ঢাকা, শনিবার, ২৭ পৌষ ১৪৩১, ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

শহীদদের ব্যবহার করে একটি গোষ্ঠী তত্ত্বকথা বাস্তবায়ন করতে চাইছে: ছাত্রদল সেক্রেটারি

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৫
শহীদদের ব্যবহার করে একটি গোষ্ঠী তত্ত্বকথা বাস্তবায়ন করতে চাইছে: ছাত্রদল সেক্রেটারি

ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্লাটফর্মে অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধি রাখার আহ্বান জানিয়েছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির। তিনি মনে করেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের ব্যবহার করে একটি গোষ্ঠী তত্ত্বকথা বাস্তবায়ন করতে চাইছে।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকালে বরিশালের গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড অডিটোরিয়ামে সরকারি গৌরনদী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, উপজেলা ও পৌর শাখা ছাত্রদল আয়োজিত সমাবেশে তিনি এই কথা বলেন।

নাছির উদ্দিন বলেন, সরকার ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে শুধু বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্ল্যাটফর্মকে গণ্য করছে। আন্দোলনের পরে তারা কেবল একটি সুনির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্মের প্রতিনিধি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলসহ অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলো দেশের বৃহত্তর ছাত্রসমাজকে প্রতিনিধিত্ব করে। কিন্তু আমাদেরকে রাষ্ট্রীয় কোনো উদ্যোগে যুক্ত করা হয় না, এমনকি মতামতও নেওয়া হয় না। পাঠ্যবইয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা হওয়ার কারণে ওয়াসিম আকরামের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

ছাত্রদল সেক্রেটারি বলেন, যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা মুক্তি পেয়েছি; এখন তাদেরকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নিত্যনতুন তত্ত্বের আবির্ভাব ঘটেছে। যারা শহীদ হয়েছেন, তারা সবাই নিজ নিজ বিবেকের তাড়নায় আন্দোলনে এসেছিলেন। যেভাবে জহির রায়হান তার ‘সময়ের প্রয়োজনে’ গল্পে দেখিয়েছিলেন- মুক্তিযোদ্ধারা সবাই সময়ের প্রয়োজনে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু আন্দোলন পরবর্তী সময়ে একটা গোষ্ঠী শহীদের রক্তের কথা বলে তাদের নিজস্ব চিন্তাধারা, তত্ত্বকথা বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে। তারা একদিকে শহীদদের মধ্যে বিভাজন না করার কথা বলেন, অন্যদিকে সকল শহীদের মালিকানা নিয়ে আন্দোলনের অন্য সকল অংশীদারকে উপেক্ষা করছেন। এমনকি কেউ কেউ তাচ্ছিল্যের সুরেও কথা বলেন। আমাদের মনে রাখতে হবে, আন্দোলনের কমপক্ষে চার ভাগের একভাগ শহীদ সরাসরি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এবং ছাত্রদলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তারা সবাই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে উত্তরণের জন্য আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাদের মূল দাবি ছিল গণতন্ত্র এবং ভোটের অধিকার।

একাত্তরের পরাজিত শক্তির একটা অংশ চব্বিশের আন্দোলনকে ব্যবহার করে একাত্তরের গৌরবকে মুছে ফেলতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, একাত্তর আমাদের জাতির সবচেয়ে গৌরবময় ঘটনা। একাত্তর কখনো মুছে ফেলা যাবে না। চব্বিশের আন্দোলন একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পরিপূরক। একাত্তর এবং চব্বিশ উভয়কে ধারণ করলেই কেবল জাতীয় ঐক্য অর্থবহ হবে।

ছাত্রদল সেক্রেটারি নাসির আরও বলেন, গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তিগুলোর মধ্যে শক্তিশালী ঐক্য না থাকার কারণে ফ্যাসিবাদ দীর্ঘায়িত হয়েছিল। বিশেষ করে সিভিল সোসাইটি, পেশাজীবী এবং বুদ্ধিজীবী মহল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রাজনৈতিক কর্মীদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ না হওয়ায় আওয়ামী লীগ তিনটি ভুয়া-অবৈধ-ডামি নির্বাচন করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু আমি মনে করি চব্বিশের পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত আছে, এখানে সকল পক্ষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

সমাবেশ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ সভাপতি রিয়াদ রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম ও জুয়েল হোসেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৫
এফএইচ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।