ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ফোর লেনে রূপান্তর করার পাশাপাশি সড়ক পারাপারে দুর্ঘটনা রোধে প্রতিটি স্টোপেজ এলাকায় ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করেছে সরকার। কিন্তু এসব ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে জনগণের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অঞ্চলের ৯৯ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন ব্যস্ত এলাকায় ১৪টি ফুটওভার ব্রিজ রয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লা পদুয়ারবাজার এলাকার একটি ডিভাইডার নির্মাণ ব্যয় প্রায় ২ কোটি টাকা। বাকি ১৩টি ডিভাইডারের প্রতিটি ৭০-৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ফুটওভার ব্রিজ থাকা সত্ত্বেও কেউ খুঁজে বের করছেন কোথায় হাই ডিভাইডার শেষ। আবার অনেকে হাই ডিভাইডার অতিক্রম করেই পারাপার হচ্ছেন। তবে ফুটওভার ব্রিজ থেকে মাত্র ৫০-১০০ ফুটের মধ্যেই লো-ডিভাইডার থাকায় ফুটওভার ব্রিজে উঠানামার কষ্ট এড়াতে লো-ডিভাইডারের ওপর দিয়েই রাস্তা পারাপার হচ্ছেন অধিকাংশ মানুষ। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হন পথচারীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত তিন মাসে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি, চান্দিনা ও বুড়িচং এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় শিশুসহ অন্তত আটজন সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। তবে হাই ডিভাইডার ও লো ডিভাইডার নিয়ে পরিকল্পনার ক্রটি এবং মানুষের ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে অনীহায় ফোর লেন সড়ক নির্মাণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছেন অনেকে।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির দফতর সম্পাদক কমল বক্সী জানান, সুযোগ পেলে কেউ কষ্ট করতে চায় না। তেমনি ফুটওভার ব্রিজের নিচ দিয়ে বা ২০-৫০ ফুটের মধ্যে এক ফুট উচ্চতার লো-ডিভাইডার পেলে কেউ ২০-৩০ ফুট উচ্চতার ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করবে না।
চান্দিনা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোসলেহ্ উদ্দিন জানান, হাই ডিভাইডারের পর্যাপ্ত দূরত্ব বা দৈর্ঘ্য বেশি থাকা দরকার। যে স্থান দিয়ে জনসাধারণের যোগাযোগ বা চলাচল বেশি, সেই স্থানেই নিচু ডিভাইডার আছে। যে কারণে কেউ কষ্ট করে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করছে না। তাই দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে।
এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশ ইলিয়টগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ (সার্জেন্ট) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে সচেতনতা বাড়াতে পুলিশের পাশাপাশি এলাকার বিশিষ্টব্যক্তি ও সচেতন মহলকে এগিয়ে আসতে হবে।
ফোর লেন সড়ক নির্মাণ প্রকল্প কুমিল্লা অঞ্চলের ব্যবস্থাপক মাসুম সারওয়ার জানান, ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে ব্যস্ত এলাকায় লো ডিভাইডারগুলো হাই ডিভাইডারে পরিণত করার পাশাপাশি জনগণের সচেতনতাও বৃদ্ধি করা একান্ত প্রয়োজন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৭
আরআর/টিআই