ঢাকা: রাজধানীর কলাবাগান তেঁতুলতলা মাঠে থানা নির্মাণ বন্ধ, মাঠ সংরক্ষণসহ মা-ছেলেকে পুলিশি হয়রানির নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে পরিবেশবাদী ও সামাজিক সংগঠনগুলো।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে এএলআরডি, বাপা, বেলা, আসক, ব্লাস্ট, গ্রীন ভয়েস, নিজেরা করি, নাগরিক উদ্যোগ, নারীপক্ষ, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি ও টিআইবি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, তেঁতুলতলা মাঠে কলাবাগান পুলিশের থানা ভবন নির্মাণ করাকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদ করায় গতকাল (২৪ এপ্রিল) সকালে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সংগীত বিভাগের কর্মী সৈয়দা রত্না ও তার কিশোর ছেলে ইসা আব্দুল্লাহ সাদেকিন প্রিয়াংশুককে কলাবাগান থানায় আটকে রাখা হয়। পরে মধ্যরাতে কলাবাগান থানা পুলিশ মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়।
তাদের আটকের বিষয়ে পুলিশ নির্দিষ্ট করে কোনো কথা বলেনি। তাদের কাউকে ফোন করেও পাইনি। সারাদিন কেন একজন নারী ও তার ১৭ বছরের ছেলেকে আটকে রেখেছে, এটা আমাদেরকে বলেনি। আমাদেরকে থানায় ঢুকতে দেয়নি। ভারপ্রাপ্ত ও সেকেন্ড অফিসার সারাদিন থানায় ছিলেন না, ফোন ধরেননি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ৫০ বছর ধরে ব্যবহার করা এলাকাবাসীর একমাত্র মাঠের জায়গায় কোনোভাবে থানাভবন নির্মাণ করা যাবে না। এখানে এলাকার ছেলে-মেয়েরা খেলা করবে, ঈদের জামাত হবে, সকালে এলাকাবাসী হাঁটবে। আমরা জেনেছি, ভূমি মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই মাঠকে থানা বানানোর অনুমতি দিয়েছে। আমরা এই আদেশের তীব্র নিন্দা জানাই।
বেলার নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, খেলার মাঠ বন্ধ করে দেওয়া আত্মহত্যার শামিল। আমাদের শিশুরা ঘরে বসে বসে ভিডিও গেমস খেলতে গিয়ে বিভিন্ন অপরাধ করা শিখছে। আমরা যখন গতকাল থানায় যখন প্রবেশ করতে চাইলাম প্রবেশ করতে দেওয়া হলো না। নাগরিকদের কাজে বাধা দেওয়া কি আইনের কাজ?
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা কেউই নিরাপদ বোধ করতে পারছি না। মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য পরিকল্পিতভাবে আটকে রাখা, মুচলেকা নেওয়া, হয়রানি করা ও মাঠের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নিজেরা করির সভাপতি খুশি কবির, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, বাপার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবীব প্রমুখ।
রোববার সকালে ওই মাঠে ইট-সুরকি ফেলা হলে সেখানে গিয়ে ফেসবুকে লাইভ করেন পরিবেশ কর্মী ও এলাকার বাসিন্দা সৈয়দা রত্না। একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে তাঁকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে তাঁর ছেলে বাসা থেকে বেরিয়ে রাস্তায় এলে তাঁকেও ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর ১৩ ঘণ্টা থানায় আটকে রাখার পর পরিবেশবাদী ও সামাজিক সংগঠনগুলোর আন্দোলনের মুখে থানায় মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি। কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে খেলতে যাওয়া কয়েক শিশুকে কান ধরে ওঠবোস করায় পুলিশ। এর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২২
এমএমআই/এসআইএস