ঢাকা: আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে আন্ধারমানিক নদীর পানি ও পরিবেশ দূষিত হয়ে ইলিশ প্রজনন বাঁধাগ্রস্থ হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাপার যুগ্ম সম্পাদক ও বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের সমন্বয়ক মিহির বিশ্বাস।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এ দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আশিকুর রহমান।
তিনি বলেন, পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নে এই বিদ্যুৎ প্রকল্প অবস্থিত। এখানে হওয়া বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য দক্ষিণ এশিয়া তথা পৃথিবীর অন্যতম হটস্পট হবে এ এলাকা। প্রথমে এখানে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রস্তবনা থাকলেও পরবর্তীতে এলএনজি করা হবে বলে জানানো হয়।
এ বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্যে আন্ধারমানিক নদীর ২৯ কিলোমিটার এলাকায় আর্থ সামাজিক ও পরিবেশ-প্রকৃতির উপর প্রভাব ফেলবে বলে প্রবন্ধ উপস্থাপনে দাবী করা হয়।
জমি অধিগ্রহণে স্মার্ট পেমেন্ট না হওয়ায় অনেকে ঠিকমতো টাকা পায়নি। আবার টাকা পেতে দালালদের দ্বারস্থ হতে হয়েছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
বাপার যুগ্ম সম্পাদক ও বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের সমন্বয়ক মিহির বিশ্বাস বলেন, আন্ধারমানিকের ইলিশ প্রজননে সমস্যার সৃষ্টি হবে।
বাপার যুগ্ম সম্পাদক ও স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, বাংলাদেশের গড় আয়ু কমছে পরিবেশ দূষণের কারণে। কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্যে এটি আরও বাড়বে।
আশুগঞ্জ বিদ্যুৎপ্রকল্প এলাকার অধিবাসী ফরিদ তালুকদার বলেন, এ এলাকায় একরপ্রতি ৮০ মণ ধান হয় প্রতি মৌসুমে। তিন ফসলী এ জমিতে ইরি-বোরো ছাড়াও তরমুজ চাষ হয়। নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) বলেছেন তিন ফসলী জমিতে যেন কল কারখানা না করা হয়। কিন্তু এখানে করা হচ্ছে। এখানে ৮৮টি জেলে পরিবার বাস করে। তাদের নদী থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে আবাসনের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। ইলিশ খেয়ে জন্ম এদের, ইলিশ বেঁচে চলে সংসার এভাবে চললে তারা বাঁচবে কিভাবে! তারমধ্যে মাত্র ২০% লোক অধিগ্রহণের টাকা পেয়েছে।
বাপার নির্বাহী সদস্য এবং অর্থ, বাণিজ্য ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক কমিটির সদস্য সচিব, এন এস সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক ও ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমীন খুরশিদ, নির্বাহী সদস্য ও নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা, সদস্য ও জাতিসংঘ শিল্প উন্নয়ন সংস্থার বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এস. এম. আরাফাত, গবেষণা ব্যবস্থাপক রিয়াসাত নূর।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৯ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২২
এনবি/এসএ