রিমি দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার পাকেরহাট বাজারে অবস্থিত আসমানি স্যানেটারি ন্যাপকিন উৎপাদন কারখানায় কর্মী হিসেবে কাজ পেয়েছে। শুধু রিমি নয় সাবিনা ইয়াসমিন, তুলশি রানীদের মতো ১৫ জন স্কুল-কলেজ পড়ুয়া কিশোরী আসমানি স্যানেটারি ন্যাপকিন কারখানায় কাজ করছে।
জানা গেছে, খানসামা উপজেলার পাকেরহাট বাজারে স্থানীয় সেলিনা আক্তার নামে এক নারীর উদ্যোগে ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল নামে বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতায় গত বছর গড়ে তোলা হয় কারখানাটি। যেখানে কাজ করে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ১৫ কিশোরী। এই কিশোরীদের অধিকাংশই দরিদ্র পরিবারের। কারখানাটির ফলে যেমন দেখা দিয়েছে বাণিজ্যিক সম্ভাবনা তেমনি দরিদ্র কিশোরীদের মিলেছে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ। কারখানাটিতে প্রতিদিন গড়ে ১৫০ থেকে ১০০ প্যাকেট স্যানেটারি ন্যাপকিন উৎপাদন করা হয়। এই ন্যাপকিন স্বাস্থ্যসম্মত, দামে সস্তা। দরিদ্র পরিবারের নারীরা অর্থাভাবে ন্যাপকিন কিনতে পারে না। এতে দেখা দেয় নানা রোগবালাই। কিশোরীদের হাতে তৈরি ন্যাপকিন সস্তায় বাজারজাত হওয়ায় এই এলাকায় স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমেছে।
রিমি বলে, পড়াশোনার পাশাপাশি এখানে কাজ করছি। দিনে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা সময়ই যথেষ্ট। টাকার অভাবে আমার পড়াশোনা বন্ধ হতে চলছিল। এখন কাজ করে উপার্জন করা টাকা দিয়ে পড়াশোনা চালাতে পারবো। পরিবারকেও প্রতি মাসে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করতে পারবো। আমার মতো দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের জন্য এই কারখানা একটি সফলতার সিঁড়ি।
কারখানায় বস্তা বোঝাই তুলা আনা হয়। বস্তার তুলা বিছিন্ন করে কাপড়ে জড়িয়ে মেশিনে সেলাই করে তৈরি করা হয় ন্যাপকিন। এরপর প্যাকেট করে বাজারজাত করা হয়। এখানকার ন্যাপকিন উৎপাদনে উন্নত মানের তুলা ও কাপড় ব্যবহার করা হয়। এর আগে কাপড় ও তুলা জীবাণুমুক্ত করা হয়।
উদ্যোক্তা সেলিনা আক্তার বাংলানিউজকে জানান, দরিদ্র পরিবারের কিশোরীরা পিরিয়ডের সময় অর্থাভাবে স্বাস্থ্যসম্মত ন্যাপকিন ব্যবহার করতে পারে না। এসময় অনেকেই স্কুল-কলেজে অনুপস্থিত থাকে। মূলত এটি দূর করতে নেওয়া হয়েছে এই পদক্ষেপ। কারখানায় উৎপাদিত ন্যাপকিন আশপাশের সবকটি উপজেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। আগামীতে অবকাঠামোর প্রসার ও বেশি আর্থিক বিনিয়োগের মাধ্যমে কারখানা আরও বড় করা হবে। আশপাশের জেলাগুলোতে বাজারজাত করা হবে এখানকার উৎপাদিত ন্যাপকিন। আর এখানে কাজ করে দরিদ্র পরিবারের কিশোরীরা নিজেদের স্বাবলম্বী ও আত্মনির্ভর করে গড়ে তুলতে পারবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৭
আরআর