সদরঘাট ঘুরে: যুদ্ধজাহাজ নিয়ে সাধারণ মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই। দেখতে কেমন আর কীভাবেইবা এ জাহাজ দিয়ে যুদ্ধ করা হয়।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সাধারণ মানুষের সেই কৌতুহল মেটাতে শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) সদরঘাটে নৌ-বাহিনীর যুদ্ধজাহাজ বিএনএস সুরমা দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উন্মুক্ত রাখা হয়।
বিকেলে সেই যুদ্ধজাহাজটি দেখতে উৎসুক জনতার ঢল নামে। ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে সদরঘাটে জাহাজটি দেখতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী জসিম উদ্দিন। যুদ্ধজাহাজটিতে কী দেখলেন? জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ছেলে আমার বড় হয়ে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। সকালে জানতে পারলাম নৌ-বাহিনীর যুদ্ধজাহাজ বিকেলে সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তাই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে এসেছি জাহাজটি দেখাতে।
তিনি আরো বলেন, নৌ-বাহিনীর সদস্যরা অনেক ভালো। যুদ্ধ জাহাজটির বিভিন্ন সরঞ্জাম সম্পর্কে তাদের কাছে জানতে চেয়েছি। তারাও হাসি মুখে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। কোনোটা না বুঝলে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেছেন।
যুদ্ধজাহাজটি দেখতে এসেছেন রাসেল সরকার। তিনি বুয়েটের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, লেখাপড়া করছি ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে। তাই চলে এলাম যুদ্ধ জাহাজটি দেখতে।
জাহাজটির পেছনে একটি চ্যানেল মাইন রয়েছে, এটি সম্পর্কে নৌ বাহিনীর সদস্য হাফিজের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো জাহাজকে আঘাত করতে এটি ব্যবহার করা হয়। পানির নিচে থেকে এটি ব্যবহার করা হয়। যখন একটি চ্যানেল দিয়ে অন্য একটি জাহাজ আক্রমণ করতে এগিয়ে আসে তখন এই মাইনটি পানির নিচে ছেড়ে দেওয়া হয়। আর যখন এই মাইনটির উপর দিয়ে কোনো ধরনের জাহাজ যায় তখন এর ম্যাগনেট কাজ শুরু করে এবং সেই জাহাজটিকে আক্রমণ করা বা ধ্বংস করা যায়।
জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৫০.৫ মিটার, প্রস্থ ৭.৫ মিটার। এর মধ্যে সামনে দু’টি ও পেছনে ৪টিসহ মোট ছয়টি মরণাস্ত্র রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম চায়না মরণাস্ত্র। এটি দীর্ঘ ৮ কিলোমিটার দূর থেকে আক্রমণ করতে পারে এবং মিনিটে ১৬০-১৮০ রাউন্ড গুলি বের হয়। আর এক সঙ্গে গুলি রিজার্ভ থাকে ১০-১২ রাউন্ড। আর এ গানটি চালাতে প্রয়োজন হয় ৮জন সদস্য।
তিনি আরো বলেন, এছাড়া যুদ্ধ জাহাজটিতে ‘লাইফ রিপ’ নামে ৫টি বোটও রয়েছে। যার প্রত্যেকটিতে ২৫ জন করে পানিতে ভেসে থাকতে পারবেন। শুধু তাই নয়, প্রত্যেকটি রিপে সাতদিনের শুকনা খাবারও মজুদ আছে।
এছাড়া জাহাজটির উপরে রয়েছে সংকেত সম্বলীত বিভিন্ন ধরনের পতাকা। যে পতাকার মাধ্যমে যুদ্ধ জাহাজটিতে কোনো ধরনের সমস্যা হলে অন্য যেকোনো জাহাজ তাকে সাহায্য করতে পারে। শুধু তাই নয়, এই পতাকার মাধ্যমে যেকোনো জাহাজ যেকোনো ধরনের সমস্যায় পড়লে সেটা খুব সহজে বোঝা যায়।
এই যুদ্ধ জাহাজটি ২০১৩ সালে তৈরি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৬
এসজে/এসএইচ