বাগেরহাট: রং মিস্ত্রির কাজ করে খেতাম। বাবা, মা, স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ভালোই চলছিল দিন।
এভাবে কথাগুলো বলছিলেন- বাগেরহাট শহরের খারদ্বার এলাকার রং মিস্ত্রি এখলাছ শিকদার।
মঙ্গলবার (৩১ মে) দুপুরে বাগেরেহাট আলীয়া মাদরাসা রোড সংলগ্ন মিঠাপুকুর পাড় এলাকায় বসে ওষুধ ক্রয়ের জন্য মানুষের কাছে টাকা চাওয়ার ফাঁকে নিজের অসহায়ত্বের কথা জানান তিনি।
এখলাসের সংসারে বাবা-মা, স্ত্রী ও মেয়ে মিলে পাঁচজন সদস্য রয়েছেন। তার মেয়ে বাগেরহাট বহুমুখি কলেজিয়েট স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
এখলাস বলেন, মেয়েটা সকালে একটা রুটি খেয়ে স্কুলে গেছে। স্কুল ছুটি হলেই বাড়ি এসে ভাত খেতে চাবে। কিন্তু কোথা থেকে ওর মা ভাত দেবে, বৃদ্ধ-বাবা মাকেও ভাত খাওয়াতে পারিনা ঠিক মত। ভিক্ষা করার তো আর অভ্যাস নেই, তাই পরিচিত লোকদের কাছে ওষুধ ক্রয়ের জন্য টাকা চাচ্ছি। যা পাই, তাই দিয়ে ওষুধ ও চাল কিনি। এতে কি আর সংসার চলে। আমি আজ বড় অসহায়। কিন্তু আমি তো চেয়ে চিন্তে খেতে চাই না। আমি সুস্থ হতে চাই, কাজ করে খেতে চাই। ডাক্তার বলেছে ৬০ হাজার টাকা হলে আমার বিভিন্ন টেস্ট আর চিকিৎসা করা যাবে। সাহায্যের আশায় সমাজসেবা অফিসে গেছি, উপজেলায় গেছি কিন্তু এখনো কিছু পাইনি।
এ অবস্থায় স্থানীয় বিত্তবান ও সরকারি সহযোগিতা চান অসহায় এ রং মিস্ত্রি।
এখলাছের প্রতিবেশী রেশমি আক্তার বলেন, পরিবারটি সত্যিই খুব অসহায়। সংসারই ঠিকমতো চলে না। চিকিৎসা করাবে কীভাবে। আমরা স্থানীয়রা মাঝে মধ্যে একটু খাবার, সামান্য টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্যে করি। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই সামান্য। এ অবস্থায় সমাজের বিত্তবানদের পরিবারটির প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানোর অনুরোধ করছি।
ইখলাস শিকদারের মা রাবেয়া বেগম বলেন, ভাঙা গোলের ঘরে কোনোরকম থাকি। আমাদের নিজস্ব কোনো জায়গা নেই, ছেলের চিকিৎসা করানোর টাকাও নেই। কতজন তো সরকারি বরাদ্দের ঘর পায়। আমরা এত অসহায়, তবু পাই না।
এ বিষয়ে কথা হলে বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম বলেন, আপনার মাধ্যমে ওই ভদ্রলোকের অসহায়ত্বের কথা শুনলাম। আমরা দ্রুতই চেষ্টা করব তার খোঁজখবর নেওয়ার। খোঁজখবর নিয়ে ইখলাসকে যথা সম্ভব সহযোগিতা করা হবে।
সহযোগীতা করতে চাইলে ইখলাস শিকদারের সঙ্গে যোগাযোগের করুণ ০১৪০৭-২১১ ৮৬২-এ নম্বরে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৮ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২২
জেডএ