গাজীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ষাটোর্ধ্ব চাচিকে জনসম্মুখে বুকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দিয়েছেন এক ব্যক্তি। পরে ভাড়াটে দলবল নিয়ে ওই বৃদ্ধার নির্মাণাধীন একটি বিল্ডিং ভাঙচুর করে।
সোমবার (২৮ মার্চ) বিকেলে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই বৃদ্ধাকে লাথি মারার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে সমালোচনার ঝড় উঠে।
নির্যাতনে শিকার বৃদ্ধা হলেন- গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার উত্তর পেলাইদ এলাকার আবদুল হাইয়ের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৬৫)। জমির বিরোধে বৃদ্ধাসহ তার স্বজনদের মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
অভিযুক্তরা হলো- একই এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে মাসুদ রানা (২৫)। তার সহযোগী মো. মজনু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ রুমান মিয়া (২৪) ও আরমার মিয়া (২০) ও অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা পালিয়েছেন।
খবর পেয়ে সকালেই শ্রীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কালিয়াকৈর সার্কেল এএসপি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। এ ঘটনায় নির্যাতনে শিকার বৃদ্ধার স্বামী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
মনোয়ার বেগমের মেয়ে আকলিমা খাতুন জানান, বাবার কাছ থেকে ওয়ারিশ জমিসহ প্রায় ৩৫ লাখ টাকার জমি কিনেছি। ৪-৫ বছর আগেই এ জমি কিনে রেখেছি। আমার অন্য চাচা ও চাচাতো ভাইয়েরা সবই জানে। সম্প্রতি আমার জমিতে বিল্ডিংয়ের কাজ শুরু করেছি। এরই মধ্যে ঘরের ৮০ শতাংশ কাজ শেষের দিকে। সোমবার (২৮ মার্চ) হঠাৎ কিছু লোকজন নিয়ে আমার বাড়ির দেয়াল ভাঙতে শুরু করে আমার চাচাতো ভাই মাসুদ ও তার সহযোগীরা। এ সময় আমার মা বাধা দিতে গেলে মায়ের বুকে সজোরে লাথি মারেন মাসুদ। এ সময় আমার মা (মনোয়ারা বেগম) মাটিতে পড়ে ইটের আঘাতে গুরুতর আহত হন। পরে আমরা মাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। সে সুযোগে মাসুদ কুড়াল দিয়ে ঘরের নতুন দেয়াল ভেঙে দেয়। খবর পেয়ে অন্য স্বজনরা এগিয়ে এলে মাসুদ ও তার সহযোগীরা চলে যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মনোয়ারা বেগম প্রতিবাদ করতে এগিয়ে গেলে তার ভাতিজা মাসুদ সজোরে ওই বৃদ্ধার বুকে লাথি মারেন। প্রতিবেশীরা সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলে মাসুদ ও তার সহযোগীরা হুমকি দেন এবং কুড়াল দিয়ে বিল্ডিংয়ের দেয়াল ভেঙে পালিয়ে যান।
কালিয়াকৈর সার্কেলের এএসপি আজমীর হোসেন বাংলানিউজকে জানান, একজন বৃদ্ধার ওপর এমন আক্রমণ খুবই বর্বর। এ ব্যাপারে মামলা নেওয়া হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে।
শ্রীপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজ ইমতিয়ার ভূইয়া বাংলানিউজকে জানান, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, ভেঙে ফেলা বাড়ির কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে যেন আর কোনো আইনের ব্যত্যয় না ঘটে সেজন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ মার্চ ২৯, ২০২২
আরএস/আরআইএস