ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

খেলা

মাঠ নেই, বালু ভর্তি খোলা জায়গায় অনুশীলন  

শেখ তানজির আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২০
মাঠ নেই, বালু ভর্তি খোলা জায়গায় অনুশীলন   ছবি: বাংলানিউজ

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দাতিনাখালীর মাসুদ মোড়। এ মোড়ের পাশেই বালুতে ভরা খোলা মাঠ।

ব্যক্তি মালিকানাধীন এ মাঠটিতে প্রতিদিন শতাধিক কিশোর-কিশোরী ফুটবল অনুশীলন করে।  

সবার চোখেই স্বপ্ন, জাতীয় ফুটবল দলের মিড ফিল্ডার আলমগীর কবীর রানা কিংবা জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনার মতো দেশের হয়ে মাঠ কাঁপাবে।

তাদের এ স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে এসেছেন এক সময়কার তুখোড় ফুটবলার মাছুম বিল্লাহ। উপকূলের স্থানীয় কিশোর-কিশোরীদের স্বপ্ন পূরণে স্বল্প সংখ্যক ছেলে-মেয়ে নিয়ে ২০১৩ সালে ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিনি গড়ে তোলেন বুড়িগোয়ালীনি বেসিক ফুটবল একাডেমি। যেখানে এখন নিয়মিত অনুশীলন করছে শতাধিক ক্ষুদে ফুটবলার।
ছবি: বাংলানিউজ
২০০২ সালে পায়ে চোট নিয়ে ফুটবল থেকে ছিঁটকে পড়া মাসুদ বিল্লাহ স্থানীয় কিশোর-কিশোরীদের স্বপ্ন পূরণে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গেলেও আর্থিক অসঙ্গতি ও অনুশীলনের জন্য কোনো মাঠ না থাকায় উপকূলের কিশোর-কিশোরীদের প্রতিভা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হচ্ছে।

জানা গেছে, বর্তমানে যে বালু ভর্তি মাঠে তারা অনুশীলন করে, সেটি খুলনার একটি কোম্পানির জায়গা। জায়গাটিতে কারখানা গড়ার লক্ষ্যে বালু ভরাট করা হয়েছে। কোনো উপায় না পেয়ে এ বালু ভর্তি ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গাতেই অনুশীলন করে এখানকার কিশোর-কিশোরীরা। স্থায়ী কোনো মাঠ না থাকায় বছরে ছয় মাস বন্ধ রাখতে হয় অনুশীলন।

যদিও এরই মধ্যে বুড়িগোয়ালিনী বেসিক ফুটবল একাডেমির খেলোয়াড়দের সফলতা আসতে শুরু করেছে। দেশের নানা প্রান্তে খেলছে এ একাডেমির খেলোয়াড়রা। আগামী বসুন্ধরা কিংস বিএসএফএ  কাপ অনূর্ধ্ব-১৪’তেও ডাক পেয়েছে বুড়িগোয়ালিনী বেসিক ফুটবল একাডেমির ছয় খেলোয়াড়। তাদের প্রশিক্ষণ দিতে নিয়ে আসা হয় দেশের নামিদামি ফুটবল কোচদের।
ছবি: বাংলানিউজ
অনুশীলন করতে আসা মুন্সীগঞ্জের আটিরওপর এলাকার আব্দুর রহমান (১৩) বলে, ফুটবল খেলতে ভালো লাগে। তাই প্রতিদিন প্রাকটিসে আসি। কিন্তু বালুর মধ্যে প্রাকটিস করে মাঠে গিয়ে খেললে অন্য রকম হয়। একটা ঘাসওয়ালা মাঠ লাগবে।

বুড়িগোয়ালিনী বেসিক ফুটবল একাডেমির পরিচালক মাছুম বিল্লাহ বলেন, উপকূলের ছয়-সাতটি ইউনিয়ন থেকে শিশু-কিশোররা এখানে অনুশীলন করতে আসে। কিন্তু মাঠ না থাকায় বালুর মধ্যে অনুশীলন করাতে হয়।
ছবি: বাংলানিউজ
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় খেলার মাঠ গড়ে তোলা হলে উপকূলীয় শিশু-কিশোররা সত্যিই হয়ে উঠতে পারে একেকজন আলমগীর কবীর রানা কিংবা সাবিনাদের মতো নাম করা ফুটবল তারকা।

স্থানীয় বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মণ্ডল জানান, উপকূলে এ ধরনের ফুটবল একাডেমি গড়ে ওঠা গর্বের বিষয়। কিন্তু অনুশীলনের মাঠ না থাকায় উপকূলের শিশু-কিশোরদের প্রতিভা অঙ্কুরে বিনষ্ট হচ্ছে। এজন্য সরকারি জায়গায় মাঠ গড়ে তোলার বিষয়ে এরই মধ্যে জেলা প্রশাসক বরাবর প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২০
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।