ঢাকা: ওষুধের কাঁচামালের আড়ালে ঢাকায় আনা প্রায় পৌনে তিন কোটি টাকা দামের ৩ কেজি আফিম জব্দ করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। আফিমের এই চালানটি আফগানিস্তান থেকে ভারত হয়ে ঢাকায় এসেছে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
শুক্রবার (১ জুলাই) পল্টন এলাকা থেকে দুই কেজি আফিমসহ মো. আবুল মোতালেব (৪৬) নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বনশ্রী আবাসিক এলাকা থেকে জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ভূঁইয়া (88) নামে আরও একজনকে এক কেজি আফিমসহ গ্রেফতার করা হয়।
শনিবার (২ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ঢাকা মেট্রো (উত্তর) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক জাফরুল্লাহ কাজল।
তিনি বলেন, ওষুধের কাঁচামালের আড়ালে মাদকের চালান আসবে এমন তথ্যের ভিত্তিতে ক্রেতার ছদ্মবেশে তিন কেজি আফিমের চালানসহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। গত ১০-১২ বছর মধ্যে আফিমের এই চালানটি প্রথম আটক হলো।
গ্রেফতার মো. আবুল মোতালেবের বাড়ি নোয়াখালীতে। তিনি দীর্ঘদিন যাবত ম্যানপাওয়ার ব্যবসায় জড়িত। তবে এর আড়ালে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন। আর জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ভূঁইয়ার বাড়ি জামালপুরে। তিনি দীর্ঘদিন যাবত একটি বেসরকারি গ্রুপ অব কোম্পানির প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত। এর আড়ালে মাদক ব্যবসায় জড়িত বলে আমরা তথ্য পেয়েছি।
জাফরুল্লাহ কাজল বলেন, একটি শপিং ব্যাগের ভেতরে একটি প্লাস্টিকের বয়ামের মধ্যে পলিথিনে মোড়ানো ছিল দুই কেজি আফিম। অপর এক কেজি আফিম পলিথিনে মোড়ানো ছিল। উদ্ধারকৃত তিন কেজি আফিমের আনুমানিক বাজারমূল্য পৌনে ৩ কোটি টাকা।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে এই চালান বাংলাদেশে এসেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় মাদকের হাব হচ্ছে আফগানিস্তান। আফগানিস্তান থেকেই এই আফিমের সরবরাহ। উদ্ধারকৃত আফিমের চালানটি ফেনী থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
আফগানিস্তানে এখন তালেবান ক্ষমতায়। ২০২০ সাল থেকে নতুন করে আফগানিস্তানে চাষ হচ্ছে আফিম। এর সঙ্গে তালেবানদের কারও যোগাযোগের তথ্য পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের দেশে আফিমের ব্যবহার দুইভাবে হয়ে থাকে। এক আফিম সরাসরি সেবন এবং এই আফিম দিয়ে কেমিক্যালের সাহায্যে পরবর্তীতে হেরোইন, ইয়াবা ও ফেন্সিডিলের মতো ভয়ংকর ড্রাগগুলো তৈরি হয়। আফিম আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ইরানে চাষাবাদ হয়ে থাকে।
জাফরুল্লাহ কাজল জানান, এরসঙ্গে আরও দুজনের নাম তারা পেয়েছেন, যা তদন্তের স্বার্থে এখনই প্রকাশ করা যাচ্ছে না। গ্রেফতারদের রিমান্ডে এনে আফিমের উৎস এবং গন্তব্য কোথায় ছিল সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে বলা যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৮ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০২২
পিএম/এসএ