ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকার আশুলিয়া পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে শ্রমিক আন্দোলনের কারণ কী তা খতিয়ে দেখতে ও আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় তিনি এ নির্দেশ দেন। সচিবালয়ে দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এসব কথা জানা গেছে।
ঢাকার আশুলিয়ার পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা গত এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলনে নেমেছে। ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর পাশাপাশি নানা অজুহাত দিয়ে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, কোনো কারণে কোনো শ্রমিক ছাঁটাই হলে নিয়ম অনুযায়ী তাকে প্রাপ্য পরিশোধ করা এবং ছুটিকালীন বেতন বহাল রাখার দাবিতে শ্রমিকেরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আশুলিয়ার উইন্ডি গ্রুপের শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন। এই আন্দোলনের সমর্থনে রোববার (১৮ ডিসেম্বর) পর্যন্ত ২২টি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানা গেছে।
এই শ্রমিক আন্দোলনের বিষয়টি বৈঠকের অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় উঠলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনের কারণ খতিয়ে দেখতে এবং আন্দোলন নিয়ন্ত্রণের দির্দেশ দেন।
সুত্র জানায়, বৈঠকে আশুলিয়ার এই শ্রমিক আন্দোলনের বিষয়টি তোলেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। এরপর বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা বলেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি উদ্যোগ নিয়ে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়িয়ে দিয়েছি। সে সময় শ্রমিকদের যে পরিমাণ বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়েছে সেটা মেনে নিতে মালিকরা রাজি ছিলো না। এই বেতন-ভাতা দিতে মালিকরা রাজি হতে চাননি, আমি তাদের বলে রাজি করিয়েছিলাম। এখন আবার শ্রমিকদের কিসের আন্দোলন? তাহলে বেতন-ভাতা যেটা বাড়ানো হয়েছে তা আবার কমিয়ে দেই?
সূত্র আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী এ সময় এই আন্দোলনের কারণ কী তা খতিয়ে দেখতে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও শ্রম কল্যাণ মন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নকে নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীদের উদ্দেশে বলেন, এই আন্দোলনের কারণ কী? এই সময় আবার শ্রমিকরা কেন আন্দোলন কারছে? এর পেছনে কোনো ইন্ধন আছে কিনা খোঁজ নিয়ে দেখেন। এই ডিসেম্বর মাসে কেন শ্রমিকরা আবার আন্দোলন করছে, এর পেছনে কারা আছে খোঁজ-খবর নিয়ে বের করেন। এটা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে যাতে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি না হয়।
অপর একটি সূত্র জানায়, বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও শ্রম কল্যাণমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে সচিবালয়ে তার দপ্তরে আবারও আলোচনা করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৬
এসকে/এমজেএফ