ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ব্রহ্মপুত্রে রাত কাটলো ৭০ নৌ-যাত্রীর

ফজলে ইলাহী স্বপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২০
ব্রহ্মপুত্রে রাত কাটলো ৭০ নৌ-যাত্রীর

কুড়িগ্রাম: ঘন কুয়াশা আর শীতের দাপটে বিপাকে পড়েছে কুড়িগ্রাম জেলার ৪ শতাধিক চরাঞ্চলসহ নদ-নদী অববাহিকার মানুষজন। দিনের বেশির ভাগ সময় সূর্যের দেখা মিলছে না।

দুপুরের পর থেকেই ঘন কুয়াশার চাঁদরে প্রকৃতি ঢেকে থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নৌ-পথে চলাচলকারীদের।

ব্রহ্মপুত্র নদে চলাচলকারী নৌকাগুলো ঘন কুয়াশার কারনে চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। নদীতে কুয়াশার দিক হারানোসহ সময়মত গন্তব্যে পৌঁছতে পারছে না নৌযানগুলো। প্রায় সময়ই কুয়াশায় দিকভ্রান্ত হয়ে ২ ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে দ্বিগুন-তিনগুন সময় লাগছে।

সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে একটি নৌকা কুড়িগ্রামের মোগলবাসা ঘাট থেকে রৌমারীর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে ৩ ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে সময় লেগেছে ১৫ ঘণ্টা। পরদিন মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গন্তব্যে পৌঁছে নৌকাটি।

ঘণ কুয়াশায় পথ হারিয়ে ৭০ জন যাত্রী নিয়ে নৌকাটি ব্রহ্মপুত্র নদের একটি চরে সারারাত আটকে থাকে। সারারাত অজ্ঞাত চরে দুইজন প্রসূতি মাসহ নৌকার যাত্রীদের আতঙ্ক, উৎকন্ঠা আর ভোগান্তি চরমে ওঠে।  

নৌকার মাঝি নজরুল ইসলাম ও যাত্রীরা জানায়, কুড়িগ্রামের মোগলবাসা ঘাট থেকে প্রায় ৭০ জন যাত্রী নিয়ে সোমবার বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে নৌকার মাঝি রৌমারীর ফলুয়ারচর ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ব্রহ্মপুত্র নদের মাধ্যস্থলে পৌঁছার পর ঘন কুয়াশায় নৌকাটি দিক হারিয়ে জনবসতিহীন একটি অজ্ঞাত চরে আটকা পড়ে। ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতে যাত্রীরা সারারাত চরম দুর্ভোগ পোহায়। যাত্রীদের মধ্যে দুইজন প্রসূতি মা তাদের সদ্যজাত সন্তান নিয়ে চরম উৎকন্ঠায় তীব্র শীতের রাত অতিবাহিত করেন।

নৌকাটির যাত্রী প্রসূতি মা নূপুর জানান, নৌকাটি রৌমারীর উদ্দেশ্যে বিকেল ৪টায় ছাড়া কথা থাকলেও তা বিকেল পৌনে ৫টায় ছেড়ে দেয়। সদ্যজাত ৭ দিন বয়সের দুই জমজ বাচ্চা নিয়ে তীব্র শীতের মধ্যে চরম দুর্ভোগে নৌকায় সারারাত কেটেছে।

রৌমারী ফলুয়ার চর ঘাটের ইজারাদার নাসির খান বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, নৌকাটি মাঝ নদীতে দিক হারিয়েছে বুঝতে পেয়ে যাত্রীরা মধ্যে থেকে অনেকে মোবাইল ফোন থেকে ফেসবুকে পোস্ট দেন তাদের উদ্ধারের জন্য। তবে অতিরিক্ত ঠাণ্ডা ও ঘন কুয়াশার কারণে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। নৌকাটি সারারাত ওই চড়ে অবস্থান করে পরের দিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গন্তব্য রৌমারীর ফলুয়ারচর নৌকা ঘাটে পৌঁছে। কুড়িগ্রাম মোগলবাসা ঘাট থেকে রৌমারী ফলুয়ারচর ঘাটে নৌকা পৌঁছতে ৩ ঘণ্টা সময় লাগলেও ঘন কুয়াশার কারণে দিকভ্রান্ত হয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে অতিরিক্ত সময় লেগেছে।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর হোসেন বাংলানিউজকে জানান, রাতেই নৌকাটি দিক হারানোর বিষয়টি ফেসবুকের মাধ্যমে জেনেছি। তবে নৌকাটি সময় মত ছেড়ে না দেওয়া, ব্রহ্মপুত্র নদে নাব্যতা কম থাকাসহ ঘন কুয়াশার কারণে এ ধরনের একটি উদ্বেগজনক ঘটনা ঘটেছে। আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করবো দ্রুত নদী খনন করলে নৌকা পারাপারে সুবিধা হবে এবং এ ধরনের সমস্যা আর থাকবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২০
এফইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।