ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

খেলা

জয়ে মিশন শুরু বাংলাদেশের

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০১৬
জয়ে মিশন শুরু বাংলাদেশের ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

যশোর: যশোরের শামস-উল হুদা স্টেডিয়ামে দুপুর দুইটা ৫০ মিনিটে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ দিয়ে শুরু হয় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট। ৪-২ গোলে লঙ্কানদের হারিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের মিশন শুরু করলো মারুফুল হকের বাংলাদেশ।

লাল-সবুজদের হয়ে জোড়া গোল করেন শাখাওয়াত হোসেন রনি।

প্রথমার্ধ শেষে বাংলাদেশ ৩-১ গোলে এগিয়ে থাকে। প্রথমার্ধে স্বাগতিকদের হয়ে গোল করেন শাখাওয়াত হোসেন রনি, ইয়াসিন খান ও জীবন নেওয়াজ। বিরতির পর সানজিবের গোলে ব্যবধান কমায় শ্রীলঙ্কা। তবে, শেষ দিকে আবারো গোল করেন রনি। ফলে, ৪-২ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে মামুনুল বাহিনী।

ম্যাচের শুরু থেকেই প্রতিপক্ষের শিবিরে কাঁপন ধরায় বাংলাদেশ। নিজেদের মাঝে দেওয়া-নেওয়ার মধ্যদিয়ে আক্রমণ রচনা করে লাল সবুজরা। ম্যাচের ১৮তম মিনিটে লিড নেয় বাংলাদেশ। শাখাওয়াত হোসেন রনির গোলে এগিয়ে যায় মারুফুল হকের দলটি। তবে, দুই মিনিটের ব্যবধানে সমতায় ফেরে শ্রীলঙ্কা। স্বাগতিকদের রক্ষনের ভুলে পেনাল্টি লাভ করে লঙ্কানরা। তাতে গোল করে সমতায় ফিরলেও দুই মিনিটের মাথায় মামুনুলের কর্নার থেকে ২২ মিনিটের মাথায় ইয়াসিন খান গোল করেন। ফলে, আরেকবার এগিয়ে যায় লাল সবুজরা।

ম্যাচের ২৮তম মিনিটে বাংলাদেশ তৃতীয় গোলের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলে। তবে, মামুনুলের দুর্বল শটটি ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন লঙ্কান গোলরক্ষক। ৩৩ মিনিটের মাথায় আবারো মাঝমাঠের দারুণ বোঝাপড়ায় গোলের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলে স্বাগতিকরা। নাসিরকে লক্ষ্য করে মাঝমাঠ থেকে লঙ্কানদের ডি-বক্সে বল বাড়ান রনি। তবে, গোলবারের ঠিক আগ মুহূর্তে পৌঁছেও বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারায় নাসির গোল বঞ্চিত হন। সঙ্গে গোলবঞ্চিত হয় মারুফুল হকের বাংলাদেশ।

৩৪ মিনিটের মাথায় জাহিদ কিছুটা আহত হয়ে মাঠ ত্যাগ করেন।

বল নিজেদের আয়ত্বে রেখে আর মাঝমাঠ গুছিয়ে দারুণ খেলতে থাকে বাংলাদেশ। তবে, সঙ্গে নিজেদের রক্ষণভাগও আগলে রাখে। ম্যাচের ৩৯ মিনিটে দর্শকে ভরা স্টেডিয়ামে আবারো উল্লাস দেখা যায়। মাঝমাঠ থেকে মামুনুলের লম্বা পাসে বল পান রনি। সেখানে থেকে আবারো মামুনুলের পা থেকে বল চলে যায় লঙ্কান ডি-বক্সে। জামাল ভূঁইয়া-ওয়ালি ফয়সালের দারুণ বোঝাপড়ায় পুনরায় বল পান রনি। তবে, তার জোরালো শটটি গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায়।

৪২ মিনিটে সোহেল রানাকে দুরন্ত গতিতে বল নিয়ে ঢুকতে দেখে লঙ্কান রক্ষণের এক ফুটবলার হাত দিয়ে বল থামিয়ে দেন। হলুদ কার্ডও দেখতে হয় তাকে। ফলে, পেনাল্টি বক্সের ঠিক বাইরে থেকে বাংলাদেশ ফ্রি-কিক আদায় করে। সোহেল রানার নেওয়া ফ্রি-কিকে পায়ের আলতো টোকায় শ্রীলঙ্কার জালে বল জড়িয়ে দেন জীবন নেওয়াজ। ফলে, ম্যাচের ৪৪তম মিনিটে বাংলাদেশ লিড নেয় ৩-১ গোলের।

ম্যাচের প্রথমার্ধে আর কোনো গোল না হয়ে এই স্কোরেই বিরতিতে যায় স্বাগতিক বাংলাদেশ।

