ঢাকা: করোনা ভাইরাস মহামারির কবলে পড়ে শিশুদের বহুমুখী বিপর্যয়ের শিকার হতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে শিশুদের সুরক্ষায় সবার সমন্বিতভাবে কাজ করা জরুরি।
শনিবার (৫ ডিসেম্বর) কালের কণ্ঠ ও চাইল্ড রাইটস অ্যাডভোকেসি কোয়ালিশন ইন বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে ‘করোনা পরিস্থিতিতে শিশু অধিকার ও সুরক্ষা’ শীর্ষক ডিজিটাল গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা এমন মতামত তুলে ধরেন।
ভার্চ্যুয়াল এ গোলটেবিল বৈঠকে দৈনিক কালের কণ্ঠ সম্পাদক ও কথা সাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, করোনাকালে শহরের শিশুরা অনলাইনে ক্লাসসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেলেও গ্রামের শিশুরা বেশকিছু ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছে। শিশু সুরক্ষায় স্বাস্থ্য, খাদ্য ও পরিচর্যার বিষয় আছে। এসব দিকেই আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। গত আট-নয় মাসে শিশুরা তেমন স্পেস পায়নি। এজন্য তারা মানসিক সমস্যার মুখে পড়ছে। শিশুর এই মানসিক বিকাশ সাধনে শিক্ষক ও অভিভাবকদের এগিয়ে আসতে হবে। অভিভাবকদের সচেতনতা ছাড়া শিশুদের অধিকার, মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা করা সম্ভব নয়।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী রওশানা আক্তার বলেন, বাংলাদেশের প্রক্ষাপটে বিশাল জনগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য অংশ শিশু। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মন্ত্রণালয় সাংস্কৃতিক কিছু কর্মসূচি ও প্রকল্পের মাধ্যেমে এক্সসেলেরাটির মাধ্যেমে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের আওতায়, কিশোর-কিশোরীদের মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে করোনা মোকাবিলায় সচেতন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। শিশুদের প্রতি সহিংসতা ও জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা রোধ করতে তাদের শারীরিক যত্ন ও প্যারেন্টিং ব্যবস্থা সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে। শিশুরা এখন ভীষণভাবে মানসিক চাপের মধ্যে কাজ করছে।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক জ্যোতি লাল কুরী বলেন, আমাদের দেশে জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক শিশু। এজন্য আমাদের শিশুদের নিয়ে ভাবতে হবে ও কাজ করতে হবে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে আমরা সুরক্ষা ও অনলাইনে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। শিক্ষা ক্ষেত্রেও শিশুরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তেমন মনোযোগতেও পরিবর্তন এসেছে। এজন্য আমরা মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পের অধীনে শিশুদের কাউন্সিলিংয়ের জন্য কাজ করছি।
শিশু ও সমন্বয় উইং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো.মহিবুজ্জামান বলেন, আমাদের মূল সমস্যা সামাজিক অবক্ষয় ও নৈতিক মূল্যবোধের জায়গাটা। এই জায়গা সুসংগঠিত করলে পারিবারিক সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
বৈঠকে মূলক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রকল্প সমন্বয়ক নুয়ারা শফিক দিশা।
এছাড়া ছিলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উপ-পরিচালক এম রবিউল ইসলাম, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক তামান্না মৌ, প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর অরলা মারফি, চাইল্ড স্পন্সরশীপ অ্যাকশনএইডের ব্যবস্থাপক মনিকা বিশ্বাস, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক গোলাম মনোয়ার কামাল, চাইল্ড লেবার স্পেশালিস্ট এডুকো বাংলাদেশের আফজাল কবির খান, জাতীয় কন্যা শিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সমন্বয়ক নাসিমা আক্তার জলি, অ্যাকশনএইডের কমিউনিটি জার্নালিস্ট মনিরা, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের শিক্ষা উপদেষ্টা মো. কামাল হোসেন, স্পিকার চাইল্ড পার্লামেন্ট সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের মরিয়ম আক্তার জিম, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের সঞ্জয় মণ্ডল প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০২০
এসই/এমআরএ