লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান বন্ধ রেখে আওয়ামী লীগের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভার আগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ছুটি দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার (২৯ মে) দুপুরে এমন ঘটনা ঘটে। এ কারণে বৃষ্টিতে ভিজে শিক্ষার্থীরা বাড়িতে চলে যেতে বাধ্য হয়। এদিন সকালে বিদ্যালয় মাঠে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতির আলোচনার আয়োজন করা হয়। এ লক্ষ্যে বিদ্যালয় মাঠে প্যাডেল তৈরি ও সামিয়ানাও টাঙানো হয়।
স্থানীয়রা জানায়, সকাল থেকে বৃষ্টির কারণে মাঠে সভা করতে পারেনি আওয়ামী লীগ। পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলাকালীন ছুটি দিয়ে শ্রেণিকক্ষে সভা করেন দলটির নেতাকর্মীরা। এদিন বিদ্যালয়ের অন্যকক্ষে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পরীক্ষা চললেও মাইকে উচ্চশব্দে বক্তৃতা দেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন দুপুর ১টার দিকে বাংলানিউজকে বলেন, এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পরীক্ষা থাকায় অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক সমাবেশের কারণে ছুটি দেওয়া হয়নি। দুপুর দেড়টার আগেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সভা শেষ করেন। তারপর মূল্যায়ন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
জানা গেছে, আগামী ১ জুন চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। এতে কাউন্সিলরদের নিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়। বৃষ্টি হওয়ায় বিদ্যালয়ের হলরুমে সভার কার্যক্রম শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু। প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন। আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এম আলাউদ্দিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সহ-সভাপতি এবং ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. মিজানুর রহিম।
চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক আবুল কাশেম চৌধুরী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যালয়ের কয়কজন শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, পূর্ণাঙ্গ ক্লাস করার উদ্দেশ্যে বিদ্যালয়ে গেলেও আওয়ামী লীগের সভার কারণে এক ক্লাস শেষে ছুটি দেওয়া হয়। তখন বাইরে প্রচুর বৃষ্টি ছিল। বৃষ্টিতে ভিজেই শিক্ষার্থীদের বাড়িতে যেতে হয়েছে। একদিকে মাইকে উচ্চ শব্দে বক্তারা বক্তৃতা দিচ্ছেন, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
এ বিষয়ে জানতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. মিজানুর রহিমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল মতিন বাংলানিউজকে বলেন, বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে শ্রেণিকক্ষে রাজনৈতিক সভার সুযোগ দেওয়া ঠিক হয়নি। প্রজ্ঞাপনে এতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আমি বিষয়টি খোঁজ নেব এবং তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৪ ঘণ্টা, ৩০ মে, ২০২২
এমএমজেড