ঢাকা: বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সির নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারণার দায়ে মো. আলমগীর হোসেন নামে এক প্রাতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার ইউনিট। তার কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত চারটি মোবাইল সেট এবং নয়টি সিমকার্ড পাওয়া গেছে।
গ্রেফতার আলমগীর বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সির নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে মন্ত্রীর ছবি ও বিভিন্ন কর্মসূচির ছবি ওই অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করে দীর্ঘদিন থেকে প্রচারণা চালিয়ে আসছিল। এই ফেসবুক আইডিসহ অন্যান্য মন্ত্রী এবং বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির নামেও ম্যাসেঞ্জারে চেটিংয়ের মাধ্যমে চাকরিসহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করিয়ে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সোমবার (২৭ জুন) দুপুরে মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) রেজাউল মাসুদ।
তিনি বলেন, আলমগীর বাণিজ্যমন্ত্রীর নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে মন্ত্রীর ছবি ও বিভিন্ন কর্মসূচির ছবি ওই অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করতো। এর ফলে ওই আইডিতে প্রচারিত মন্ত্রীর গণসংযোগমূলক কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত পোস্টে প্রচুর লাইক কমেন্ট ও শেয়ার হতো। এতে ভুক্তভোগীরা এই আইডিকে অরিজিনাল আইডি হিসেবে বিশ্বাস করতেন।
সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, আলমগীর অন্যান্য মন্ত্রীসহ বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নামেও ম্যাসেঞ্জারে চেটিংয়ের মাধ্যমে চাকরিসহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করিয়ে দেওয়ার কথা বলে লোকজনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতেন।
তিনি বলেন, তার এমন প্রতারণার অভিযোগের ভিত্তিতে সাইবার পুলিশের বিশেষ এক টিম অনুসন্ধানে নামে। তদন্ত এবং বিশ্লেষণের এক পর্যায়ে ঘটনার পুরোপুরি সত্যতা পায় সাইবার টিম। দ্রুত অভিযুক্তের পরিচয় এবং অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর বোরবার (২৬ জুন) রাতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানাধীন সফিপুরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, সিআইডি সাইবার পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আলমগীর এসব প্রতারণার বিষয়ে স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, বাণিজ্যমন্ত্রীর নামে ফেক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে বিভিন্ন এলাকার চাকরি প্রত্যাশীদের, বিশেষ করে মেয়েদের টার্গেট করে চাকরি দেওয়ার নাম করে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অসহায় ভুক্তভোগীদের আস্থা অর্জন করে কৌশলে তাদের কাছ থেকে ব্যক্তিগত ছবিও নিতেন তিনি। পরবর্তীতে সেসব ছবি অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে অর্থ আদায় করতেন। অনেক ক্ষেত্রে নারী ভুক্তভোগীদের নামে ফেক আইডি তৈরি করে গোপন ছবি ও ভিডিও ছেড়ে দেওয়ারও তথ্য পাওয়া গেছে।
গ্রেফতার আসামির নামে কাফরুল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও পর্নোগ্রাফী নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা (নং- ২৪) করেছে সিআইডি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২২
এসজেএ/এমএমজেড