বিরতির পর আবারো আক্রমণের সুযোগ খোঁজে বাংলাদেশ। চমৎকার খেলতে থাকেন স্বাগতিকদের দলপতি মামুনুল। মাঝমাঠ থেকে দারুণসব ওভারল্যাপিং করে উপরে খেলতে থাকেন তিনি। ম্যাচের ৪৯তম মিনিটে তার বাঁকানো একটি কর্নার কিক লঙ্কানের সাইড লাইনে লেগে বাইরে বেরিয়ে যায়।

৫১ মিনিটের মাথায় সানজিবের গোলে ব্যবধান কমায় শ্রীলঙ্কা। স্বাগতিক গোলরক্ষক শহিদুল আলমের কাছ থেকে নিজেদের অর্ধে বল পান জামাল ভূঁইয়া। তবে, বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে জামালের কাছ থেকে বল ছিনিয়ে নেন সানজিব। জোরালো শটে বাংলাদেশের জালে বল জড়িয়ে দেন তিনি। ফলে, ম্যাচ দাঁড়ায় ৩-২ গোলের স্কোরে।

৫৪ মিনিটের মাথায় লিড বাড়ানোর সুযোগ নষ্ট করে বাংলাদেশ। নাবিব নেওয়াজ জীবন ফাঁকায় বল পেয়েও বলে শট নিতে ব্যর্থ হয়। নিশ্চিত গোলের এ সুযোগ নষ্ট হওয়ায় স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকরা কিছু হতাশায় ভুগতে থাকেন।

শ্রীলঙ্কান কোচ সামপাথ পেরেরার শিষ্যরা সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠে। ম্যাচের ৬১ মিনিটের মাথায় বাংলাদেশের ডি-বক্সের বাইরে থেকে গালালুবান জোরালো শট নেন। তবে, প্রস্তুত থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে সে শটটি রুখে দেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক শহিদুল আলম। ফিরতি কর্নার থেকে লঙ্কানদের সে আক্রমণটিও ব্যর্থ হয়।

৬৪ মিনিটের মাথায় মামুনুলের কোনাকুনি জোরালো শটটি লঙ্কানদের গোলবারের উপর দিয়ে মাঠের বাইরে চলে যায়।

৭৪ মিনিটে কর্নার কিকের সুবিধা নিয়ে শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের বক্সে জটলা গড়ে তোলে। সেখান থেকে হেড করলেও কোনো গোল আদায় করে নিতে পারেনি লঙ্কানরা। ফিরতি আক্রমণে মোনায়েম রাজুর বাড়িয়ে দেওয়া বলে রনি শট নিলেও তা গোলরক্ষকের গ্লাভসবন্দি হয়। পরের মিনিটে জামাল ভূঁইয়ার বাড়ানো দারুণ একটি পাসে একা বল পান রনি। সময় নিয়ে শট করতে গিয়ে সেবারও তিনি ব্যর্থ হন।

৭৮ মিনিটের মাথায় সোহেল রানার বদলি হিসেবে স্বাগতিক কোচ মারুফুল হক মাঠে নামান জুয়েল রানাকে।

৮৬ মিনিটের মাথায় আবারো গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ। দলের চতুর্থ গোলটিও করেন শাখাওয়াত হোসেন রনি। স্বাগতিক গোলরক্ষক শহিদুল আলমের লম্বা শটে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে বল প্রবেশ করে। সেখানে থাকা লঙ্কান ডিফেন্ডার মাথায় বল লাগিয়ে নিজেদের গোলরক্ষককে বল দিতে ব্যাকপাস করেন। তবে, লঙ্কান গোলরক্ষক এগিয়ে আসায় একেবারে ফাঁকায় বল পেয়ে যান রনি। যেন নিয়ম রক্ষা করতেই বলে শট নিয়ে লঙ্কানদের জালে বল জড়ান তিনি। রনি শট না নিলেও আত্মঘাতি গোল হজম করতে হতো লঙ্কানদের।

ম্যাচের বাকি সময়ে আর কোনো অঘটন না ঘটলে বাংলাদেশ ৪-২ গোলের সহজ জয় নিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের মিশন শুরু করলো।

এর আগে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কা যশোরে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে খেলেছিল বাংলাদেশের সঙ্গে। ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়। দুই দল সর্বশেষ মুখোমুখি হয় গত বছর বঙ্গবন্ধু কাপে, সে ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল ১-০ গোলে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, ০৮ জানুয়ারি ২০১৬
এমআর

** প্রথমার্ধ শেষে বাংলাদেশ ৩, শ্রীলঙ্কা ১
** দুর্দান্ত শুরুতে এগিয়ে বাংলাদেশ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।