বুধবার (০৪ জানুয়ারি) গণভবনে থেকে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস বিরোধী ও উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে রংপুর বিভাগের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সকালে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে আমাদের মেয়েদের তুলে দিয়েছে- হত্যায় সহযোগিতা করেছে, তাদের হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়েছে বিএনপি।
তিনি আরও বলেন, ২১ বছর পর আমরা ক্ষমতায় এসে বিভিন্ন ভাতা চালু করেছি, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে খাদ্য নিরাপত্তাও নিশ্চিত করেছি। চিকিৎসা সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিক তৈরি করি। কিন্তু বিএনপি ফের ক্ষমতায় এসে সব বন্ধ করে দেয়। খাদ্য ঘাটতি আবার দেখা দেয়, স্বাক্ষরতার হার কমে যায়, বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আবার ক্ষমতায় এসে উন্নয়নের ঘোষণা দিই। এরপর আামদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, রংপুর বিভাগে এখন মঙ্গা নেই। আমরা চেয়েছি এখানকার মানুষ উন্নত জীবনযাপন করবে। এজন্য আমি প্রথম ইপিজেড প্রতিষ্ঠা করি। তখন বলা হতো কারা যাবে, কারা বিনিয়োগ করবে। এখন ঠিকই বিনিয়োগ হচ্ছে।
বিএনপি-জামায়াত জোটের তাণ্ডবের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যখন মানুষকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি, তখনই দেখেছি বিএনপি-জামায়াত জোটের তাণ্ডব। মানুষ হত্যা করা, পেট্রোল বোমা মারা।
নির্বাচনে বিএনপি আসেনি, সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। কিন্তু নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করা, নির্বাচন বন্ধ করার জন্য যে তাণ্ডব তারা করেছে, দেড় শ’র ওপর দোকানপাট ভেঙেছে, বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে, হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলেছে। নির্বাচন বন্ধ করতে আন্দোলনের নামে প্রিজাইডিং, রিটার্নিং অফিসার, পুলিশ, মানুষ হত্যা করা কোন ধরনের আন্দোলন আমি জানি না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একদিকে তিনি (খালেদা জিয়া) বসে বসে মানুষকে হত্যা করার নির্দেশ দিচ্ছেন, আর তার কুলাঙ্গার পুত্র মানি লন্ডারিং করে বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করছে।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, শিক্ষক, অভিভাবক, ইমাম, ওলামাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলার মাটিতে জঙ্গিবাদের স্থান যেন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।
এমপি লিটন হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সংসদ সদস্য জামায়াতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতো, তাদের হাত থেকে জনগণকে রক্ষা করতো। এজন্য তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। কিভাবে তারা সরকারি অফিস পুড়িয়েছে, পুলিশকে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলো এমপি লিটন। এভাবে জনপ্রতিনিধিকে হত্যা মেনে নেওয়া যায় না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যে ভাবেই হোক অপরাধীদের খুঁজে বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠিত থাকলে উন্নতি দ্রুত হয়।
ছিট মহল প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৬৮ বছরের ছিটমহল সমস্যা আমরা সমাধান করেছি। স্থল সীমানা চুক্তি- ভারতে পাস হতে সময় লেগেছে। অতীতে জিয়া, খালেদা আলোচনা করেনি ভারতের সঙ্গে। আমরা আসার পরে আলোচনা করেছি, ছিটমহল-স্থান বিনিময় নিয়ে। শান্তিপূর্ণভাবে যে ছিটমহল বিনিময় করা যায়, এটা পৃথিবীতে একটিই উদাহারণ। বাংলাদেশ সে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
তিনি আরও বলেন, পঞ্চগড়ে চা বাগান হবে চিন্তাও করেনি এলাকাবাসী। সেই চা এখন বিশ্ব দরবারে পৌঁছে গেছে। শিল্পায়ন হচ্ছে, কর্মসংস্থান বাড়ছে। উত্তরবঙ্গের মানুষ অবহেলিত ছিলো, আর যেন না থাকে।
দেশের অগ্রযাত্রা, উন্নয়ন যাতে অব্যাহত থাকে সেটাই আমাদের লক্ষ্য। বাংলার প্রতিটি ঘরে আমরা আলো জ্বালতে সক্ষম হবো বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে বেলা ১১টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) দু’টি স্থাপনার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে একটি হলো ড. ওয়াজেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউট ও অন্যটি মেয়েদের জন্য অত্যাধুনিক শেখ হাসিনা হল।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৬/আপডেটেড ১৩৪৩
এমইউএম/এটি/এসএইচ
**শিক্ষার আলো ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য