ঢাকা: বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান বলেছেন, তারেক রহমান যেভাবে আমাদের (বিএনপি) দলটি চালাচ্ছেন, সেভাবে দলের সর্বনাশে হয়ে যাচ্ছে। হাজার হাজার লাখ লাখ নেতাকর্মী আজকে গৃহহারা, পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা।
শুক্রবার (০৮ ডিসেম্বর) নির্বাচন ভবনে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার আপিল আবেদন জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জে-২ আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিলে ঋণখেলাপি ও মামলার তথ্য না দেওয়ায় মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
এবিষয়ে মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, মামলার তথ্য লিখি নাই এই কথা বলা হয়েছে আমাকে। এই তথ্য যদি লিখতে হয়, তাহলে আমি বলব, প্রধানমন্ত্রী থেকে নিয়ে আওয়ামী লীগের বড় বড় রাঘব বোয়াল নেতারা সবাই বাদ পড়বেন। কেননা, এতো হাজার হাজার মামলা এক জীবনে খেয়েছেন, আমরাও খাচ্ছি এগেুলো লেখার জায়গায় নাই। অনেক মামলাই তো খারিজ হয়েছে, বেকসুর খালাস হয়েছে। আমরা যেসব মামলায় বেকসুর খালাস হয়েছি সেগুলোর তথ্য কেন লিখব? উনারা লিখবেন না, আমরা লিখব কেন? যদি খালাস পেয়ে থাকি তাহলে কেন সেই দাগ নিয়ে আমাকে ঘুরতে হবে! এটা তো ন্যায় বিচার না। যদি তাই হয় যেকোনো একজন বর্তমান মন্ত্রী দেখেন, দুই একটি মামলার তথ্য দিয়ে আর দেয়নি। (সব মামলার তথ্য দিতে হলে) তো সকল থানায় যেতে হবে। কোন থানায় যে মামলা আমাদের নেই, তাতো জানি না।
প্রার্থিতা ফিরে পাবেন কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে দুইবারের এই সংসদ সদস্য বলেন, হ্যাঁ অবশ্যই সেই প্রত্যাশা রাখি।
আপনার সঙ্গে তো বিএনপির সিল ছিল, সেখান থেকে বেরিয়ে এসে নির্বাচন করাটা আপনার জন্য কতটা চ্যালেঞ্জের- প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই বহিষ্কৃত নেতা বলেন, আমাকে যে দেড় বছর ধরে বহিষ্কার করে রাখছে, তো বিএনপি সিলটা আমার ব্যবহার করাটাই তো অন্যায় ছিল। বিএনপি সিলটা যে আমি এতোদিন ব্যবহার করেছি এটাই তো অন্যায় ছিল। কারণ আমি তো দেড় বছর ধরে বহিষ্কৃত। আমাকে তো ন্যূনতম একটা সদস্য হিসেবেও রাখে নাই। আমাকে একটা গ্রাম অর্গানাইজ করতে দেয় নাই। আমি স্বাধীন হয়ে গেছি, স্বতন্ত্র হয়ে গেছি। আমি স্বতন্ত্র হয়েই প্রার্থী হয়েছি। এটা আমার কী অপরাধ হলো! আমি কি বলছি বিএনপিতে আসছি?
মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান বলেন, তবে হ্যাঁ, বিএনপি বর্তমান কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আমি প্রকাশ্যে বিদ্রোহ করছি। আমি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ করছি। উনি যেভাবে দলটি চালাচ্ছেন, সেভাবে দলের সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মতো একজন ভদ্রলোককে উচ্চ আদালত জামিন দেননি। এরচেয়ে নির্মমতা আর কী থাকতে পারে! এর দায় দায়িত্ব কার? কেন এরকম একটা মামলায় আমরা জড়ালাম, যেখানে প্রধান বিচারপতির বাড়িতে কেন আমাদের কর্মীরা হামলা করবে? কেন আমাদের কর্মীদের ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ নাই, কী রাজনীতি করি আমরা?
তিনি আরও বলেন, আজকে আমাদের মহাসচিবকে উচ্চ আলাদত থেকে জামিন দিলো না। কেন আজকে হরতাল দেওয়া হলো না? কেন হাইকোর্টের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার আলাদা হরতাল দেওয়া হলো না? কিসের দল করেন আপনারা বিএনপি কথা বলেন? এর নাম বিএনপি? এই শূন্য নেতৃত্ব দিয়ে আর কতদিন চলবে বিএনপি? ফাঁকা বুলি দিয়ে আর কতদিন চলবে বিএনপি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২৩
ইইউডি/এসএএইচ