সাভার, (ঢাকা): ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে মারা গেছেন মর্জিনা আক্তার। সেসময় আড়াই বছরের ছেলে মোহাম্মদ আলিফ তার নানী রুবির কাছেই রয়েছে।
রুবি বেগম বাংলানিউজকে বলেন, আমার মেয়ে মর্জিনা সুইং সেকশনের চারতলায় কাজ করত। জানি না কারখানায় সেদিন কী হয়েছিল। সেদিনের সেই ভবন ধসের পর আমার মেয়েকে আর আমরা পায়নি। মেয়ে হারানোর পর তার জামাই আরেকটা বিয়ে করে আমাদের কাছ থেকে আলাদা হয়ে গেছেন। আর ছেলেটিরও তিনি কোনো খোঁজ-খবর নেন না।
তিনি বলেন, মর্জিনার ছেলের বয়স এখন ১১ বছর। চারদিকের পরিবেশ দেখছে, নতুন বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে শিখছে। কিন্তু ওদের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে পারে না। বাড়িতে কান্নাকাটি করে সব বন্ধুদের মা-বাবা আছে তার কেনো নাই। সবাই ভালো ভালো খাবার খায়, ভালো পোশাক পরে সে কেনো পারে না। মা-বাবা চলে যাওয়ার পরে আলিফের মুখের হাসিও যেন চিরকালের জন্য হারিয়ে গেছে।
তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমার নাতি ও আমি এখন সমাজের বোঝা। কিছু করতে পারি না কষ্ট করে চলি। আমাদের দায়িত্ব কেউ যদি নিতো তাহলে সমাজের আর কয়টা লোকের মত আমাদের জীবনটা ও চালিয়ে নিতে পারতাম। আলিফও তার ৮-১০টা বন্ধুদের মত সমাজে বেড়ে উঠত। আমি আলিফকে বই কিনে দিতে পারি না, ভালো কাপড় কিনে দিতে পারি না। আমাদের এখন আর দেখবো কে?
ক্ষতিপূরণ ও বিচার চেয়ে তিনি বলেন, আমার মেয়েকে হারানোর পর কিছু টাকা পেয়েছিলাম। সেটা ক্ষতিপূরণ না সহায়তা। আর রানার বিচারের কথা কী বলবো। আজ ৯ বছর হলো কিছুই হচ্ছে না তার বিরুদ্ধে। আমি ক্ষতিপূরণ ও রানার সঠিক বিচার চাই। মেয়েকে তো আর পাবো না মেয়ে তো চলেই গেছে। সঠিক বিচার পেলে মনকে শান্তনা দিতে পারবো।
নিহত মর্জিনার ছেলে আলিম বাংলানিউজকে বলে, আমার বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে আমি মা-বাবাকে হারিয়ে প্রতিবছর এখানে আসি। নানী বলে আমার মা নাকি এখানে রয়েছেন। আমার মাকে একবার হলেও দেখতে চাই।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২২
এসএফ/এএটি