ঢাকা, রবিবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘ট্রাক না থাকলে যাইতেই পারতাম না’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০২২
‘ট্রাক না থাকলে যাইতেই পারতাম না’

সাভার (ঢাকা): পরিবার নিয়ে ঈদ উদযাপন করতে জামালপুরের বাড়ি যাবেন রহমত উল্লাহ। ঝামেলাবিহীন বাড়ি যাওয়ার প্রত্যাশায় কারখানা ছুটির পর দিন শুক্রবার (০৮ জুলাই) বিকালে পরিবারের লোকজন নিয়ে বাসের জন্য আশুলিয়ার বাইপাইলে এসেছেন।

কিন্তু এসে দেখেন জামালপুরের কোনো বাস নেই। দীর্ঘ সময় ব্যাগ-বস্তা নিয়ে রাস্তার পাশে বসে থেকে বাধ্য হয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একটি ট্রাকে উঠেছেন।

ট্রাকে থাকা অবস্থায় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘গতকাল (০৭ জুলাই) আসলাম না জ্যাম আর গাড়ি পাবো না দেখে। কিন্তু আজ দেখি জ্যাম কম থাকলেও গাড়ি একেবারেই নেই। বাসা থেকে ব্যাগ-ট্যাগ নিয়ে ছেলে-স্ত্রী নিয়ে বের হয়েছি বাড়ি যাওয়ার জন্য এখন কি আর ফিরে যাওয়া যায়? বাধ্য হয়ে ট্রাকে উঠেছি। ট্রাকে ভাড়াও একটু কম। ’

ঝুঁকি নিয়ে কেনো বাড়ি যাচ্ছেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বাড়িতে তো আমাকে যেতেই হবে। বাড়িতে কোরবানি দিবো। সে সময় তো আমাকে থাকতে হবে। এখন ঝুঁকি হলেও কিছু করার নেই। বাস আর ট্রাক একটা হলেই হলো। ট্রাক না থাকলে তো আজ যাইতে পারতাম না।

রহমত উল্লার মতো আরও কয়েকশ মানুষ যাত্রাপথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাধ্য হয়ে বেছে নিয়েছেন ট্রাক। হাজার হাজার মানুষ ট্রাক আর পিকাপভ্যান দিয়ে বাড়িতে যাচ্ছেন।  

অন্যদিকে দুপুরে কথা হয় ফাহিম আহমেদ নামে এক যাত্রীর সঙ্গে। তিনি পোশাক করাখানায় কোয়ালিটি ইনর্চাজ হিসেবে কাজ করেন। বাড়ি বগুড়ায় যাবেন। দুপুরে বাইপাইল বাস কাউন্টারে এসে একটি লোকাল বাসে উঠেছেন। ভাড়া দিয়েছেন ১১০০ টাকা। যেখানে বগুড়ার দুরপাল্লার গাড়ির ভাড়া স্বাভাবিক দিনে ৫০০ টাকার মতো।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি প্রতিবছর কারখানা ছুটি হওয়ার পরপর বাইকে যাই। কিন্তু এবার বাইক বন্ধ করে দেওয়ায় বাসে যেতে এসেছি একদিন পরে। বাস কাউন্টারে গেলে আমাকে যানানো হয় বাস নেই। পরে একজন বললো বাস আছে ভাড়া ১২০০ টাকা দিতে হবে। আমি অনেক বলে তাদের কাছ থেকে ১১০০ টাকায় টিকিট কিনেছি। তবে সেই বাসও বগুড়াতে কোনো দিন যায়নি। একটা সাভার পরিবহনের বাস। সেটা রিজার্ভ ভাড়া নিয়ে যাত্রী বেশি দামে তুলে নিয়ে যাচ্ছে।

সড়কের বর্তমান পরিস্থিতি জানিয়ে সাভার হাইওয়ে থানার পরিদর্শক (ওসি) আতিকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত গাড়ির তিব্র চাপ ছিলো। কোথাও কোথাও জটলাও বেধে ছিলো। এখন তা একদমই নেই। এছাড়া অনেকেই ট্রাকে ঝুঁকি নিয়ে যাচ্ছেন। আসলে বাস আমরাও রাস্তায় কম দেখছি। কারণ যে বাসগুলো ছেড়ে গেছে সেগুলোতে এখনো গিয়ে পৌঁছাতে পারেনি। এখানে ফিরে আসবে কিভাবে। তাই এই সংকট তৈরি হয়েছে।  
বাড়তি ভাড়া নেওয়ার সুযোগ নেই জানিয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৩ ঘণ্টা, ০৮ জুলাই, ২০২২
এসএফ/এসএ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।