খণ্ডকালীন সম্পর্কে তিনি বলেন, এক মাসের জন্য ইগলু কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। কোম্পানির পক্ষ থেকে সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার ও বিকেলে চায়ের ব্যবস্থাও রয়েছে।
শুধু অনন্যা নয়, তার মতো অনেক শিক্ষার্থী খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ পেয়েছে ২১তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায়।
সোমবার (০২ জানুয়ারি) ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় গিয়ে দেখা যায়, মেলার প্রত্যেকটি প্যাভিলিয়ন ও স্টলে খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ পেয়েছে শিক্ষার্থীরা।
মেলার একটি প্যাভিলিয়নে কর্মরত ডেফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো.ইমরান হোসেন। তিনি কাজ করছেন টেক্সট মার্ট ফ্যাশনে।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন শিক্ষার্থী খণ্ডকালীন চাকরি করছেন। যাদের কোম্পানি থেকে দেওয়া হচ্ছে- দুপুরের খাবার, ট্রান্সপোর্ট সুবিধা ও দিনপ্রতি ৩৫০ টাকা। এছাড়া ভালো পারফর্ম দেখাতে পারলে স্থায়ীভাবে চাকরির সুযোগও রয়েছে। এছাড়া মেলায় কাজ করতে পারা অনেকটা ভাগ্যের বলছেন তিনি। কেননা এখন প্রতিনিয়ত নিজেকে নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়। আর আন্তর্জাতিক মানের একটি মেলায় কাজের সুযোগ অনেকাংশে ক্যারিয়ারের জন্য মঙ্গলজনক বলেই দেখছেন এই শিক্ষার্থী।
অন্যদিকে, একই প্যাভিলিয়নের কেজেড জুয়েলারি স্টলে খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ পাওয়া ইউরোপিয়ান ইউনিভারসিটির বিবিএ’র শিক্ষার্থী তারিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এটা তার জন্য অনেক বড় একটি চ্যালেঞ্জ। কেননা মেলায় বিভিন্ন ধরনের মানুষের আনাগোনা হবে। যেখানে তাদের সঙ্গে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে কথা বলতে হবে ও তাদের পণ্যটি কিনতে উদ্ধুদ্ধ করতে হবে। এ বেশ কঠিন। কিন্তু এই কাজই তাকে সফলতা পেতে সাহায্য করবে। এছাড়া মেলায় ১০ ঘণ্টা কাজের ফলে মিলছে ১৩ হাজার টাকা। সঙ্গে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা তো আছেই। তাই শুধু বাণিজ্য মেলা নয়, দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের খণ্ডকালীন চাকরির ফলে বেকারত্ব অনেকাংশে কমে আসবে বলেও জানান তিনি।
হাতিল ফার্নিচারের প্যাভিলিয়নে কর্মরত মো.আকাশ খান বাংলানিউজকে বলেন, এভাবে শিক্ষার্থীরা খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ পেলে অনেক শিক্ষার্থী বিপথে যেতে পারবে না। কেননা অর্থের অভাবে অনেক শিক্ষার্থী পড়ালেখা করতে পারে না। শিক্ষার্থীরা যদি খণ্ডকালীন বিভিন্ন কাজের সুযোগ পায়, তাহলে তারাও দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে।
খণ্ডকালীন শিক্ষার্থীদের চাকরির বিষয়ে হাতিল ফার্নিচারের হেড অব ম্যাকেটিং ফিরোজ আল মামুন বাংলানিউজকে বলেন, তারা এবার বাণিজ্য মেলায় মোট ২৫ জন শিক্ষার্থীকে চাকরির সুযোগ দিয়েছে। যাদের বেতন ১৮ হাজারের বেশি। এছাড়া শিক্ষার্থীরা যদি ভালো কাজ দেখাতে পারে, তাহলে তাদের স্থায়ীভাবে কাজের সুযোগ দেওয়া হবে।
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার সদস্য সচিব রেজাউল করীম বাংলানিউজকে বলেন, এবারের মেলায় মোট ৫৮০টি স্টল রয়েছে। যার প্রত্যেকটি স্টলে শিক্ষার্থীরা কাজের সুযোগ পেয়েছে। তবে, ধারণা করা হচ্ছে এবার প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্থী খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ পেয়েছে। খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীদের চাকরির অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে অনেক উপকার আসবে বলে তিনি মনে করেন।
এছাড়া এবারের বাণিজ্য মেলায় বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, চীন, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুর্কি, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ ২১টি দেশ অংশ নিচ্ছে এ মেলায়। এ বছর নতুন সাতটি দেশ মরিসাস, ঘানা, নেপাল, হংকং, জাপান, মরক্কো ও ভুটান মেলায় অংশ নিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৭
এসজে/পিসি