাত বরণ করেছেন। তিনি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। তিনি একটি পাইপ নিয়ে সচিবালয় থেকে বের হয়েছিলেন। এ সময় একটা ট্রাক তাকে ধাক্কা দিয়ে তাকে আহত করেন। পরে তিনি মারা যান। তার সঙ্গে আরো দুই থেকে তিনজন আহত হয়েছেন। তারা সবাই সুস্থ আছেন।
এদিকে, আগুন নেভানোর সময় ট্রাকচাপায় আহত হওয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত ফায়ার ফাইটারের নাম মো. সোহানুজ্জামান নয়ন। তিনি তেজগাঁও ফায়ার টিমের স্পেশাল ব্রাঞ্চের সদস্য। তার বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুরে। তিনি দুই বছর ধরে ফায়ার সার্ভিসে কর্মরত রয়েছেন। এছাড়া আগুন নেভানোর সময় আরেক ফায়ার কর্মী পা কেটে আঘাতপ্রাপ্ত হন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২৪
জিসিজি/এমএম