ঢাকা, সোমবার, ২২ পৌষ ১৪৩১, ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫ রজব ১৪৪৬

খেলা

থিতু হওয়ার জন্যই যুক্তরাষ্ট্রে রোমান-দিয়া

‘৩০-৪০ হাজার টাকা বেতন থাকলে আর্চাররা চলে যেত না’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০২৫
‘৩০-৪০ হাজার টাকা বেতন থাকলে আর্চাররা চলে যেত না’ দিয়া সিদ্দিকী ও রোমান সানা

প্রথমে জানানো হয়েছিল চিকিৎসার জন্য দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন তারা। যদিও তা অবিশ্বাস্যই লেগেছে অনেকের।

তবে রোমান সানা এবার নিজেই নিশ্চিত করলেন, থিতু হওয়ার জন্যই স্ত্রী ও সতীর্থ দিয়া সিদ্দিকীকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন তিনি।  

দেশের আর্চারিতে ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা নেই, এটা নতুন কিছু নয়। শুধু আর্চারি নয়, ক্রিকেট-ফুটবল বাদে দেশের অধিকাংশ খেলাতেই আর্থিক নিশ্চয়তা নেই। ফলে অনেক অ্যাথলেটই ক্যারিয়ার ছেড়ে বেছে নিচ্ছেন ভিনদেশের ঠিকানা। রোমানের মতে, ফেডারেশন থেকে ৩০-৪০ হাজার টাকা বেতন দিলে আর্চাররা এমন সিদ্ধান্ত নিতেন না।

এর আগেও আর্চারির আর্থিক অনিশ্চয়তা নিয়ে কথা বলেছিলেন রোমান। ক্ষোভ নিয়ে অবসরও নিয়েছিলেন। যদিও আবার ফিরতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা না থাকায় বেছে নিলেন দেশ ছাড়ার পথ। যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরকে রোমান বলেন, ‘গত ২৯ ডিসেম্বর আমরা যুক্তরাষ্ট্রে এসেছি। এখানেই আমরা স্থায়ী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সুন্দর একটা ভবিষ্যতের জন্য আমরা এখানে এসেছি। আমাদের জন্য দোয়া করবে। ’ 

শুধু রোমান-দিয়া নয় তাদের আগে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন অসীম কুমার দাস, হাকিম আহমেদ রুবেলও। তারা সকলেই ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিলেন। সেই ভিসা কাজে লাগিয়েই যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হওয়ার পরিকল্পনা করছেন দেশের সেরা আর্চাররা।  

রোমান বলেন, ‘ফেডারেশন থেকে ৩০-৪০ হাজার টাকা মাসিক বেতনের ব্যবস্থা করা হলে আর্চারদের এমন সিদ্ধান্ত নিতে হতো না। তারা দেশে থেকে ক্যারিয়ার গড়তে পারত। ’

রোমান-দিয়ার মতো অলিম্পিয়ান আর্চারদের ধরে রাখতে না পারা দেশের ক্রীড়াঙ্গনের ব্যর্থতাই বলা চলে। তাদের সঠিক মূল্যায়ন করতে পারেননি ক্রীড়াসংশ্লিষ্টরা। রোমান-দিয়া আনসারে চাকরি করতেন। তাদের সেই আয় দিয়েই চলতে হতো।  ফেডারেশন থেকে তেমন আর্থিক সুবিধা মিলত না, দাবি এমনটাই।

ভালো খেলোয়াড়ের পাশাপাশি মেধাবী ছাত্রী ছিলেন দিয়া সিদ্দিকী। সম্প্রতি খেলোয়াড় কোটায় ভর্তি হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। নিজের স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও প্রবাস জীবনের জন্য সেখানে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারবেন না। এমনটা জানিয়েছেন রোমান। তিনি বলেন, ‘দিয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিল। কিন্তু সেখানে তো আর তার পড়া হবে না। ’

যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হওয়ার জন্য দ্রুত প্রক্রিয়া শুরু করবেন রোমান। ইতোমধ্যেই চাকরির ব্যবস্থা করেছেন বলেও জানিয়েছেন এই আর্চার। ক্রিকেট ফুটবলের বাইরে অন্যান্য খেলার চেয়ে সম্প্রতি আর্চারিতেই বেশি সাফল্যের দেখা মিলেছে। খেলোয়াড়রা উন্নতি করছেন, অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করছেন। পদক আসছে নিয়মিতই। তবে অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না আর্চারদের। অনেকেরই অভিযোগ পারিশ্রমিক এবং জীবনযাপনের মান নিয়ে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০২৫
এআর/এএইচএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।