সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরায় ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণের পাঁচদিন পর গৌতম সরকার নামে এক যুবকের (২১) মরদেহ পাওয়া গেছে।
শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে সদর উপজেলার ঘোনা ইউনিয়নের মহাদেবনগর গ্রামে গৌতমের বাড়ির পাশের পুকুরে তার মরদেহ পাওয়া যায়।
নিহত গৌতম স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য গণেশ মণ্ডলের ছেলে। তিনি সীমান্ত আদর্শ কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম জানান, সকালে স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এদিকে, সকালে উত্তেজিত জনতা অপহরণকারী হিসেবে সন্দেহভাজন নুর ইসলাম ও রেজাউল শেখের বাড়িতে আগুন দিয়েছে।
নিহত যুবকের বাবা বলেন, ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় গৌতম ও তার বন্ধুরা বাড়ির পাশে মহাদেবনগর মোড়ে আমিন মিস্ত্রির দোকানে বসে টেলিভিশনে ফুটবল খেলা দেখছিল। এসময় কারো ফোন কল পেয়ে সে সেখান থেকে চলে যায়। এরপর গৌতমের মোবাইল ফোন বন্ধ পাই। রাতে তার মোবাইল ফোন থেকে কল করে আমাকে বলা হয়, তোর ছেলেকে পেতে চাইলে ১০ লাখ টাকা নিয়ে চলে আয়। তবে পুলিশ বা অন্য কাউকে জানালেই তোর বিপদ হবে।
তিনি আরো বলেন, বিষয়টি আমি ঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান ও সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) জানিয়ে তাদের সহায়তা চাই। পরে ১৪ ডিসেম্বর গভীররাতে আমি সদর থানার এসআই আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে অপহরণকারীদের কথা মতো গ্রামেরই একটি স্থানে কয়েক লাখ টাকা নিয়ে যাই। এসময় সঙ্গে লোক থাকার বিষয়টি টের পেয়ে অপহরণকারীরা আমাকে ফোন করে টাকা নিয়ে ওই স্থান থেকে চলে যেতে বলে এবং পরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে বলে।
এদিক, আমার সঙ্গী এসআই একটু দূরে আড়াল হলে সেখানে তিন যুবক হাজির হন। এ সময় পুলিশ গ্রামবাসীর সহায়তায় ছয়টি মোবাইল ফোনসহ তাদের আটক করে, যোগ করেন গণেশ।
আটক তিনজনের মধ্যে ভাড়ুখালি গ্রামের করিম মোড়লের ছেলে শাহাদাত মোড়ল মোবাইল ফোনে গণেশের সঙ্গে ছেলের অপহরণ বিষয়ক কথা বলেছিলেন বলে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন।
এরপর শনিবার সকালে (১৭ ডিসেম্বর) বাড়ির পাশের পুকুরে অপহৃত গৌতমের মরদেহ পাওয়া যায়।
সাতক্ষীরা সদর থানার এসআই আবুল কালাম বাংলানিউজকে জানান, এ ঘটনায় মহাদেবনগরের নুর ইসলাম, রেজাউল শেখ, আলিম, শাওন ও মনিরুল ইসলাম নামে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৬/আপডেট: ১২৫৭
এসআই