কুমিল্লা: চুক্তিভিত্তিক বিয়ে করিয়ে ইউরোপে মানবপাচার করে আসছিল একটি চক্র। কুমিল্লায় অভিযান চালিয়ে ওই চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাব-১১-এর পক্ষ থেকে সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এ অভিযানের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়।
র্যাব-১১-এর (সিপিসি-২) কুমিল্লা কম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানান, রোববার নগরের জাঙ্গালিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
গত ১০ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা দক্ষিণ উপজেলার উত্তর ধনাইতরী গ্রামের মো. দুলাল মিয়া র্যাব কার্যালয়ে এসে এ চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন।
আটক ব্যক্তিরা হলেন- কুমিল্লা দক্ষিণ উপজেলার মাটিয়ারা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে সোহেল মজুমদার (৩২), ইউনুস মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন (৪২) ও কাজী নুরুল ইসলামের ছেলে কাজী আবু নোমান (২৮)। এর মধ্যে সোহেল এ চক্রের হোতা।
মেজর মোহাম্মদ সাকিব আরও জানান, সাইপ্রাসে ঢোকার পর সহজে ইউরোপে ঢোকার প্রলোভন দেখিয়ে দুলাল মিয়ার ছোট ভাই সাইফুলকে বিদেশ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন জাকির। সাইফুলকে ইউরোপে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দুলালের কাছ থেকে তিন দফায় সাড়ে ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় এ চক্র।
মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন আরও জানান, গত বৃহস্পতিবার মোস্তফা হামিদ খান নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, তার ছোট ভাই মো. ইব্রাহীমের সঙ্গে তিন বছর আগে সাইপ্রাসে পরিচয় হয় সোহেলের। ইব্রাহীমকে ইউরোপীয় কোনো নারীর সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক বিয়ের মাধ্যমে সেখান থেকে ইউরোপে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন সোহেল। এ কাজের জন্য সোহেল সাড়ে আট লাখ টাকা নেন। টাকা নেওয়ার পর যোগাযোগ বন্ধ করে দেন এবং কিছুদিন পর দেশে চলে আসেন সোহেল। অবশেষে আটক হলেন তিনি।
ওই র্যাব কর্মকর্তা আরও জানান, সোহেল রোমানিয়া বা ইউরোপের অন্যান্য দেশের কোনো মেয়েকে টাকার বিনিময়ে চুক্তিভিত্তিক বিয়ের ব্যবস্থা করে দেওয়ার মাধ্যমে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে লোক পাঠিয়ে পরিচিতি অর্জন করেন। এভাবে বেশ কয়েকজনকে ইউরোপে পাঠিয়েছেন সোহেল। ২০১৯ সালে সাইপ্রাস সরকার সোহেল ওরফে হাবিবুর রহমানকে (পাসপোর্ট নাম) তালিকাভুক্ত অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে। তার বিরুদ্ধে ভুয়া নথিপত্র, প্রতারণা ও মানি লন্ডারিং আইনে আটটি অভিযোগ ইস্যু করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২
এসআই