ঢাকা: পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দেশের উন্নয়নের জন্য প্রথম ও প্রধান শর্ত হচ্ছে উন্নয়ন। উন্নয়নের প্রধান শর্ত শিক্ষা, শান্তি, শৃঙ্খলা, স্থিতিশীলতা।
শনিবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইডিইবি) সেমিনার হলে বাংলাদেশ ‘আওয়ামী লীগ সরকারের যুগান্তকারী উন্নয়নের মাইলফলক অর্জন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মন্ত্রী বলেন, শিক্ষা আমাদের দেশের জন্য সবার আগে। এটা যে কোনো দেশের জন্য প্রথম। পাকিস্তান আমলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারিকরণ হয়নি। কথা ছিল ইউনিভার্সেল এডুকেশ হবে। কিন্তু তা করা হয়নি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম এই যুগান্তকারি কাজটি করেছিলেন। তিনি স্কুলগুলোকে সরকারি করেছিলেন। সে সময় দুই লাখ শিক্ষকের মর্জাদা বাড়ানো হয়েছিল। এর কারণ বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন যে শিক্ষা ছাড়া আমাদের কোনো গতি নেই৷
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও আমাদের দেশে শিক্ষার ঘাটতি আছে। শতকরা ৭৫ শতাংশ মানুষ স্বাক্ষর জ্ঞান ও অক্ষর জ্ঞান অর্জন করেছেন। কিন্তু এর মধ্যে অনেকেই শুধুমাত্র নাম-ঠিকানা লেখতে পারে। একটা চিঠি লেখতে পারে না, কোনো বক্তব্য বা লেখা পড়ে বুঝতে পারে না। কাজেই আমাদের অনেক দূর যেতে হবে। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের জন্য যেটা জরুরি, সেটায় সবার আগে হাত দিয়ে পরিবর্তন করেছেন।
মন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ তিনি শতভাগ করে ফেলেছেন। গত কয়েদিন আগে হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যায়। তখন সমালোচকরা বলেছিল এইতো গেছে, আর আসবে না, ইত্যাদি ইত্যাদি। এটা মন্দ কাজ, তারা সব সময় এসি রুমে বসে চা-কফি খায়। আর ওই দিন দুই/চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না তা নিয়ে কত সমালোচনা করলো। তারা কতটুকু হীনমন্যতা নিয়ে আছে?
মন্ত্রী বলেন, শুধু আমি, আপনি নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদসহ আমাদের সবার একটা পরিচয় রয়েছে। আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীন নাগরিক। এই নাগরিকের মর্যাদা, সম্মান রক্ষা করতে হবে। কিন্তু কীভাবে? এটা হলো সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। যারা প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও এমপি হবেন তাদের দায়িত্ব ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা। যদি তারা তা না করেন, তবে আমরা তাদের ভোট দেব না। সেই সঙ্গে সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
তিনি বলেন, সড়ক-সেতু না হলে আমরা গ্রাম থেকে বের হতে পারব না। স্কুল-কলেজ না হলে আমাদের শিশুরা শিক্ষিত হবে না। ক্ষেত-খামারে কৃষিকাজ না হলে খাদ্য পাওয়া যাবে না। চালের দাম বাড়বে, কষ্ট হবে। বিদ্যুৎ না থাকলে অন্ধকার হবে। এগুলো মৌলিক কাজ করতে হলে ঐক্য প্রয়োজন।
সব শিশুকে সমান অধিকারে শিক্ষার সুযোগ দিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা আমাদের রাষ্ট্রীয় আইনেও আছে। রাষ্ট্রীয় সিলেবাস, শিশুরা কী পড়বে সে বিষয়ে ঐক্যমত হতে হবে। তারা শিখবে অসাম্প্রদায়িকতা, জ্ঞান বিজ্ঞান, শান্তি। ঝারফুকের শিক্ষা দিয়ে দুনিয়া চলবে না।
তিনি বলেন, শিক্ষকরা এখন বেতন পাচ্ছে না। এটা শুনতে আমার কষ্ট হয়। বাংলাদেশ কোনো মিসকিন রাষ্ট্র নয়। বাংলাদেশের টাকা আছে। কারণ নিজেদের অর্থায়নে আমরা পদ্মা সেতু করেছি। বর্তমানে শিক্ষকদের বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন, আপনারা (শিক্ষক) হৈহৈ-রৈরৈ করলে কাজ হবে না। প্রধানমন্ত্রীকে কাজ করতে দিন। তিনি যে একজন কর্মী সেটা প্রমাণ হয়ে গেছে গত ১৪ বছরে। প্রধানমন্ত্রীকে কাজ করতে দেন, তাকে সহযোগী করেন, তিনি নানা ধরনের চাপের মুখে আছেন। তাকে সুরক্ষা দেওয়া প্রয়োজন। আর আপনাদের (শিক্ষক) সুরক্ষা দেব আমরা। অন্যায়ের জন্য না, ন্যায়ের জন্য সুরক্ষা দেওয়া দরকার। আমি আপনাদের বিষয় প্রথানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরব। তার দপ্তরে যারা কাজ করেন কাগজগুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। আমি তাদের সঙ্গেও কথা বলবে, এরপর চাপ দেব।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০২২
এসজেএ/এমএমজেড